বাংলাদেশ দল পাকিস্তানকে অনেক বড় টার্গেট দিয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩২৬ রান তিন উইকেট হারিয়ে যে দল করতে পারে; সে এখন সেরা ক্রিকেট দলগুলোর একটি এটা নিয়মিত ক্রিকেট দেখেন যারা তারা সবাই বুঝতে পারছেন। ভারত এবং পাকিস্তানের ক্রীড়া সাংবাদিকরা আজ দুই দেশের টিভি বিশ্লেষণ গুলোতে এমনটাই বলছে। আফ্রিদির ভাই আজ যেরকম সিক্স হাঁকিয়েছে তাতে বোলিং-ফিল্ডিং-এ পৃথিবীর কোন দলই কিছু করতে পারতো না। বুড়ো শরীরে অতিরিক্ত ছয় হাঁকাতে গিয়ে মেরুদন্ডে আঘাতও পেয়েছে সে। আহত অবস্থায় সে আম্পায়ারের কাছে সহযোগী রানার চায়। আমপায়ার চমকে ওঠেন। আফ্রিদির ভাই বলে কী, এই রানার নেয়ার নিয়মতো কবেই উঠে গেছে। ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা বলেন, গোটা পৃথিবীতে যত ক্রিকেট প্লেয়ার আছে তার মধ্যে আফ্রিদির পক্ষেই এরকম আজগুবী প্রস্তাব দেয়া সম্ভব। এতো ম্যাচ খেলছে-দেখছে তাও সে জানেনা যে কেউ আহত হলে রানার নেয়ার ব্যবস্থা আর নাই। পাকিস্তানের পাঠান ও ভারতের সর্দারজীরা প্রতিদিন এরকম হাস্যকর কাজ করে থাকে। সেইজন্য যাবতীয় কৌতুক উতপাদনে তাদের কাছে দেশদুটি ঋণী।
বাংলাদেশ এশিয়া কাপে যে পারফরমেন্স দেখিয়েছে তা খুবই আশাপ্রদ। আমরা কেউই মাঠে নেমে খেলিনা। গ্যালারীতে বসে বা সোফায় কাত হয়ে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হই। তারপর নতুন আসা ফেসবুকে প্লেয়ারদের বকাঝকা করি। কিন্তু বাংলাদেশের ঐ ১১ জন তরুণ জানে প্রত্যেকটা ম্যাচ এক একটা অগ্নিপথ। সেখানে হারজিত যাই হোক পরিশ্রম, টেনশান, আনন্দ অথবা বেদনা গুলো খুব চড়া মূল্যের। এতো ভালো খেলেও যারা হেরেছে; কিন্তু পরাজিত হয়নি; তাদের প্রশংসা করতে শিখতে হবে আমাদের। অস্ট্রেলিয়া কিংবা নিউজিল্যান্ডের সংস্কৃতি এরকম। বাংলাওয়াশ হয়ে গেলেও নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট ফ্যানরা ফুল নিয়ে এয়ারপোর্টে আসে। আর দক্ষিণ এশিয়ার হায় হায় পার্টি নিজের জীবনের হতাশার শোধ তোলে হেরে যাওরা ক্রিকেট প্লেয়ারদের সঙ্গে। এইজন্য দক্ষিণ এশিয়ার প্রত্যেকটি দল তাদের জাতীয় প্রত্যাশা ও হতাশার বোঝা কাঁধে নিয়ে খেলতে নামে। সিরিয়াস গার্জেনেরা যেমন বাচ্চাকে কথিত 'ফার্স্ট' হওয়ার চাপে শয্যাশায়ী করে ফেলে। এই ক্লিশে থেকে বের হয়ে চলুন সবাই মিলে বলি "অভিনন্দন ওরা ১১জন"; সুখে দুঃখে আমরা তোমাদের সঙ্গে আছি। তোমরা নির্ভার হয়ে ধীরে ধীরে চেষ্টা করো; সাফল্য খুব দ্রুতই পিছে হাঁটবে তোমাদের।
যেমন বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল; আলোর অলক্ষ্যে বেড়ে উঠেছে। আজ পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দলকে ৪৩ রানে হারিয়ে দিয়েছে। যেহেতু এরা মিডিয়ার স্পট লাইটে নাই, কোন সমালোচনাও নাই। আর তেমন প্রশংসাও নাই। আজ ঐ ১১ জন আনসাং হিরো(ইন)কে আমাদের অভিবাদন বাংলাদেশের বিজয়ের পতাকা ওড়ানোর জন্য। জয়তু তারুণ্য।
অভিনন্দন ওরা ১১জন, অভিবাদন ওরা ১১ বিজয়িনী
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ছবির গল্প, গল্পের ছবি
সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত
বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!
কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে
আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?
এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন