ভোমরা থেকে অসলো

নোবেল শান্তি পুরস্কার ২০১৪র জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়েছেন 'ব্যাংকার টু উইমেন' খ্যাত ড মুহাম্মদ এরশাদ। বিগত অর্ধ শতকেরও বেশী সময় ধরে নারীর ক্ষমতায়নে ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে বিরাট ভূমিকা পালন করে চলেছেন তিনি ও তার প্রতিষ্ঠান রঙ্গিন ব্যাংক। রংপুরের ভোমরা গ্রাম থেকে তিনি এই ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করেন; ধীরে ধীরে পৌঁছে যান রঙ্গভবনে।

নোবেল শান্তি কমিটির প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, নারীদের এই ব্যাংকার এক পরশ পাথর। তার ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে বদলে গিয়েছে অনেকের জীবন; কেউ সংরক্ষিত শবাসনে সাংসদ হয়েছেন, কেউ বারিধারায় এপার্টমেন্ট পেয়েছেন , কেউ মন্ত্রী হয়েছেন আবার কেউ বা হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রী। এপ্রসঙ্গে উপমহাদেশের খ্যাতিমান সম্পাদক সালমা যোগী বলেন, উনার এই ক্ষুদ্র ঋণ ভালোবাসার ঋণ, এতে সুদের হার একটু বেশী হলেও বঙ্গের অনেকের জীবন রঙ্গে ভরে গেছে রঙ্গিন ব্যাংকের ঋণ নিয়ে।

চিকিতসা শাস্ত্রে নোবেল পেতে যাচ্ছেন ড শফিন্দ্রনাথ টেটোল

২০১৪ সালে চিকিতসা শাস্ত্রে নোবেল পেতে যাচ্ছেন অভাবনীয় ‘তেঁতুল’ শাস্ত্রের জনক ড শফিন্দ্রনাথ টেটোল। নোবেল কমিটির প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, নারী ও তেঁতুলের যে জৈববিজ্ঞানিক যোগ সূত্র ড টেটোল আবিষ্কার করেছেন তা চিকিতসা বিজ্ঞানের বিদ্যমান অনেক সূত্রকেই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করেছে। একজন নারী দেখে পুরুষের হৃদ পিন্ডে বা মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বেড়ে যাবার সূত্র দিয়ে অনেকে নোবেল পুরস্কারও নিয়ে গেছেন। সেখানে ড টেটোল প্রমাণ করেছেন, নারীকে দেখলে পুরুষের মুখ গহবরে টায়ালিন নিঃসৃত হয় ও জিভে লালা আসে। হাটহাজারীতে দীর্ঘ চারদশকের গবেষণার আলোকে উত্থাপিত এই নারী ও তেঁতুলের সাদৃশ্য নির্ভুল ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। ড টেটোলের গবেষণায় আরো দেখা যায়, তেতুল গাছের ছায়ায় যেমন কোন গাছ বাঁচেনা। ঠিক তেমনি নারীর ছায়াতেও কোন পুরুষ বাঁচেনা। তারা আত্মঘাতী বোমা হামলা করে নিজেও মরে; অন্যকেও মারে। বিশেষ করে মুসলমান পুরুষের চার স্ত্রীর (নারীর) ছায়ায় থেকে দ্রুত মৃত্যু ঘটে। জীববিজ্ঞানের এরকম প্রলয়ংকরী রহস্য ভেদ করায় টেটোল বিজ্ঞানীর নোবেল প্রায় নিশ্চিত বলেই মনে হচ্ছে।

নোবেল পেতে পারেন পলিটো-ফিজিক্সের জনক মখামিডিস

এবছর পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেতে পারেন পদার্থ বিজ্ঞানে রাজনীতির সূত্র প্রয়োগে সফল বিজ্ঞানী মখামিডিস। সাভারের রানাপ্লাজা ধসে পড়ার পর এর কারণ হিসেবে মখা বিরোধীদলের কর্মীদের স্তম্ভ নাড়াচাড়া করার বিষয়টি উত্থাপন করেন। নোবেল কমিটি মনে করে, ফলাফল যাই হোক আরব বসন্তে সরকারের স্তম্ভ ধরে নাড়াচাড়া করে ফেলে দেয়ার সাক্ষ্য মিলেছে। তাছাড়া সম্প্রতি পূর্ব ইউরোপের একটি দেশে দালান ধসের কারণে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর মখামিডিসের থিওরী অফ পিলার আরো পোক্ত হয়। সেখানেই মখামিডিস থেমে থাকেন নি। পদার্থ বিজ্ঞানী নিউটনের প্রত্যেক ক্রিয়ার সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়ার তৃতীয় সূত্রটি রাজনীতিতে প্রয়োগ করেন তিনি। তিনি ঢাকায় একটি ব্যাংক লাইসেন্স নিলে কচুয়ায় জুতা এসে পড়ে তার কোলে। নোবেল কমিটি আরো মনে করে, পলিটোফিজিসিস্ট মখামিডিসের এই জুতা পরীক্ষায় কে-অস থিওরীর বাটার ফ্লাই ইফেক্টের পূর্বাভাস রয়েছে। নোবেল কমিটির এক সদস্য ভলফগাং সুমাখার মখামিডিসের নোবেল পাবার সম্ভাবনা কতটুকু এমন প্রশ্নের জবাবে মখার কোলে এসে পড়া নমুনা জুতাটি দেখিয়ে বলেন, এখুনি মিষ্টিমুখ করিয়ে রাখুন আমাকে।

সাহিত্যে নোবেল নিশ্চিত করেছেন হাসিনা নায়ার

সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র ইলেকশন অফ দ্য ল্যাম্বসের নির্মাতা হাসিনা নায়ার অস্কার না পেলেও তার মইনের ঘোড়া গুলি (হর্সেস অফ দ্য মইন) কাব্য গ্রন্থের জন্য উনি নোবেল পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন। রূপকধর্মী এই কাব্যগ্রন্থে ২০২১ সালের যে চিত্রকল্প উনি রচনা করেন তা জর্জ অরওয়েলের বিভীষিকা ও বিমূর্ততাকে ছাড়িয়ে গেছে। এর আগে তার কাব্য গ্রন্থ যখন কান্না এলো (দ্য ক্রাই) জিতে নেয় বাংলাদেশের পাঠক হৃদয়। সাইকাড্যালিক চলচ্চিত্র সাইলেন্স অফ দ্য ল্যাম্বসের (ভেড়া নীরবে সহো) মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিসরে নাম করেন হাসিনা নায়ার। এই ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয় করে অস্কার জেতেন অভিনেতা এরশাদ ডি নেরো। অস্কার ভাগ্যের শিকে না ছিঁড়ে খানিকটা হতাশ হয়ে ছিলেন নায়ার। কিন্তু হর্সেস অফ দ্য মইন নজর কেড়েছে নোবেল কমিটির। তারা হাসিনা নায়ারের এই কাব্য গ্রন্থ সম্পর্কে বলেন, লোকজ উপাদান, পার্থিব চাওয়ার টানাপোড়েন, দেশ ভ্রমণের আকাংক্ষা এবং স্পিরিচুয়ালিটির সমাবেশ ঘটেছে হাসিনার সাহিত্য কর্মে। নোবেল কমিটির সদস্য গুন্টার গ্রাসকে হাসিনা-সাহিত্যের মূল্যায়ন করতে বললে তিনি বলেন, গোয়েটের ফাউস্টের চেয়ে হাসিনার হর্সেস অফ মইনের আবেদন অনেক বেশী। আজ গ্যোয়েটে বেঁচে থাকলে পরাজয়ের আনন্দে বলতেন, জিভ কাটো লজ্জায়!

অর্থনীতিতে নোবেল পাচ্ছেন ব্ল্যাক স্কার্ট ইকনোমিস্ট দরবেশ

বাংলাদেশ অর্থনীতির বিস্ময় পুরুষ দরবেশ মোদি এবার যেন নোবেল দৌড়ে এগিয়েই আছেন অন্যদের চেয়ে। অমর্ত্য সেনের গ্রোথ উইদ ইকুইটির সূত্রকে নাকচ করে দিয়ে বাজিকর দরবেশের স্টপ স্টক গ্রোথ সূত্রটি বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজারে ও জুয়াখানা গুলোতে তোলপাড় তুলেছে। দরবেশের অর্থসূত্র হলো; শেয়ার বাজারে কৃত্রিম ধস এনে ভুক্তভোগীদের কর্মে উদযোগী করা। সারাদিন শেয়ার বাজারে ঘুরাঘুরি করে আর ক্যালকুলেটর টিপে উদ্যোক্তা জাতি হওয়া যায়না বলে মনে করেন দরবেশ। অর্থ প্রসঙ্গে উনার সিদ্ধান্ত, অর্থের সাদা-কালো কী, অর্থতো লক্ষী। কেউ কালো স্কার্ট পরে থাকলে তাকে কী আমরা কালো বলতে পারি। এপ্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারাকাত বলেছেন, বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য দুজন অর্থনীতিবিদ নোবেল জয়ী হচ্ছেন যারা কালো-স্কার্ট অর্থনীতির ভক্ত অথবা প্রবল অর্থভক্ত। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন মন্তব্য করেছেন, ভাগ্যিস ঢাকা ছেড়েছিলাম, নাহলে আজ আমাকেও এই অর্থনীতির কালো স্কার্ট দেখতে হতো। এতো রীতিমত অর্থনীতির গণেশ উলটে দেয়া মতবাদ। এটা কী নরেন্দ্র মোদির জমজ ভাই নাকি। দেখতে কিন্তু একইরকম। এতোসব সমালোচনার পরেও নোবেল কমিটি বলছে অন্যকথা। তারা বলছে ,পুঁজিবাদ কালো স্কার্টেরই সমার্থক। ব্ল্যাক স্কার্ট ইকোনমির জনক দরবেশ সেই অর্থ-মনস্ক সমাজেরি বাতিঘর।

নোবেল পাচ্ছেন আলকেমিস্ট খালেদা বিনতে সিনা

এবার রসায়নের নোবেল পুরস্কার যাচ্ছে একটি গোলাপী ভ্যানিটি ব্যাগে। পলিটিকেমেস্ট্রির সাকী যেন বিনতে সিনা। তিনি ভোটারদের সঙ্গে এক জটিল রসায়নে জড়িয়েছেন নিজেকে। রাজনীতিতে রসায়নের অপূর্ব মাধুরী যেন এই রাণীবিজ্ঞানী। পানির রাসায়নিক যৌগ h2o এতো সবাই জানে। কিন্তু খালেদা বিনতে সিনা প্লেন ওয়াটারের এই নন-এরোমেটিক জৈব বিশ্লেষণকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি মনে করেন এরোমা বা পারফিউম ছাড়া এই বোকা পানিটাই জীবনের শেষ কথা নয়। চারপাশে যে পরিবেশ দূষণ তাতে শুধু পানি খাওয়া মানুষেরা সকালবেলা মুখে হাইড্রোজেন সালফাইডের গন্ধ নিয়ে ঘুম থেকে ওঠে। এই পানি-খেকোরা এক অর্থে প্রচুর কার্বন নির্গমন করে আর তা থেকেই ক্লোরো-ফ্লোরো কার্বনের ঘাতক চক্রটি বহুগুণে বেড়ে ধরিত্রীর আকাশের বেগুণী স্তর বেলুনের মতো ফুটো করে দিচ্ছে। খালেদা মনে করেন, এমন পানীয় পান করা উচিত যা মানব সমাজকে অক্সিজেন নির্গমনে সাহায্য করতে পারে। এরোমাকে জীবনের অংশ মনে করেন তিনি। তার এই নান্দনিক রসায়নের পারফিউম জনমনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে গত তিনটি দশকে। উনি বলেন, জীবন একটাই, এইখানে মফিজকে খুশী করতে; তার কথিত রেসপেক্ট পেতে বয়সের কাছে হার মেনে জয়া ভাদুড়ী বুয়া হয়ে ঘোরার মানে হয় না। রেখা কেন নয়। শেষ পর্যন্ত অমিতাভ রেখার কাছেই ফিরে আসে, যেন পাখি ফেরে নীড়ে। নোবেল কমিটি এই পলিটোকেমেস্টির থিওরীকে লুফে নিয়েছেন। কমিটির সদস্য পাওলো কোয়েলহো বলেছেন, আমি এতদিন গোলাপের পারফিউম খুঁজেছি; অথচ গোলাপি রঙের বা রোদের সুবাস খুঁজিনি। এটা খুঁজে পেয়েছেন এই পলিটোকেমিস্ট্রি কুইন!