বর্তমান প্রযুক্তির যুগে কবিতা প্রকাশ করা খুবই সহজ। পূর্ববর্তী সময়ে, আপনার কবিতার পাণ্ডুলিপিটি ভাল মানের এবং নির্ভুল না হলে প্রকাশনা দ্বারা সহজে গৃহীত হত না। এমনকি কবিতার পাণ্ডুলিপিও অন্য কবিরা সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানে তিনি তার কবিতা ফেসবুক ও ব্লগে প্রকাশ করেন। অনেক বিখ্যাত পত্রিকাকে তাদের কবিতা ছাপাতে দেখেছি।তবে তাদের মধ্যে এমন কিছু সংখ্যা রয়েছে যাদের লেখার মান এবং ছন্দ মাত্রা বজায় রাখে।বর্তমানে পত্রিকার সম্পাদক নিজেই জানে না ছন্দ কাকে বলে কবিতার ভাব সাব নাদুস নাদুস দেখলে হ্যাঁ এটা কবিতা দে ছাপায়া, হয়ে যান লেখক তো পুরাই কবি।প্রকাশনা যারা বই ছাপায় নতুন প্রকাশনা মালিকানায় নিজেই সম্পাদনা করে নিজেই জানে না কবিতার ছন্দ ।ব্যবসা বই বিক্রি করা ইনকাম মুনাফা করা হলো কিছু বই প্রকাশনার কাজ।
বর্তমানে অনেকে বলে কাকের চেয়ে কবি বেশি কথা কি আসলে সত্যি?
কেউ কেউ বলে যে কবিতা লেখা সস্তা এবং সবচেয়ে সহজ কাজ । আসলেই কি সহজ? এত সহজ নয়।
কবিতা যারা লিখে তাদের একচোখে তাকায় এক শ্রেণি ।
এক সময় রাজা বাদশা কবিদের রাজ প্রসাদে রাখতেন বেতন দিতেন। কবিদের কবিতা শুনে রাজা মনকে শান্ত করতেন।
মাইকেল মধুসূদন দত্তঃ তিনি বাংলা ভাষার সনেট আবিষ্কার করেছেন, তিনি অমিত্রক্ষার ছন্দ আবিষ্কার করেন যেটার শেষে অন্তমিল থাকে না। আমরা অনেক বাঙালি জানি যে শেষের খাই সাথে দাই মিলে ছন্দ হয় আসলেই তাই না। তিনি দুটি দিক আবিস্কার করতে চেয়েছেন। সফল হয়েছেন। দুটি অক্ষরবৃত্তের শাখা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঃ রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ৫২ টি কাব্য ভিতরে একটি মাত্র গদ্য ছন্দের লেখা। পুনশ্চ হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গদ্য ছন্দে লেখা একটি বাংলা কাব্যগ্রন্থ। এটি ১৯৩২ খ্রীস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
তাহলে আপনি কেন ৫১ টি বাদ দিয়ে মানলে হবে না। কবিতা জন্ম রবীন্দ্রনাথ দেয়নি আরো কবি আাছে তাদের কবিতা নিয়ম থেকে লিখতে হবে। তাই শুধু গদ্য ছন্দ মেনে লিখে নানা হতাশায় ভুগেন। আর নিজের অজ্ঞতা দেখে অন্যের নিয়ম ভিত্তিক লেখাকে কলুষিত করার চেষ্টা করনে। আমি কবি তপন বাগচীকে একবার জিজ্ঞাসা করছি । কি সমার্থক শব্দ দুইটা এক কবিতায় ব্যবহার করা যাবে কিনা, যেমন গগন বা আকাশ। সে উত্তর দিলো, এখন এর যা ইচ্ছা লেখেও যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম।আপনি কিন্তুু শুধু রবীন্দ্রনাথর একটি কাব্যের উত্তরসূরি এটা দুঃখজনক। গদ্য ছন্দ অক্ষরবৃত্তের শাখা। আপনি যদি অক্ষরবৃত্তকে না জানেন সেটা আরো দুঃখজনক।
বাকি দুই ছন্দ থেকে কোন শাখা আর বের হবেনা। তবে প্রাচীন যুগে দুই ছন্দ ছিল, যেটা মাত্রাবৃত্তা এবং অক্ষরবৃত্ত।
আধুনিক স্বরবৃত্ত তৈরি হয়েছে। এই দলিল চিরস্থায়ী। অক্ষরবৃত্তের থেকে শাখা আরো বের হতে পারে।
কয়টি ইট একত্রে রাখলে যেমন সুন্দর দালান হয়ে যায়না তাহলে এত মাপকাঠি দরকার ছিল না। দরকার হতো না কোন ইট কিভাবে বসে একটা বিল্ডিং হবে দেখতে সুন্দর। ইন্জিনিয়ার দরকার হতো না ইটের উপর ইট বসিয়ে খালি রাখলেই একটি সুন্দর বিল্ডিং হয়ে যেতো। তেমনি কত শব্দ একত্রে অলংকার দিলে কবিতা হয় না।
সঠিক মাপ না কেটে একটি বিল্ডিং বানান সে ঘরে কেউ থাকবে না। বা দালান না হলে সেটা দালানে থাকে না।
একটি রাজমিস্ত্রি একটি বিল্ডিং এর এক সুতো ভুল করলে ভবনের দরজার জানলার দিক পরিবর্তন হয়ে আকাজো ভবন হতে পার।. কত শব্দ জেনে যা খুশি লিখবেন, কবিতা হয়ে যাবে, ব্যাপারটা কি তাই নয়?আরেকটা উদাহরণ দেই: ছোটবেলায় আপনি এক লাইনে দাঁড়িয়ে জাতীয় সঙ্গীত পড়ছেন। কিন্তু পড়তে গেলেই ভালো লাগে নাকি লাইন বাঁকা হয়ে যায়, তখন ভালো লাগে?
অথবা নৃত্য দিলে একি নৃত্য তাল ভালো লাগে নাকি এলোমেলো রকম নাচ কেউ পছন্দ করে । কবিতা লিখছেন কোথায় ২ মাত্রা কোথায় ৪ কোথায় ৭ কোথায় ৫ একি কবিতায় সেটা কেমন হলেো। পাঠক এত হিসেব নিকাশ জানে না তবে শোনা মাত্রা বিশ্বাস করে। কবিতা লেখা কি সহজ? আসুন কিছু গদ্য ছন্দ নিয়ে আলোচনা করা হোকঃ
তবে গদ্য ছন্দ কবিতা লেখেনা তাই না ,
শামুসুর রহমানে এর গদ্য কবিতাঃ
তোমাকে পাওয়ার জন্য/ হে স্বাধীনতা/ আর কতকাল/ ভাসতে হবে/ রক্ত গঙ্গায়
আর কতবার/ দেখেতে হবে খন্ডবাহদন/
এটা যে গদ্য কবিতা তার ছন্দ আছে যেটার হিসেব নাই।
তবু থামার মাত্রা আছে, মাত্রার ভাগ আছে যদি কোথায় মাপকাটি এক নয়।
তাহলে গদ্য ছন্দ লিখতে হলে জানতে হবে আমার।
আমি কবিতা নিয়ম কানুন মোটামুটি জানি কিন্তু
কবিতা লেখার চেষ্টা করি, ভালো একটি কবিতা লেখা হয়ে উঠেনি কবিতা লেখা এত সহজ নয়