somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংগালি বই পড়ুয়া শিক্ষিত জনগনঃ জ্ঞান বিজ্ঞান আর বুদ্ধিমত্তায় পিছিয়ে থাকার আসল কারন

০২ রা জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছবিঃ বইগল্প ফেসবুক গ্রুপ

বাংগালির প্রধান ও অন্যতম একটা সমস্যা ছিল তারা বই পড়ে না। শুধু মাত্র স্কুল কলেজ এ বই পড়ে পরীক্ষা পাসের জন্য আর এটাই তাদের জীবনের যত বই পড়া। এই সমস্যা আজকের না, এটা দশকের পর দশক বা শতক ধরেই চলমান।

আমাদের লাইব্রেরীতে কখনো মানুষ যেত না, আমাদের পাঠ্য বইএর বাইরে কোন বই পড়া হারাম ছিল। আমার বাবার বইএর দোকান ছিল, সে হেতু দুনিয়ার অজস্র বই পড়া হয়েছিল কিন্তু আমার সহপাঠী দের কখনো পড়ার বই এর বাইরে কিছু পড়তে দেখিনি।

মনে আছে কি কারো জানিনা, আমাদের দেশে আব্দুল্লাহ আবু সায়েদ স্যার বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র দিয়ে শুরু করেছিলেন বাংগালিকে বই পড়ানোর আন্দোলন। তিনি শুরু করেছিলেন যায়গা মতই একদম স্কুল লেভেল থেকে যাতে করে ছোট থেকে বাচ্চা গুলা দেশ বিদেশের জ্ঞান আহরন করতে পারে। বাট অনেক সীমাবদ্ধতার কারনে সমাজের মোটামুটি এলিট লেভেলেই কেন যেন এটা আটকে থেকেছিল।

যে কারো বাসায় পড়ার বইএর বাইরে যদি কোন বই থাকত সেটা হত-
মোক্সুদুল মুমিন, ১২ চান্দের ফজিলত, পঞ্জিকা, দোয়ার বই আর যদি একটু অন্য রকম চিন্তা হত তাহলে মরিস বুকাইলির সেই বিখ্যত বই।

এর বাইরে আরো একটু উন্নত সমাজে গেলে- সমরেশ, বুদ্ধদেব, হুমায়ুন আহমেদ বা সূনীল।

আজাদ, ছফা, কার্ল মাক্স, লেনিন, এরিস্টোটল কিংবা তাস্লিমার বই সমাজের একদম হাতে গোনা দুই চার জনে।

আর বিদেশী লেখকের বই পড়া আরো হাতে গোনা। আমার মনে আছে আমি যখন ২০০০ সালে গালিভার আর লিলিপুট পড়ছিলাম, তখন আমি আমার আশে পাশের ১৪ গুস্টির মধ্যে কাউরে এটার নাম শুনতে দেখিনাই।

আমার ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স আছে অন্তত ২০ বছরের বাংগালি কি বই কিনে । বইএর দোকানে রেগুলার বসি ১৯৯৫ থেকেই।

তবে ২০০০ এর পর থেকে বা ২০১০ এর পর থেকেই এই আন্দোলন মারাত্মক রকমে ভাটা পড়ে যায় এবং কেমন যেন থিতিয়ে যায়।

তাও যা টুকটাক বেঁচে ছিল সেটা সমাজের এলিট লোকেদের মধ্যেই। মধ্যবিত্ত আর নিম্ন মধ্যবিত্ত রা তো বাদ ই এই ইকুয়েশান থেকে।

তবে গত ১০ বছরে এই সিনারিও পালটে গেছে।
আমাদের এই যে জ্ঞানের অভাব আর বই পড়ার অভাব এই যায়গা টা একটা মারাত্মক শিফট এসেছে। এখন আপনি যে কারো বাসায় গেলে কিছু কমন বই দেখতে পাবেন। সেটা আগের মত নয়।

এখন আপনি পাবেন আরিফ আজাদ, রাফান আহমেদ, আসিফ আহনাফ থেকে শুরু করে বেশ কিছু সিলেক্টিভ লেখক রা এই যায়গায় রাজত্ব করছে এর সাথে কিছু নিব্বা নিব্বির কাছে গরিবের হুমায়ুন/জীবনানন্দ সাদত বা লুতুপুত লেখার সুন্দরী ওড়না ছাড়া ফেসবুকে ছবি দিয়ে হট খেতাব পাওয়া মেয়েব্রিটি কিংবা আধুনিক লুতুপুতু লেখক রা।

উপরে একটা লিস্ট দিয়েছি- একটা বই এর গ্রুপে সেরা লেখক বা প্রিয় লেখক দের তালিকা বা টোল করা হয়েছে।

তালিকা থেকেই বুঝা যায় বাংলাদেশের মানুষের চিন্তা এখন কোন দিকে বইছে।

আমি অনেক বছর ধরে লিখি মূলত আমাদের দেশের মানুষ দের পড়ালেখা আর জ্ঞান বিজ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তার সমস্যা নিয়ে।

এই যে জ্ঞান বিজ্ঞান আর বুদ্ধিভিত্তিক পড়াশুনা বাদ দিয়ে অবৈজ্ঞানিক, ভুয়া তথ্যে ভরপুর বই দিয়ে সমাজের একটা বিশাল অংশের মানুষের বই এর তাক ভর্তি এটা থেকেই আপনি বুঝে নিতে পারেন সমাজ বা রাস্ট্র কোন দিকে ধাবিত হচ্ছে।

আমাদের দেশে গত ১ দশক ধরে চলছে এক রাজনৈতিক মাফিয়া শাসন আর এর ভেতর দিয়ে উলটা দিকে তৈরি হচ্ছে জ্ঞান হীন বোধ হীন এক্টা ভয়ংকর বুদ্ধিহীন জনগণের বিশাল সমাজ।

দেশ ও সমাজের এই পরিবর্তন ও পচে যাওয়া ঠেকানোর কোন উপায় নেই যদিনা অবস্থার কোন পরিবর্তন না হয় একদম টপ লেভেল থেকে।

এটার দায় কি শুধু জনগনের? অবশ্যই না। এটার সবচেয়ে বেশি দায় সরকারের, রাজনীতির। আজকে সমাজের প্রতিটি স্তরে রাজনৈতিকরনের ফল এটা। এখন আপনি কোন বুদ্ধিজীবির দেখা পাবেন না, কোন সাহিত্যীক এর দেখা পাবেন না, কোন মুক্ত চিন্তার মানুষের দেখা পাবেন না, পাবেন চাটার দল, পাবেন ভয় পেয়ে লুকিয়ে থাকা ভীতুর দল।

সমাজের এই যে পচন, এ থেকে মুক্তির কোন উপায় নেই। এই পচন ই আমাদের কে নিয়ে যাবে আফগানিস্তান , লিবিয়া কিংবা ইয়েমেনের পথে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:১৯
১৪টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×