আজ আল্লাহর কাছে আমার জন্য কিছুই চাই না আমি..ভাববেন না আমি কোন মহামানবী..হ্যাঁ আমিও চাই তবে অন্য কারো জন্য..
তিনি আমার জন্মদাতা,আমার প্রিয় বাবা..
ভাবছেন এত ভণিতার কি আছে?আছে..কারণটায় পরে আসছি..আগে আমার বাবার সম্পর্কে কিছু বলি..
আমার স্কুলশিক্ষক বাবার ৫সন্তানের মাঝে আমি ৫ম..ছোট থেকেই দেখতাম আমার মানুষ গড়ার কারিগর বাবা আমার গরু গাধা ঘোড়া পিটিয়ে মানুষ করছেন..আমাদের ৫টিকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার স্বপ্নে বিভোর হয়ে রক্ত পানি করছেন..মাত্র ৫বছর বয়সে এতিম হওয়া মানুষটা অমানুষিক কষ্ট করে আজ এখানে..হয়ত বলবেন একটি বেসরকারি হাইস্কুল শিক্ষক এ আর এমন কি..যে মানুষটাকে অতটুকুন বয়সে পৈত্রিক সম্পত্তি সামলাতে মাঠে কাজ করতে হয়েছে সারাদিনে একটা পেঁয়াজ আর পান্তা খেয়ে,১৬বছর বয়সে মেট্রিক পাশ করেই যাকে শিক্ষকতায় ঢুকতে হয়েছিল তার জন্য পাকিস্তান আমলে বি.এ বি.এড করাটা কষ্টকরই বটে..তবুও বাবা করেছিলেন..হয়তো পরে অনেক ভাল চাকরি করতে পারতেন,করেননি..করেননি কারণ বদলির সরকারি চাকরি করে আমাদের থেকে,দাদি থেকে দূরে থাকতে চাননি,তার দুটি বোন যেন কারণে অকারণে ছুটে আসার মত ছাঁয়া পায় ।
ভাবছেন আমার দাদি কেন কিছু করল না?জমিদার বাড়ির মেয়ে আর গ্রামের প্রধান বনেদী পরিবারের বউ আমার দাদিকে তত্কালীন সমাজ ঘর থেকে বেরুতে দেয়নি..তবুও তিনি যা করেছেন তার জন্য তাকে স্যালুট দিতে ইচ্ছে করে..সে কাহিনী না হয় আরেকদিন বলব..
ফিরে আসি আমার বাবার কথায়..ছোট থেকেই আব্বুকে যত রাগী দেখেছি তাতে উনাকে খুবই ভয় পাওয়ার কথা..কিন্তু আব্বুর সাথে সবসময় ঝগড়াই করতাম আমি..(যে ঝগড়া আজও চলছে)..বন্ধুর মত ব্যবহার আমাদের মাঝে..
জীবনে চোখ মেলার পর থেকেই দেখতাম চাওয়ার আগেই সব হাজির..কোনদিন বাবাকে দেখিনি নিজের জন্য কিছু কিনতে..জিজ্ঞেস করেছি তোমার শৈশব কৈশোর তো ভাগ্যের কাছে পরাজিত ছিল..বাকিটা কেন আমাদের পেছনে এভাবে উড়িয়ে দিলে?বাবা উত্তরে শুধুই হাসত..
উদয় থেকে রাত ১১টা নাগাদ ছাত্র পড়াতো বাবা..তখন বুঝিনি বাবা তুমি কতটা সৎ মানুষ..আজ বুঝি কতখানি রক্তঝরা ঘামের বিনিময়ে আজ আমরা ভাইবোনেরা সুপ্রতিষ্ঠিত..
সারাদিন শেষে যখন খাটুনির পর একটু অবসর পেতো রাতে..এসে দেখতো আমাদের কার কি লাগবে..কিভাবে ঘুমাই,মশারি কাথা ঠিক করে দিতো..জ্বর এলে সারারাত পাশে বসে থাকতো..মাঝরাতে আইসক্রিম এর আবদার কিভাবে মিটাতো বাবাই জানে..অথবা আমার গভীর রাতে ঘুম ভেঙে নাস্তার অভ্যাসটা আব্বু কিভাবে টের পেয়েছিল জানিনা..কত রাত বাবা মেয়ে মিলে নাস্তা আর গল্পে কাটিয়েছি শেষ নেই..
এত কিছুর পরও বাবা তোমার জন্য তোমার অযোগ্য সন্তানেরা কিছুই করতে পারেনি..বড় ভাইয়াকে খুব হিংসা হয় আমার..বড় ভাইয়া যেদিন ডাক্তার হল সেদিন আমার বাবা অবোধ শিশুর মত কেঁদেছিল..গর্বের কান্না..আমার বাবাকে খুব আবার গর্বের কান্না কাঁদাতে ইচ্ছে হয়..জানিনা পারব কিনা..
আজ তাই আল্লাহর কাছে এইটুকুই চাই যেন আমার বাবা সুস্থ্য থাকেন..সুখে থাকেন..আর আমি একবার আবার তাকে সুখের কান্না কাঁদাতে পারি..আমীন
আলোচিত ব্লগ
ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)
ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন
মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল
হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'
নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ
আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা
গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন