নব্বুই-এর গণ-অভ্যুথান ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে হাজার বছরের শৃংখল মুক্তির পর, বাংলাদেশের সেই মাহেন্দ্র অর্জন, যা ছিল তারুণ্যের সাংস্কৃতিক অভ্যুত্থান।
জনগণের শাসন ব্যবস্থাকে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছিল তারুণ্য। নব্বুই-এর গণ-অভ্যুথান ছিল শাসন ব্যবস্থার অচলায়তন ভেঙ্গে হা রে রে রে করে গণতন্ত্রের আলোক উঠোনে বেরিয়ে আসা।
বাংলাদেশ গণতন্ত্রে নেতা তৈরীর পরীক্ষিত পদ্ধতি হচ্ছে ছাত্র-সংসদ নির্বাচন। ছাত্রদের গণতন্ত্র চর্চা ও রাজনীতির হাতে-কলমে শিক্ষার ‘জায়গা’ ছিল ছাত্র সংসদ নির্বাচন।
নব্বুই-এর গণ-অভ্যুত্থানে আমরা একঝাঁক তরুণ নেতা পেয়েছিলাম যারা সাংস্কৃতিক উপাদানগুলোকে ব্যবহার করেছিলেন সামরিক জান্তা এরশাদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ লড়াই-এ। নব্বুইকে ঘিরে সাংস্কৃতিক আন্দোলন তার উতকর্ষে পৌঁছেছিল। এরশাদ পাখির মত গুলি করে মেরেছিলেন ছাত্রনেতা ডা মিলনকে; তার সাংস্কৃতিক রুচি অনুযায়ী। কিন্তু নব্বুই-এর তারুণ্য আস্থা রেখেছিল ঐক্যে ও সাংস্কৃতিক চেতনার আয়ূধে। তারুণ্য মূলতঃ তার রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক চেতনার বারুদে উড়িয়ে দিয়েছিল এরশাদের বাতিল দূর্গকে।
নব্বুই-এর নেতাদের মাঝ থেকে এবং এরপর ধারাবাহিক সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা অনায়াসে পেতে পারতাম আমাদের কাংক্ষিত সম-ভাবনার নেতা ও বন্ধুদের; যারা আজকের বাংলাদেশের প্রাসঙ্গিক কান্ডারী হতে পারতো।
নব্বুই-এর সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য ছিল একটি ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের ঋজু সূচনাপর্ব।
সেই নব্বুই-এর নেতাদের প্রচলিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা এক অর্থে হত্যা করেছে। ডাকসু নির্বাচন বন্ধ করে দিয়ে গ্রাম্য মাতবর কেন্দ্রিক টাকা অলা অনেতাদের বুলবুলি আখড়াই চলছে বাংলাদেশ রাজনীতিতে।
কারণ ঐ যে ধরুন বাতিল মালগুলো যারা রাজনীতির পীর তারা আন্ডালিব পার্থের মত আরো বাতিল পারিবারিক পচা ডিম উপহার দিতে চেয়েছে বাংলাদেশের ভুত-ভুতুম রাজনীতিতে। পীর প্রথা, নিজের অপদার্থ ছেলেটিকে বা ডেসপারেট হাউজ ওয়াইফ মেয়েটিকে নির্বাচনী এলাকায় গদিনশীন করে তবেই মরতে চান এই আত্মকেন্দ্রিক পোড়া মুখগুলো। নিজেদের অবস্থাও সেই অন্তর্জলী যাত্রার বুড়োর মত। মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে শুয়েও ভাবে, আমি ফিরে যেতে পারলে ভালো, নাইলে আন্ডা-মাইয়া রাইখা গ্যালাম।গদি সামলাইশ!
নব্বুই-এর নেতাদের অসহায় রূপান্তর বা জীবন্মৃত অবস্থা দেখে মনে হয়, এ হচ্ছে রাজনৈতিক মেধার অপচয়। নব্বুই-এর নেতাদের ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে আমরা অগ্রজ হিসেবে খুব কাছে থেকে পেয়েছিলাম। আমরা জানি তাদের মানসিক উচ্চতা ও ঔদার্য সম্পর্কে। এই অগ্রজদের সঙ্গে দেখা হলে তারা আমাদের পড়ালেখার খবর নিতেন, নির্বিঘ্নে বিতর্ক বা অন্যান্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবার পেছনে প্রণোদনা ছিলেন এরা। মানুষ তো ছোট ছোট দেখা হওয়া, কথা হওয়ার মাঝ দিয়েই একজন মানুষের মনোভঙ্গী বুঝে। আমরা বুঝে গিয়ে ছিলাম এরাই আমাদের নেতা; এদের সঙ্গে আমাদের সমানুভূতি আছে।
সেই নব্বুই-এর নেতাদের আড়াল করে দেয়া হয়েছে পারিবারিক আন্ডাবাচ্চা ও হাইব্রিড ব্যবসায়ী তস্কর দিয়ে। ফলে সুশাসনের দেখা নাই; এর দেখা আর কোনদিনই পাওয়া যাবে না।
বঙ্গবন্ধু হত্যার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে হত্যা করা হয়; আর নব্বুই-এর নেতাদের অবমূল্যায়ন করে; জাঢ্য-জরদগব-আউটডেটেড বাতিল ঘেউ ঘেউ করা আত্মকেন্দ্রিক বুড়ো-বুড়ীরা বলে দিলেন, ঐ যে, এক ঘরমে দো পীর যাও বাছা শো রাহো।
বিস্মৃতির অতল জলধিগর্ভে হারিয়ে গেলেন আমাদের নব্বুই-এর রেনেসাঁর নায়কেরা। তারপর ডাকসু সহ অন্যান্য নির্বাচন বন্ধ রেখে গণতন্ত্রের বৃক্ষটির শেকড় কেটে দেয়া হলো। জনমানুষের মাঝ থেকে আর নেতা উঠে আসার সুযোগ নাই।
এখন নেতা তৈরী হয় হাসিনা-খালেদার বুটিক হাউজে, এরশাদের ব্যায়ামাগারে। ফেল কড়ি; মাখো তেল; গণতন্ত্রের ‘লাশ’-ভেগাস।
সম্প্রতি শাহবাগ গণজাগরণ, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে শুরু হওয়া ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের জনযাত্রার এক মিলন মোহনা হয়ে উঠেছিল; শাহবাগ তারুণ্যের সাহজিক দেশ চেতনার অভ্যুত্থান দেখে মনে হয়েছিল; এবার আমরা নব্বুই-এর সাংস্কৃতিক বিজয়ের আকাংক্ষার পুনর্জন্ম ঘটতে দেখছি। মানুষ আত্মকেন্দ্রিকতার নাগরিক খোলস ভেঙ্গে বেরিয়ে এসেছিল নবজাগরণের উদ্দীপনায়। শাহবাগের তরুণেরা যখন টিভির টকশো গুলোতে অন্তর্জলী যাত্রা্র রাজনৈতিক নেতা ও তাদের জমিদারি রাজনীতির আন্ডাদের সঙ্গে বিতর্কে উপনীত হয়; শিক্ষা-সাংস্কৃতিক মানের পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। বোঝা যায় বাংলাদেশ তারুণ্য গোলকায়নের আলোক সরণিতে পৌঁছে যেতে পারে অনায়াসে; বাধা হচ্ছে এই বার্ধক্যের অচলায়তন, মাতবরীর গ্রামাবলী।
নব্বুই-এর নেতাদের মত এবার শাহবাগের নেতাদের জন্য ডাকিনীদের সেই একই কোরাস,
এক ঘারমে দো পীর যাও বাছা শো রাহো।
শাহবাগ ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা চলছে, নানা-রকম নিন্দা আর কুতসার কালিঝুলি মেখে দেয়া হচ্ছে শাহবাগ নেতাদের গায়ে। ছাগল-বানর লেলিয়ে দিয়ে ডাকিনীরা ছিঁড়ে খুঁড়ে ফেলতে চাইছে সম্ভাবনাময় তারুণ্যকে।
এক জীবনে আর কত সম্ভাবনার মৃত্যু দেখবো বাংলাদেশে। বাংলাদেশকে যারা অষ্টম শ্রেণী থেকে টেনেটুনে বিএ পাসের দুর্লঙ্ঘণীয় অচলায়তনে আটকে রেখেছে; তারা অপরাধী। একেবারে কলতলার কাইজ্জার রাজনীতি, পারিবারিক বা দাস-বলয়ের বাইরের সম্ভাবনাময় এর ওর কপালে কলংকের ছ্যাঁকা দিয়ে দেয়া, ঘুরে ফিরে সেই সৈয়দ ওয়ালীউল্লার লালসালু উপন্যাসের মজিদের মত ভন্ডপীরের কারসাজি। পেট্রোডলারের কাছে ধর্ম বেচে দেয়া; আর রাজনৈতিক মেধা হত্যা; এই সবই মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের মৃত্যুবিছানা পর্যন্ত বিগত যৌবনকে সম্ভোগ আর নিজের অপদার্থ পুত্র-কন্যাকে গদিনশীন করে দিয়ে যাবার ছলা-কলা এবং ক্যানিবালিজম।
এই ক্যানিবালেরা নব্বুই-এর নেতাদের খেয়েছে, শাহবাগের নেতাদের খাচ্ছে, এরা চাইলে আমরা আমাদের ব্রেণ মাসালা, হার্ট ঝাল-ফ্রাই, এবং যে আঙ্গুল দিয়ে লিখি তার কুড়মুড়ে কাবাব পাঠিয়ে দিতে চাই এইসব ক্যানিবালের কাছে। এদের যে গোরুড় পাখীর ক্ষিদে; আমরা জানিনা বিধাতা এদের শরীরে হৃদপিন্ড না দিয়ে দুটো পাকস্থলী দিয়ে দিয়েছেন কীনা!
আলোচিত ব্লগ
আমিও যাবো একটু দূরে !!!!
আমিও যাবো একটু দূরে
যদিও নই ভবঘুরে
তবুও যাবো
একটু খানি অবসরে।
ব্যস্ততা মোর থাকবে ঠিকই
বদলাবে শুধু কর্ম প্রকৃতি
প্রয়োজনে করতে হয়
স্রষ্টা প্রেমে মগ্ন থেকে
তবেই যদি মুক্তি মেলে
সফলতা তো সবাই চায়
সফল হবার একই উপায়।
রসুলের... ...বাকিটুকু পড়ুন
যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে
প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের দাদার দাদা।
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।
আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?
আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন