somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রেসিস্ট আমি

২১ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রেসিস্ট হওয়ার সকল দায়ভার হোয়াইট কালারের মানব-মানবীরাই বহন করে আসছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে তারা আমাদের কাছে নস্যি। আমাদের মধ্যে নিজেদের গাত্রবর্ন নিয়ে যতটা হীনমন্যতা বা সুপিরিয়র ভাবার প্রবনতা দেখা যায়, এটা হোয়াইট কালারের মানব মানবীদের মধ্যে বাস্তবে খুব কমই দেখা যায়।
রেসিজম এর সংজ্ঞা অনুযায়ী এটা শুধুই ইনথিনিটি উপর ডিপেন্ড করছে না। এখানে কালচারাল সোস্যাল সবকিছুই মোটামুটি ভাবে বেইসড করছে। সেই হিসেবে একজন বাংলাদেশে হিসেবে মোটামুটি শিউর থাকতে পারি, আমরা প্রত্যেকেই কোন কোনভাবে রেসিস্ট।
কিন্তু ব্যাপারগুলো নিজেদের চোখে ধরা পড়তে চায় না। শুধু মাত্র হাতেগুনা কয়েকটা ফ্রেন্ডকে বাদ দিলে আমি কোন বাংলাদেশিকে দেখিনি যে নিজেকে সুপিরিয়র ভাবে না বা ভাবতে পছন্দ করে না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা, সে অন্য কাউকে তার থেকে সুপিরিয়র ভাবছে। সম্ভবত এটাকে হীনমন্যতা বলে।
একজন মূর্খ মানুষ হওয়ার সুবাদে আমার অনেক কিছু জানা নাই। অনেকে কঠিন কঠিন টপিক নিয়ে ডিসকাস করতে গেলে আমি এলোমেলো করে ফেলি। সম্ভবত রেসিজম জিনিসটা সেই রকমই একটা টপিক।
রেসিজম এর মেইন বেইসড টা হচ্ছে সম্ভবত আদর্শগত। যদিও আমরা এটাকে শুধু গাত্রবর্নে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছি। এটা অবশ্য নিজেদের সুবিধার্থেই। এটা এক ধরনের সিম্প্যাথি আদায়ের চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয় অথবা আমাদের জিনগত প্রভলেম। কাউকে ব্লেম করতে আমরা মোটামুটিভাবে পছন্দ করি, সেজন্যে ইনথিনিটি একটা ভাল ইস্যু হতে পারে।

নিজেদেরকে আমরা যথেষ্ট শুদ্ধ সুন্দর পবিত্র মনে করি। কোনভাবেই অন্তত রেসিস্ট নয়। সাউথ এশিয়ায় কালো হয়ে জন্মানো মেয়েরাই জানে রেসিস্ট আসলে কি জিনিস।
আর বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে সাদা হওয়ার প্রানপন চেষ্টা আমাদের হীনমন্যতার প্রতিফলন। স্মার্ট সুন্দর মানেই দেখতে ফর্সা হওয়া এরকম মনস্তাত্তিক ধারনার বীজ ছোটবেলা থেকেই আমাদের মনে গেথে যায়। এর থেকে বের হয়ে আসে প্রায় অসম্ভবই বলা চলে। মহামানবদের কথা বাদই দিলাম।
মানুষের সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার গুলা খুবই অদ্ভূত। আমি ইউরোপে আসার আগ পর্যন্ত কোন কৃষ্ণাঙ্গের সাথে পরিচিত ছিলাম না। তারপরও তাদের ব্যাপারে একটা মনস্তত্ত কাজ করত। এটা অনেকটা নেগেটিভ ধরনের। যার পেছনে কোন লজিক্যাল ব্যাখা নেই।
কৃষ্ণাঙ্গ মানেই অনেক শক্তিশালী কদাকার এইজাতীয় কিছু মনে আসত কোন কারন ছাড়াই। আর একটা অদ্ভুত ধারনা ছিল, তাদের কার্যক্ষমতা আমাদের থেকে অনেক বেশি। বৈজ্ঞানিক ভাবে কোনটা সত্যি আমি জানিনা, বাস্তব জীবনে কার্যক্ষমতার বিষয়টা কোনভাবেই অতিরিক্ত মনে হয় নি। বরঞ্ছ তাদের অনেকেই আপনার আমার মত ফাঁকিবাজ এবং ফ্রেন্ডলি।
এই পর্যন্ত কতজন কৃষ্ণাঙ্গের সাথে আমার দেখা হয়েছে এটা কাউন্ট করা খুব কঠিন। তবে এইটুকু নিশ্চিতভাবে বলতে পারে, তাদের প্রত্যেকেই অনেক ফ্রেন্ডলি এবং হেল্পফুল ছিল।
মারিয়া নামে ইয়াং কৃষ্ণাঙ্গ ভদ্রমহিলা আমার সুপারভাইজার ছিল। কাজের ফাঁকে মাঝে মধ্যে আমরা টুকটাক গল্প করতাম। কোন কারনে সে জানাল, শী ইজ এনগেজড। তারপর যথারীতি এটাকে নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে তামাশা জারি রাখলাম। "মারিয়া হ্যাভ বয়ফ্রেন্ড অলসো" এটা আমাদের কাছে আজগুবি ব্যাপার মনে হল। সবাই একই রকম বিহেভ করবে না। সবাই অবশ্যই আমার মত অসভ্য হবে না। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কেউ রেসিস্ট বলে না।

আমি একটা কাজের জন্য এপ্লিকেশন করলাম। সেটা যেকোন ধরনের কাজই হতে পারে। আর একজন ফেয়ার পাবলিকও এপ্লিকেশন করল। কাজটা আমি পেয়ে গেলে, ইট'স ফাইন। আর যদি কোন কারনে সেটা ফেয়ার পাবলিক এর ফেভারে যায়, সেক্ষেত্রে আমার ফ্রেন্ড সার্কেলের গল্প হবে, " হোয়াইট পিপল আর রেসিস্ট। শুধুমাত্র ব্রাউন হওয়ার কারনেই জবটা পাই নি। এর সাথে আরো মশলা তো আছেই।"
প্রকৃতপক্ষে তারা এটা সম্ভবত করে না।

কারনটা যদি সত্যিও হয়, এজন্যকে তাদেরকে রেসিস্ট বলা যায়!! আমি সব সময় আমার কাজিনকেই তো প্রাধান্য দিব, তারপর দূর-আত্নীয়।
কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে আমরা সেটা রেসিজম এর পর্যায়ে নিয়ে যাই।
কালো হওয়ার কারনে নিচু এবং হোয়াইট হওয়ার কারনে সুপিরিয়র ভাবার প্রবনতা আমাদের মনস্তাত্তিক দুর্বলতা ছাড়া আর কিছুই নয়। মানুষকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়ন করার প্রবনতা আমাদের মধ্যে না থাকায় এমনটা হতে পারে সম্ভবত। এইজন্যেই যখন একজন কালো ছেলে ফর্সা মেয়ে নিয়ে ঘুরে, আমরা কানাকানি করি আর নিজেদেরকে বেটার মনে করি। শুধুমাত্র ফর্সা গাত্রবর্ন দিয়েই নিজেদের যোগ্যতা নিরুপন করি এবং আফসোস করি, "আমারে কি দেখে নাই"। এই আফসোসটাই প্রকৃতপক্ষে আপনার বা আমার যোগ্যতা।

সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৫৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×