somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘপঞ্জিকা - সিনেমাকথন ২

২০ শে মে, ২০০৯ সকাল ৮:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সামনে ছুটি তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি হিসেবে আজ খানা দশেক মুভি নিয়ে এলাম।

আর প্রথমখানা দেখেই অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ না করেই উঠে পরলাম। কি ছিল মুভিটাতে? এক লেখক যে নিরিবিলিতে লেখা শেষ করবে বলে তার শৈশবের বাড়িতে ফিরে আসে। কিন্তু কিছুতেই সে কিছু লিখতে পারছে না। এদিকে তার বাড়ির কেয়ারটেকার তাকে সারক্ষণি জ্বালাতন করছে একটা নাশপাতি গাছের কোনো ফল না হওয়াতে। বাগানের আর সব গাছ ফল দিল কিন্তু এই একটা গাছ এবার কোনো ফল দিচ্ছে না। এ যে গাছটার গোয়ার্তুমি এই বলে কেয়ারটেকার বলে যেতে থাকে যে গাছটার শাস্তির ব্যাবস্থা করা লাগবে নইলে ওটার দেখাদেখি বাকীগুলোও ফল দেয়া বন্ধ করে দিবে।

গাছকে শাস্তি!! ভ্রু কুঁচকে উঠলো। বিদ্যুৎচমকে মনে পরলো আমির খানের "তারে জামিন পার" মুভিটে এমনি একটা লাইন ছিল, "সলোমন দ্বীপে যখন দ্বীপের অধিবাসীরা কোন গাছকে কেটে ফেলতে চায় তখন গাছটার সামনে যেয়ে তারা ইচ্ছেমতন গাছটাকে অভিসম্পাত করতে থাকে আর এতেই গাছটা মরে যায়"। শাস্তির কথা শুনে লেখকেরো প্রতিক্রিয়া ছিল দেখার মতো। এমন তুচ্ছ একটা বিষয়ে তাকে বিরক্ত করার জন্য সে কেয়ারটেকারকে কিছুটা ভৎসনা ও করে। কিন্তু কেয়ারটেকারকে বিদেয় করে দেওয়ার পরেও লেখক কিছুতেই কিছু লিখতে পারছেনা। সে ভাবে প্রতি একঘন্টায় যদি সে এক পৃষ্টাও লিখে তাইলে দিন শেষে আট ঘন্টা কাজ করলে আটপৃষ্টা লিখা হয়। কিন্তু লিখবেটা কি নিয়ে?

কেয়ারটেকার এদিকে গ্রামের মোড়লকে নিয়ে আসে। দুজনে মিলে লেখককে বুঝাতে থাকে যে গাছটার এমন গোয়ার্তুমি চলতে দেয়া যায় না। একটা রিচুয়ালের ব্যাবস্থা না করলেই নয়। মোড়ল তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে থাকে এই নাশপতি গাছটা লেখকের কি প্রিয়। ছোটোবেলায় লেখক তার "M" এর সাথে এ গাছে চড়ে কত না মজা করেছে। "M" হচ্ছে লেখকের চাইতে দু/তিন বছরের বড় তার এক কাজিন এবং তার হারানো ভালবাসা। মুভির এই পর্যায়ে লেখক স্মৃতিচারণ করতে করতে তার শৈশবে হারিয়ে যায়। মূলত এই স্মৃতিচারণ টুকুই ছবিটার প্রাণ। "M" তার সমস্ত সত্ত্বা জুড়ে এতটাই জড়িয়ে থাকে যে তার জন্য সে দিনে হাজারটা কাজ করে দিতে পারে। তাদের দুজনের শৈশবের দৃশ্যগুলো এতোটাই চিত্তকে আবিষ্ট করে রাখে যে তাদের বিচ্ছেদকালে বুকের ভেতরটা ব্যাথায় টন্‌টন্‌ করে উঠে। তখন কি আমার নিজের শৈশবের কোনো ঘটনা মনে পড়ে গিয়ে থাকবে। হতে পারে কারণ তাদের দুজনের বিচ্ছেদ দৃশ্য এবং এর একটু পরে গাছকে বকুনি দেওয়ার দৃশ্যগুলো দেখে চোখের জল আর সংবরণ করতে পারলাম না।

মুভিটি যারা দেখতে চান তাদের জন্যঃ

ছবির নামঃ The Pear Tree
ভাষাঃ ফারসি
পরিচালকঃ দারিউশ মেহেরজুই



The Pear Tree

আমার কিছু ভালোলাগা মুভির তালিকা
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১১ ভোর ৬:৪৮
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×