somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার সঙ্কলন । ( পর্ব-৩ )

৩১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি সূত্রঃ গুগল
সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার সঙ্কলন । ( পর্ব-১ )

সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার সঙ্কলন । ( পর্ব-২ )

১। কবিতা ছুরি
বিগত শেষ সংশয় স্বপ্ন ক্রমে ছিন্ন
আচ্ছাদন উন্মোচন করেছে যত ঘৃণ্য,
শঙ্কাকুল শিল্পীপ্রাণ, শঙ্কাকুল কৃষ্টি,
দুর্দিনের অন্ধকারে ক্রমশ খোলে দৃষ্টি ।
হত্যা চলে শিল্পীদের, শিল্প আক্রান্ত,
দেশকে যারা অস্ত্র হানে, তারা তো নয় ভ্রান্ত ।
বিদেশী চর ছুরিকা তোলে দেশের হৃদয় বৃন্তে
সংস্কৃতির শত্রুদের পেরেছি তাই চিনতে ।
শিল্পীদের রক্তস্রোতে এসেছে চৈতন্য
গুপ্তঘাতী শত্রুদের করি না আজ গণ্য ।
ভুলেছে যারা সভ্য পথ,সম্মুখীন যুদ্ধ,
তাদের আজ মিলিত মুঠি করুক শ্বাসরুদ্ধ,
শহীদ খুন আগুন জ্বালে, শপথ অক্ষুণ
এদেশ অতি শীঘ্র হবে বিদেশী চর শূন্য ।
বাঁচাব দেশ, আমার দেশ, হানবো প্রতিপ,
এ জনতার অন্ধ চোখে আনবো দৃঢ় লক্ষ্য ।
বাইরে নয় ঘরেও আজ মৃত্যু ঢালে বৈরী,
এদেশে জন বাহিনী তাই নিমেষে হয় তৈরী ।


২। কবিতা সূচনা

ভারতবর্ষে পাথরের গুরুভার
এহেন অবস্থাকেই পাষাণ বলো,
প্রস্তরীভুত দেশের নীরবতার
একফোঁটা নেই অশ্রুও সম্বলও।
অহল্যা হল এই দেশ কোন পাপে
ক্ষুদার কান্না কঠিন পাথরে ঢাকা,
কোনো সাড়া নেই আগুনের উত্তাপে
এ নৈঃশব্দ্য বেঙেছে কালের চাকা ।
ভারতবর্ষ কার প্রতীক্ষা করো,
কান পেতে কার শুনছ পদধ্বনি ?
বিদ্রোহে হবে পাথরেরা থরোথরো,
কবে দেখা দেবে লক্ষ প্রাণের খনি ?

ভারতী, তোমার অহল্যারূপ চিনি
রামের প্রতীক্ষাতেই কাটাও কাল,
যদি তুমি পায়ে বাজাও ও কিঙ্কিনী,
তবে জানি বেঁচে উঠবেই কঙ্কাল ।

কত বসন্ত গিয়েছে অহল্যা গো
জীবনে ব্যর্থ তুমি তবু বার বার,
দ্বারে বসন্ত, একবার শুধু জাগো
দুহাতে সরাও পাষাণের গুরুভার ।

অহল্যা দেশ, তোমার মুখের ভাষা
অনুচ্চারিত, তবু অধৈর্যে ভরা
পাষাণ ছদ্মবেশকে ছেঁড়ার আশা
ক্রমশ তোমার হৃদয় পাগল করা ।

ভারতবর্ষ, তন্দ্রা ক্রমশ ক্ষয়
অহল্যা আজ শাপমোচনের দিন
তুষার জনতা বুঝি জাগ্রত হয়
গা ঝাড়া দেবার প্রস্তাব দ্বিধাহীন ।

অহল্যা আজ কাঁপে কী পাসাণকায়
রোমাঞ্চ লাগে পাথরের প্রত্যঙ্গে
রামের পদস্পর্শ কি লাগে গায় ?
অহল্যা জেনো আমরা তোমার সঙ্গে ।


৩। কবিতা অদ্বৈধ

নরম ঘুমের ঘোর ভাঙল ?
দেখ চেয়ে অরাজক রাজ্য
ধ্বংস সমুখে কাঁপে নিত্য
এখনো বিপদ অগ্রাহ্য ?
পৃথিবী এ পুরাতন পৃথিবী
দেখ আজ অবশেষে নিঃস্ব
স্বপ্ন অলস যত ছায়ারা
একে একে সকলি অদৃশ্য ।

রুক্ষ মরুর দুঃস্বপ্ন
হৃদয় আজকে শ্বাসরুদ্ধ
একলা গহন পথে চলতে
জীবন সহসা বিক্ষুব্ধ ।

জীবন ললিত নয় আজকে
ঘুচেছে সকল নিরাপত্তা,
বিফল স্রোতের পিছুটানকে
শরণ করেছে ভীরু সত্তা ।

তবু আজ রক্তের নিদ্রা,
তবু ভীরু স্বপ্নের সখ্য
সহসা চমক লাগে চিত্তে
দুর্জয় হল প্রতিপক্ষ

নিরুপায় ছিঁড়ে গেল দ্বৈদ
নির্জনে মুখ তোলে অঙ্কুর,
বুঝে নিল উদ্যোগী আত্মা
জীবন আজকে ক্ষণভঙ্গুর ।

দলিত হৃদয় দেখে স্বপ্ন
নতুন, নতুনতর বিশ্ব,
তাই আজ স্বপ্নের ছায়ারা
একে একে সকলি অদৃশ্য ।

৪। কবিতা মনিপুর
এ আকাশ, এ দিগন্ত, এই মাঠ, স্বপ্নের সবুজ ছোঁয়া মাটি,
সহস্র বছর ধ'রে এসে আমি জানি পরিপাটি,
জানি এ আমার দেশ অজস্র ঐতিহ্য দিয়ে ঘেরা,
এখানে আমার রক্তে বেঁচে আছে পূর্বপুরুষেরা ।
যদিও দলিত দেশ, তবু মুক্তি কথা কয় কানে,
যুগ যুগ আমরা যে বেঁচে থাকি পতনে উত্থানে
যে চাষী কেটেছে ধন, এ মাটিতে নিয়েছে কবর,
এখনো আমার মধ্যে ভেসে আসে তাদের খবর ।
অদৃশ্য তাদের স্বপ্নের সমাচ্ছন্ন এদেশের ধূলি,
মাটিতে তাদের স্পর্শ, তাদের কেমন ক'রে ভুলি ?
আমার সম্মুখে ক্ষেত, এ প্রান্তরে উদয়স্ত খাটি,
ভালবাসি এ দিগন্ত, স্বপ্নের সবুজ ছোঁয়া মাটি ।
এখানে রক্তের দাগ রেখে গেছে চেঙ্গিস, তৈমুর,
সে চিহ্নও মুছে দিল কত উচ্চৈঃশ্রবাদের খুর ।
কত যুদ্ধ হয়ে গেছে, কত রাজ্য হয়েছে উজাড়,
উর্বর করেছে মাটি কত দিগ্বিজয়ীর হাড় ।
তবুও অজেয় এই শতাব্দীগ্রথিত হিন্দুস্থান,
এরই মধ্যে আমাদের বিকশিত স্বপ্নের সন্ধান ।
আজন্ম দেখেছি আমি অদ্ভুত নতুন এক চোখে,
আমার বিশাল দেশ আসমুদ্র ভারতবর্ষকে ।
এ ধুলোয় প্রতিরোধ, এ হাওয়ায় ঘুর্ণিত চাবুক,
এখানে নিশ্চিহ্ন হল কত শত গর্বোদ্ধত বুক ।
এ মাটির জন্যে প্রাণ দিয়েছি তো কত যুগ ধ'রে
রেখেছি মাটির মান কতবার কত যুদ্ধ ক'রে ।
আজকে যখন এই দিক্প্রান্তে ওঠে রক্ত ঝড়,
কোমল মাটিতে রাখে শত্রু তার পায়ের স্বাক্ষর,
তখন চীৎকার ক রক্ত ব ওঠে ধিক ধিক
এখনো দিল না দেখা দেহে দেহে নির্ভয় সৈনিক
দাসত্বের ছদ্মবেশ দীর্ণ করে উন্মোচিত হোক
একবার বিশ্বরূপ উদ্দাম, হে অধিনায়ক
এদিকে উৎকর্ণ দিন, মণিপুর কাঁপে মণিপুর
চৈত্রের হাওয়ায় ক্লান্ত, উৎকণ্ঠায় অস্থির দুপুর
কবে দেখা দেবে, কবে প্রতীক্ষিত সেই শুভক্ষণ
ছড়াবে ঐশ্বর্য পথে জনতার দুরন্ত যৌবন ?
দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশে অতর্কিতে শত্রু তার পদচিহ্ন রাখে
এখনো শত্রু ক্ষমা ? শত্রু কি করেছে ক্ষমা
বিধ্বস্ত বাংলাকে ?
আজকের এ মুহূর্তে অবসন্ন শ্মশানস্তব্ধতা,
কেন তাই মনে মনে আমি প্রশ্ন করি সেই কথা ।
তুমি কি ক্ষুদিত বন্ধু ? তুমি কি ব্যাধিতে জরোজরো ?
তা হোক তবুও তুমি আর এক মৃত্যুকে রোধ করো ।
বসন্ত লাগুক আজ আন্দোলিত প্রাণের শাখায়
আজকে আসুক বেগ এ নিশ্চল রথের চাকায়
এ মাটি উত্তপ্ত হোক, এ দিগন্তে আসুক বৈশাখ
ক্ষুদার আগুনে আজ শত্রুরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক ।
শত্রুরা নিয়েছে আজ দ্বিতীয় মৃত্যুর ছদ্মবেশ
তবু কেন নিরুত্তর প্রাণের প্রাচুর্যে ভরা দেশ ?
এদেশে কৃষক আছে, এদেশে মজুর আছে জানি
এদেশে বিপ্লবী আছে, জনরাজ্যে মুক্তির সন্ধানী ।
দাসত্বের ধুলো ঝেড়ে তারা আজ আহ্বান পাঠাক
ঘোষণা করুক তারা এ মাটিতে আসন্ন বৈশাখ ।
তাই এই অবরুদ্ধ স্বপ্নহীন নিবিড় বাতাসে
শব্দ হয়, মনে হয় রাত্রিশেষে ওরা যেন আসে ।
ওরা আসে কান পেতে আমি তার পদধ্বনি শুনি
মৃত্যুকে নিহত করে ওরা আসে উজ্জ্বল আরুণি
পৃথিবী ও ইতিহাস কাঁপে আজ অসহ্য আবেগে
ওদের পায়ের স্পর্শে মাটিতে সোনার দান, রঙ লাগে মেঘে ।
এ আকাশ চন্দ্রাতপ, সূর্য আজ ওদের পতাকা
মুক্তির প্রচ্ছদপটে ওদের কাহিনী আজ ঢাকা
আগন্তুক ইতিহাসে ওরা আজ প্রথম অধ্যায়
ওরা আজ পলিমাটি অবিরাম রক্তের বন্যায়
ওদের দুচোখে আজ বিকশিত আমার কামনা
অভিনন্দন গাছে পথের দুপাশে অভ্যর্থনা ।
ওদের পতাকা ওড়ে প্রামে গ্রামে নগরে বন্দরে
মুক্তির সংগ্রাম সেরে ওরা ফেরে স্বপ্নময় ঘরে ।


৫ । কবিতা দিকপ্রান্তে
ভাঙন নেপথ্য পৃথিবীতে
অদৃশ্য কালের শত্রু প্রচ্ছন্ন জোয়ারে
অনেক বিপন্ন জীব ক্ষয়িষ্ণু খোঁয়াড়ে
উন্মুখ নিঃশেষে কেড়ে নিতে
দুর্গম বিষণ্ণ শেষ শীতে ।

বীভৎস প্রাণের কোষে কোষে
নিঃশব্দে ধ্বংসের বীজ নির্দিষ্ট আয়ুতে
পশেছে আঁদার রাত্রে প্রত্যেক স্নায়ুতে
গোপনে নক্ষত্র গেছে খসে
আরক্তিম আদিম প্রদোষে ।

দিনের নীলাভ শেষ আলো
জানাল আসন্ন রাত্রি দুর্লক্ষ্য সংকেতে ।
অনেক কাস্তের শব্দ নিঃস্ব ধানেক্ষেতে
সেই রাত্রে হাওয়ায় মিলাল
দিক্প্রান্তে সূর্য চমকাল ।


৬। কবিতা চিরদিনের
এখানে বৃষ্টিমুখর লাজুক গাঁয়ে
এসে থেমে গেছে ব্যস্ত ঘড়ির কাঁটা
সবুজ মাঠেরা পথ দেয় পায়ে পায়ে
পথ নেই তবু এখানে যে পথ হাঁটা ।

জোড়া দীঘি তার পাড়েতে তালের সারি
দূরে বাঁশঝাড়ে আত্মদানের সাড়া
পচা জল আর মশায় অহংকারী
নীরব এখানে অমর কিষাণপাড়া ।

এ গ্রামের পাশে মজা নদী বারো মাস
বর্ষায় আজ বিদ্রোহ বুঝি করে
গোয়ালে পাঠায় ইশারা সবুজ ঘাস
এ গ্রাম নতুন সবুজ ঘাগরা পরে ।

রাত্রি এখানে স্বাগত সান্ধ্য শাঁখে
কিষাণকে ঘরে পাঠায় যে আল পথ
বুড়ো বটতলা পরস্পরকে ডাকে
সন্ধ্যা সেখানে জড়ো করে জনমত ।

দুর্ভিক্ষের আঁচল জড়ানো গায়ে
এ গ্রামের লোক আজো সব কাজ করে
কৃষক বধূরা ঢেঁকিকে নাচায় পায়ে
প্রতি সন্ধ্যায় দীপ জ্বলে ঘরে ঘরে ।

রাত্রি হলেই দাওয়ার অন্ধকারে
ঠাকুমা গল্প শোনায় যে নাতনীকে
কেমন করে সে আকালেতে গতবারে
চলে গেল লোক দিশাহারা দিকে দিকে ।

এখানে সকাল ঘোষিত পাখির গানে
কামার কুমোর তাঁতী তার কাজে জোটে
সারাটা দুপুর ক্ষেতের চাষীরা কানে
একটানা আর বিচিত্র ধ্বনি ওঠে ।

হঠাৎ সেদিন জল আনবার পথে
কৃষক বধূ সে থমকে তাকায় পাশে
ঘোমটা তুলে সে দেখে নেয় কোনোমতে
সবুজ ফসলে সুবর্ণ যুগ আসে ।


৭। কবিতা নিভৃত অনিশ্চিত পৃথিবীতে অরণ্যের ফুল

অনিশ্চিত পৃথিবীতে অরণ্যের ফুল
রচে গেল ভুল
তারা তো জানত যারা পরম ঈশ্বর
তাদের বিভিন্ন নয় স্তর
অনন্তর
তারাই তাদের সৃষ্টিতে
অনর্থক পৃথক দৃষ্টিতে
একই কারুকার্যে নিয়মিত
উত্তপ্ত গলিত
ধাতুদের পরিচয় দিত ।
শেষ অধ্যায় এল অকস্মাৎ ।
তখন প্রমত্ত প্রতিঘাত
শ্রেয় মেনে নিল ইতিহাস
অকল্পেয় পরিহাস
সুদূর দিগন্তকোণে সকরুণ বিলাল নিঃশ্বাস ।

যেখানে হিমের রাজ্য ছিল
যেখানে প্রচ্ছন্ন ছিল পশুর মিছিলও
সেখানেও ধানের মঞ্জরী
প্রাণের উত্তাপে ফোটে, বিচ্ছিন্ন শর্বরী
সূর্য-সহচরী
তাই নিত্যবুভুক্ষিত মন
চিরন্তন
লোভের নিষ্ঠুর হাত বাড়াল চৌদিকে
পৃথিবীকে
একাগ্রতায় নিলো লিখে ।
সহসা প্রকম্পিত সুষুপ্ত সত্তায়
কঠিন আঘাত লাগে সুনিরাপত্তায় ।
ব্যর্থ হল গুপ্ত পরিপাক
বিফল চীৎকার তোলে বুভুক্ষার কাক
পৃথিবী বিস্ময়ে হতবাক ।

৮। কবিতা বৈশম্পায়ন

আকাশের খাপছাড়া ক্রন্দন
নাই আর আষাঢ়ের খেলনা ।
নিত্য যে পাণ্ডুর জড়তা
সথীহারা পথিকের সঞ্চয় ।

রক্তের বুকভরা নিঃশ্বাস
আঁধারের বুকফাটা চীৎকার
এই নিয়ে মেতে আছি আমরা
কাজ নেই হিসাবের খাতাতে ।

মিলাল দিনের কোনো ছায়াতে
পিপাসায় আর কূল পাই না
হারানো স্মৃতির মৃদু গন্ধে
প্রাণ কভু হয় নাকো চঞ্চল ।

মাঝে মাঝে অনাহূত আহ্বান
আনে কই আলেয়ার বিত্ত ?
শহরের জমকালো খবরে
হাজিরা খাতাটা থাকে শূন্য ।

আনমনে জানা পথ চলতে
পাই নাকো মাদকের গন্ধ ।
রাত্রিদিনের দাবা চালেতে
আমাদের মন কেন উষ্ণ ?

শ্মশানঘাটেতে ব' কখনো
দেখি নাই মরীচিকা সহসা
তাই বুঝি চিরকাল আঁধারে
আমরাই দেখি শুধু স্বপ্ন ।

বার বার কায়াহীন ছায়ারে
ধরেছিনু বাহুপাশে জড়িয়ে
তাই আজ গৈরিক মাটিতে
রঙিন বসন করি শুদ্ধ ।

৯। কবিতা নিভৃত বিষণ্ণ রাত প্রসন্ন দিন আনো
বিষণ্ণ রাত প্রসন্ন দিন আনো
আজ মরণের অন্ধ অনিদ্রায়
সে অন্ধতায় সূর্যের আলো হানো,
শ্বেত স্বপ্নের ঘোরে যে মৃতপ্রায় ।

নিভৃত জীবন পরিচর্যায় কাটে
যে দিনের আজ সেখানে প্রবল দ্বন্দ্ব ।
নিরন্ন প্রেম ফেরে নির্জন হাটে
অচল চরণ ললাটের নির্বন্ধ ?
জীবন মরণে প্রাণের গভীরে দোলা
কাল রাতে ছিল নিশীথ কুসুমগন্ধী
আজ সূর্যের আলোয় পথকে ভোলা
মনে হয় ভীরু মনের দুরভিসন্ধি ।


১০। কবিতা কবে

অনেক স্তব্ধ দিনের এপারে চকিত চুতুর্দিক
আজো বেঁচে আছি মৃত্যুতাড়িত আজো বেঁচে আছি ঠিক ।
দুলে ওঠে দিন শপথমুখর কিষাণ শ্রমিকপাড়া
হাজারে হাজারে মাঠে বন্দরে আজকে দিয়েছে সাড়া ।
জ^লে আলো আজ আমাদের হাড়ে জমা হয় বিদুৎ
নিহত দিনের দীর্ঘ শাখায় ফোটে বসন্তদূত ।
মূঢ় ইতিহাস চল্লিশ কোটি সৈন্যের সেনাপতি ।
সংহত দিন রুখবে কে এই একত্রীভূত গতি ?
জানি আমাদের অনেক যুগের সঞ্চিত স্বপ্নেরা
দ্রুত মুকুলিত তোমার দিন ও রাত্রি দিয়েই ঘেরা ।
তাই হে আদিম ক্ষতবিক্ষত জীবনের বিস্ময়
ছড়াও প্লাবন, দুঃসহ দিন আর বিলম্ব নয় ।
সারা পৃথিবীর দুয়ারে মুক্তি এখানে অন্ধকার
এখানে কখন আসন্ন হবে বৈতরণীর পার ?
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১১:১১
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×