
বর্তমান বাস্তবতায় স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, ওআইসি (Organization of Islamic Cooperation) তার মূল উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন সংকটে এ সংস্থার কার্যকর ভূমিকা ছিল না বললেই চলে। ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইরান ,ইয়েমেন কিংবা রোহিঙ্গা ইস্যুতে ওআইসি কেবল বিবৃতি দিয়েছে, কিন্তু কার্যত কোনো দৃশ্যমান সহায়তা বা অবস্থান নিতে পারেনি।
মূলত, মুসলিম বিশ্ব আজ ঐক্যবদ্ধ নয়। একে অপরের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব নেই। রাজনৈতিক স্বার্থ, আঞ্চলিক বিভাজন এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্ব মুসলিম দেশগুলোকে পৃথক রেখেছে। এই বাস্তবতায় প্রশ্ন উঠে: ওআইসি কাদের জন্য? কীসের জন্য?
তাই, এখন সময় এসেছে নতুনভাবে চিন্তা করার।
আমার প্রস্তাব হলো— ওআইসি-র নাম ও কাঠামো পরিবর্তন করে একটি মানবতাকেন্দ্রিক বৈশ্বিক সংস্থা গঠন করা হোক, যার নাম হতে পারে "মানবতার ঐক্য সংস্থা" (Unity of Humanity Organization)।
এই সংস্থার সদস্য হতে পারবে বিশ্বের সব শক্তিধর ও উদারনৈতিক রাষ্ট্র, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে।
এই নতুন সংস্থার বৈশিষ্ট্য হবে:
ধর্ম নয়, মানবতা হবে মূল ভিত্তি।
প্রত্যেক জাতি ও ধর্ম নিজেদের সংস্কৃতি ও আচার মানবে স্বাধীনভাবে।
ধর্মীয় স্বাধীনতা থাকবে, তবে ধর্ম রাজনীতির হাতিয়ার হবে না।
যে কেউ ধর্মীয় নিদর্শন অবমাননা করলে, সে নিজ দেশের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় শাস্তির আওতায় আসবে।
সকল ধর্মের প্রতি সমান শ্রদ্ধা নিশ্চিত করা হবে।
ওআইসি এখন কেবল একটি সাইনবোর্ড। এটি মুসলিমদের সংকটে পাশে দাঁড়ায় না, বরং রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানে থাকে। এই ধর্মকেন্দ্রিক বৈষম্য বিশ্বের জন্য হুমকি। সময় এসেছে— ধর্মীয় বিভাজনের পরিবর্তে মানবতার ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী ও কার্যকর বিশ্বসংস্থা গড়ে তোলার।
এতে করে মুসলিম-ইহুদি বা হিন্দুদের মধ্যকার ধর্মীয় দ্বন্দ্ব হ্রাস পাবে। বিশ্বজুড়ে সহনশীলতা ও সহাবস্থানের পরিবেশ গড়ে উঠবে। কারণ, ধর্ম ব্যক্তিগত বিশ্বাস— রাষ্ট্র পরিচালনার ভিত্তি হওয়া উচিত মানবতা, ন্যায়বিচার এবং সমতা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



