somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হতাশ দা'র জীবন চরিত :P

১০ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ১১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের ভার্সিটির সুমন ভাই। ওনাকে আমরা ডাকি হতাশ দা'। এই ডাকের পেছনে কারনটা হল তিনি সবকিছুর উপর হতাশ, দেশের উপর, জনগনের উপর সমগ্র বিশ্বের ইসলাম ধর্মালম্বীদের উপর। এবং উল্লেখ্য যে তিনি হতাশ হলেই গালি দেন। ইনফ্যাক্ট গালি ওনার মুখের বুলির মত:P। তার সাথে দেখা হলেই তিনি তার হতাশার কথা শোনাতে থাকেন। যেমন সপ্তাহখানেক আগে তার সাথে টি এস সি তে দেখা হল। উনি আমাকে ডেকে কথা বলা শুরু করলেন। হঠাৎ কথার প্রসঙ্গে বললেন "আমি বুঝিনা এই দেশটা ক্যান ভারত থেইকা আলাদা হইল? ভারত ৭১' এ পশ্চিম পাকিস্তানরে জবাই করা মুরগীর পাখনার মত ফালাই দিয়া, মাংস ওয়ালা বাংলাদেশরে নিজেদের কইরা নিল না ক্যান!:-/ ভারতের মায়েরে............(এর মধ্যে জানের জান ভারতরে গালি দেয়া শেষB-))। আমি মনে মনে বললাম "লাত্থায়া তুমারে আন্দামানে পাঠামু হারামজাদাX(" কিন্তু মুখে বলতে পারলাম না। তার মুখের উপর কিছু বলে তার এটোমবোমার মত গালি খেয়ে সহ্য করা আর এভারেষ্টে উঠে নাচানাচি করা সমান কথা:P আমি বাসা থেকে ৫০গজ দূরে কাঁচাবাজারে হেঁটে যাইতে পারিনা, এভারেষ্টে কেমনে উঠতাম :(? তাই "বোবার শত্রু নাই" নীতি অনুসরন করে চুপই থাকলাম।

যাকগে এসব কথা। যে ঘটনা বলতে এসেছি তাই বলি। সুমন ভাই আবার খুব সামাজিক জীব, মানে সমাজসেবী। তাই অনেকেই তাকে চেনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিব্রিটি তিনি। আমাদের এক সমাজসেবামূলক প্রোগ্রামে তাকে অতিথি হিসেবে নিমন্ত্রন করা হল। তার সাক্ষাতকারের দায়িত্বটা দেয়া হল আমাকে:((। যথারিতী স্টেইজে আসলেন তিনি। ফরমালিটি করে আমি প্রথম প্রশ্ন করলাম...

আমি: কেমন আছেন সুমন ভাই?

হতাশ দা': এই আছি আর কি! পাবলিক কি আর ভালো থাকতে দেয়? শালার পাবলিকের মায়েরে বাপ! ওগোরে..............
আমি প্রমাদ গুনলাম। চট জলদি প্রসঙ্গ পাল্টে বললাম

আমি: আপনার ছোটবেলা নিয়ে আমাদের কিছু বলুন

হতাশ দা': সেখানেও কোন আশা নাই রে বইন। আমার যখন জন্ম হয় সবে ধাত্রী মাথাটা বাইরে টেনে বের করবে, তখন আমি টের পাইলাম মা*ী আমার কান ধইরা টানে। অমনি মেজাজটা গেল খারাপ হইয়া। আইজকা ২৮ বছর বয়সেও সেই মেজাজ আমার ঠিক হয় নাই।
আমি থামাতে চাইলাম ওনাকে, পারলাম না। শুধু বললাম

আমি: এভাবে গালি...........

হতাশ দা': আরে গালি বলছো ক্যান? শুনোনাই, একের গালি অন্যের বুলি? হ্যা যা কইতেছিলাম। একদিন ঘুমায় আছি। এইটাও ছোটবেলায়। হৈ চৈ এ ঘুম ভাইঙ্গা গেল। দেখি পাল পাল লোক বাড়ির উঠোনে দুলে দুলে আল্লাহ আল্লাহ করতেছে। (আমি বুঝলাম উনি মিলাদের কথা বলছেন)। আশে পাশে যারেই দেখি সেই কথায় কথায় কয় "হায় আল্লাহ, ও আল্লাহ"। আমি তো মহা বিরক্ত, সাথে মেজাজ ও খারাপ, কাঁচা ঘুমটা ভাঙ্গাইলো!

আমি শুকনা মুখে বললাম" সেই মেজাজ এখনও ঠান্ডা হয়নাই!"

হতাশ দা': হ্যা ঠিক কইছ। তারপর একটু বড় হলাম। একদিন দেখি এক হুজুর বাড়িতে ছুরি নিয়ে হাজির। আমি মনে মনে কইলাম "আইজকা তো কোরবানীর ঈদ না, হুজুর ছুরি নিয়া আইছে ক্যান?"! পরে দেখি আমারে গোসল করায়া চুল আচড়ায়ে তার সামনে বসানো হইল। উরররররে সে কি ব্যাথাআআআআ!!! কতদিন আমি হাঁটতে পারিনাই, প্যান্ট না পইরা লুঙ্গী পরতে হইছে। আমারে সক্কলে বুঝাইল "মুসলমান পোলাগো এইডা আল্লাহর খুশির জইন্য করা লাগে"। সাথে সাথে আল্লাহ মুসলমান এইগুলার উপর আমার এমুন রাগ হইল যে মাথায় রক্ত উইঠা গেলX(

আমি আবার বললাম " সেই রক্ত আজও নীচে নামেনাই তাই না?

হতাশ দা': ঠিকই বলছো। তুমি বড়ই বুদ্ধিমতি।

আমি: ইয়ে মানে সুমন ভাই, আপনার মাথার রক্ত নীচে নামানোর জন্য এনজিওপ্লাস্টির মত কিছু করা যায়না? আপনার গালি শুনলে অনেকের হার্টবিট মিস করে। :(

ব্যাপক চিন্তায় পড়ে গেলেন উনি। বললেন " তাই নাকি? তাইলে তো চিন্তার বিষয়!!"" কিছুক্ষন হতাশায় চুপ করে থেকে তিনি বলে উঠলেন " শালার মাদার** হার্টবিটের মায়েরে বাপ!""""
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১১ সকাল ১১:৫৬
৩৭টি মন্তব্য ৩৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×