বেতন-ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী আজ বেলা ১১টায় রাস্তায় নেমে আসে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। শিক্ষার্থীরা এক সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছে। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাশ বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বিশৃঙ্খলার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি কমিটি জরুরি সভা ডেকে লোকপ্রশাসন ২য় বর্ষের সুজন কান্তি দে নামের এক শিক্ষার্থীকে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার ও ৫ জনকে কারণ দর্শাতে বলেছে।
স¤প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন খাতে বেতন-ফি বৃদ্ধি করে। অনার্সে অধ্যয়নরত অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত বাৎসরিক ভর্তি ফি ১৩৩০ টাকা থেকে ২৪২৫ টাকা, মাস্টার্সে অনাবাসিকদের ২০৩১ টাকা থেকে ২৯২০ টাকা ও আবাসিক ছাত্রদের ২৪৫৫ টাকা ভর্তি ফি বাড়িয়ে ৩৪২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া মান উন্নয়ন ফি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫০ টাকা করা হয়। এভাবে প্রতিটি খাতে ফি বাড়ানো হয়। এই বর্ধিত বেতন-ফি প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি ও হল থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী পৃথক পৃথক মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে। এ সময় তারা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এদিকে মিছিল চলাকালে এক শিক্ষার্থীকে সহকারী প্রক্টর চন্দন কুমার পোদ্দার চড়-থাপ্পড় মারেন বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে। আন্দোলনকারীরা এজন্যে তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে আহ্বান জানায়। তবে সংশ্লিষ্ট সহকারী প্রক্টর এ ঘটনা অস্বীকার করেন।
বিক্ষোভকারীদের দমন করতে বেলা ১২টার দিকে প্রশাসন অতিরিক্ত পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ডেকে নিয়ে আসে। পুলিশ দেখে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা পুলিশকে ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে অনুরোধ জানায়। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ পিছু হটে। প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে দেয়া বক্তব্যে বক্তারা বলেন, শিক্ষা রাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক অধিকার। বেতন-ফি বাড়ানো প্রশাসনের স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত। তারা বলেন, আজকের (সোমবার) মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে লিখিতভাবে বর্ধিত বেতন-ফি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে হবে। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় করা হবে। এতে বক্তব্য রাখেন ছাত্র ফ্রন্ট সভাপতি প্রবাল মজুমদার, ছাত্র ইউনিয়ন তছলিম উদ্দিন, ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি দীপংকর ঘোষ প্রমূখ।
এদিকে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি দফায় দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টার সাথে শিক্ষার্থীদের আলোচনা চলতে থাকে। তারা উভয়েই শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের মৌখিক আশ্বাস দিলেও শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে এসে ভিসির লিখিত বক্তব্য দাবি করে। কিন্তু প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় ভিসি তাঁর অফিসে অবস্থান করলেও নিচে নেমে আসেন নি।এভাবে দুপুর ২টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলে। তখন পর্যন্ত দাবি না মানায় আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে ক্লাস বর্জন ও অগ্রণী ব্যাংকের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা অবরোধের ঘোষণা দেয়।