রুশদি'কে নমস্কার করা ঘড়ির কাটা যখন হেলতে থাকে তার বামে, তখন আমরা সবাই ঘুমিয়ে ডান কাত হয়ে। অনেক্ষন পর ঢলে পরা সময় আর ক্লান্ত প্রেতাত্মারা স্বীয় কবরের পথ ধরে। কালী আন্ধার দূর করতে মুয়াজ্জিন ঘোষণা দেয় 'নিদ্রা হইতে ইবাদত উত্তম'; জেগে ওঠে শহরের সব পুরোহিত'ও। একই অন্তরযামীর উপাসনা দিয়ে শুরু হয় ভিন্ন ভাষার আরাধনা। বোবা ঈশ্বর শেখেন উপাসকের ভাষা।
আমরা পথ হাঁটি ব্রহ্মপুত্রের পানে, প্রভাতফেরী। দিগন্তজুড়ে পবিত্রতার আকাশে লাল টিপে সেজে চোখ মেলে এ'শহর। নিঃশব্দে হেটে যায় পথিক, দ্বি-চক্রযান আর টুং-টাং শব্দ করা রিক্সাগুলো। কেও ঘর থেকে বেরিয়ে আর কেও ঘরে ফেরে। সারারাত শরীর অপবিত্র করে ব্যবসা করলো যে রমণী, ঘরে ফেরার পথে সে'ও এখন পবিত্র। এমনি পবিত্র সে 'পবিত্র কিরণ'।
লেলিয়ে দেয়ার অপেক্ষায় তথাকথিত ধর্মপ্রেমী কোনো ধর্মহীনের জন্ম তখন হয়নি। তখনও ফুল কুড়িয়ে ঘরে ফেরা মহুয়া'র লাজুক চাহনি আশরাফের চোখে বৈষ্ণবীর মতো লাগে। ধর্মের কালো চশমা খুলে আশরাফ প্রথম দেখে শাকাহারী মহুয়াকে। এভাবেই তাহাদের হৃদয়ের আকাশে পাতা মেলে ভালোবাসার চারাগাছটি। মহুয়া আজ অলোকের অর্ধাঙ্গিনী, আশরাফ'ও আজ তাহমিদার সাথে সংসারে। কে সুখী, কে সুখী নয় আমি জানিনা। শুধু জানি সেই চারাগাছ আজ আকাশচুম্বী এক অশ্বথ।ভালো এখন নিশ্চই সবাই সবাইকে বাসে, নির্ভয়ে।
চুরি করে টানা প্রথম সিগারেট, প্রথম প্রেমের অপক্ব নিবেদন, ছেড়ে যাওয়া ট্রেনের জানালা দিয়ে ধরে রাখা তার হাত আর একটা কামিনী গাছ। সেই গাছে নিচে এই হৃদয়ের জলে বিশ বছর ভিজিয়ে রাখা এক পূর্ব পুরুষের কবর। ময়মনসিংহ আজও তোমারি আবেশ ... এ শহরেই জন্ম আমার, এখানেই যেন হয় শেষ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:১৬