অস্ত্র রিভিউ :: M26 (Lemon Grenade) Fragmentation Hand Grenade
তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণে :: মাশুক খান
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস :: ১৯১৭ সালে সংগঠিত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আধুনিক অস্ত্রের দিক থেকে আমেরিকানরা ছিলো সবথেকে পিছিয়ে। তারা ব্রিটিশ ও ফরাসীদের অস্ত্রের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিলো। তাদের আর্মির জন্য প্রয়োজনীয় রাইফেল, মেশিনগানের পাশাপাশি গ্রেনেডও সেসব দেশ সরবরাহ করতো। আমেরিকান আর্মি তখন ব্যবহার করতো ব্রিটিশ "Mills Bomb" এবং ফরাসী F1 সিরিজের গ্রেনেড। পরবর্তীতে তারা নিজেদের জন্য নতুন গ্রেনেড তৈরীর সিদ্ধান্ত নেয় এবং F1 সিরিজের উপর কাজ শুরু করে। F1 এর ডিজাইন ডেভলপ করে তারা তৈরি করে টাইম ফিউজ হ্যান্ড গ্রেনেড Mk1। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী Mk1 থেকে ফলাফল পাওয়া যায়নি। জটিল ইগিনেশন ব্যবস্থার কারনে অধিকাংশ সময় দেখা যেত সৈন্যদের থ্রো করা গ্রেনেড আর্ম হয়নি। প্রত্যাশা পূরন না হওয়ার কারন Mk1 গ্রেনেড ১৯১৮ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং সেই বছরই ডিজাইন হয় Mk2 গ্রেনেডের। MK2 মিলিটারীদের প্রত্যাশা পূরন করে তবে আমেরিকান মিলিটারীদের ইনভেনটরী স্টান্ডার্ডে আসে ১৯২০ সালের দিকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় MK2 এর প্রচুর ব্যবহার হতে থাকে। তখন এটা ছিলো আমেরিকান সৈন্যদের স্টান্ডার্ড ফ্রাগমেন্ট গ্রেনেড। ১৯৬০ সালের দিকে M26 গ্রেনেডের আগমন ঘটে এবং MK2 এর স্থান দখল করে। দেখতে অনেকটা লেবুর মত বিধায় এর নাম দেওয়া হয় লেমন গ্রেনেড।
ডিজাইন :: M26 লেমন গ্রেনেডের বডি মসৃন এবং একই রিবের সাহায্যে প্রতিটি অংশ আলাদা আলাদা ভাগ করা হয়েছে। গ্রেনেডের উপরের অংশে কার্ভ লিভার রয়েছে যাকে স্পুন বলা হয়। স্পুনের সাথে সেফটি পিন লাগানো থাকে। সাড়ে চারশো গ্রামের ওজনের এই গ্রেনেড লম্বায় ৩.৮ ইঞ্চি এবং প্রশস্তে ২.৫ ইঞ্চি। অন্যসব গ্রেনেডের মত এখানে টাইম ফিউজ ব্যবহার করা হয়েছে যার বিস্ফোরণের ধ্বংসের রেঞ্জ ১৫ মিটার। স্মোকলেস ফিউজ মেকানিজম ব্যবহারের ফলে M26 লেমন গ্রেনেড ফিউজের সময় কোন ধোঁয়া উৎপন্ন করে না, যেমনটা MK2 করতো। MK2 ফিউজিংয়ের ধোঁয়া অপারেটরের অবস্থান ফাঁস হওয়ার অন্যতম কারন ছিলো। যা যুদ্ধক্ষেত্রে অসুবিধাজনক।
অপারেশন :: অন্যসব গ্রেনেডের মত M26 লেমন গ্রেনেড অপারেট করা সহজ। সেফটি পিন খুলে ফেলার পর লিভার আনলক হয়। এরপর গ্রেনেড থ্রো করার সময় লিভার স্প্রিংয়ের ধাক্কায় মুক্ত হয় এবং ফায়ারিং পিন সক্রিয় করে। পরবর্তীতে ফায়ারিং পিন প্রিমারে আঘাত করে যা টাইম ফিউজকে এক্টিভেট করে এবং চার পাঁচ সেকেন্ডের মাথায় গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের ফলে গ্রেনেডের কেসিং ফ্রাগমেন্টের আঘাতে টুইরো টুকরো হয়ে প্রচন্ড গতিতে ছড়িয়ে যায় যা টার্গেটস্থলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
১৯৫০ সাল থেকে M26 লেমন গ্রেনেড ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানের আমেরিকাসহ কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, পর্তুগাল, সাউথ আফ্রিকা ও ভিয়েতনাম সহ বিভিন্ন দেশ ব্যবহার করছে এই গ্রেনেড।
টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেসন ::
অস্ত্রের মডেল :: M26 (Lemon Grenade)
ক্যাটাগরি :: Fragmentation Hand Grenade
উৎপাদনকারী দেশ :: আমেরিকা
উৎপাদনকারী :: State Factories
উৎপাদন সাল :: ১৯৫০
উচ্চতা :: ৩.৮৯৭ ইঞ্চি (৯৯ মি.মি.)
প্রশস্ত :: ২.২৪৪ ইঞ্চি (৫৭ মি.মি.)
ওজন :: ৪৫৪ গ্রাম।
এ্যাকশন :: Manually-Actuated; Thrown
ডেটোনেশন মেকানিজম :: M204-series Timed Friction Fuse
ফিড সিস্টেম :: সিঙ্গেল ইউজ।
ইফেক্টটিভ রেঞ্জ :: ১৫ মিটার
মূল্য :: ১১ ডলার।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪৮