~কলকাতার নিতেন'দা(রম্য)~
আমাদের পাড়ায় কলকাতা থেকে নতুন এক দাদা আসছে, নাম নিতেন। আমাদের পাড়ায় সবাই নিতেন'দা বলে ডাকে। এই দাদা নাকি আবার ফুটবল খুব ভাল খেলে। তাই দাদার খাতির যত্ন খুব বেশি। কারন প্রতি বছর পশ্চিমপাড়া বনাম পূর্ব পাড়ায় আমাদের এইখানে ফুটবল খেলা হয়। আর আমরা পশ্চিমপাড়া সবসময় গো'হারা হারি।
এইবার খেলার চারদিন আগেই নিতেন নামে যে কলকাতা থেকে খেলতে এসেছে সে আবার আমাদের পাড়ার সতীস'দার জেঠাত ভাই। সতীস'দাই বলেছে যে নিতেন কলকাতা ক্লাবের গোলকিপার। সে গোলপোষ্টে দাড়ালে কেউ আর ঐ গোলপোষ্টে দিয়ে গোল ডুকাতে পারেনা। তাকে দেখে অবশ্য মনে হয় সে গোলকিপার, লম্বা ৬.৫ফুট, আর ওজন মাশাল্লা দিলে ১২০কেজি ত হবেই। আমারা ত তাকে পেয়ে একেবারে হাতে চাঁদ পেয়েছি। পাড়ায় উৎসব শুরু হয়ে গেল। এই বার আমাদের কে হারায়। পাড়ায় উৎসবে বড়রা সবাই টাকা পয়সা দিতে লাগল আর আমরা সগর্বে প্রচার করতে লাগলাম নিতেন'দার কাহীনি। এই তিনি কলকাতায় টিমে বেষ্ট গোলকিপার আর তিনি সামনের শীতে জাতীয় দলে যোগ দিবেন, তিনি শট মেরে অনেক খেলোয়ারকে কুপোকাত করেছেন এইসব আর কি।
আর তিনি একমাএ আমাদের ম্যাচ খেলার জন্য তার মূল্যবান সময় নষ্ট করে এসেছেন। এবার আসুক পূর্ব পাড়া আমাদের সাথে খেলতে ( দেখি বেটাদের সাহস কত। আমাদের এই প্রচারনার ফলে পূর্ব পাড়ার লোকেরা ভয় পেতে লাগল। তাদের কে আর বাজারে খুব একটা ফুটবল নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়না। অন্যদের কাছে শুনতেছি তারা নাকি তাদের আগের খেলোয়ার দিয়ে খেলাতে ভয় পাচ্ছে। তারাও খেলোয়ার খুজছে। এই খবর শুনে শএু শিবিরে ভয় ছড়াতে পেরে আমরা ত মহা আনন্দে আত্নহারা। বুক ফুলিয়ে পশ্চিমপাড়ার লোকজন হাটতে লাগল আর নিতেন'দার প্রসংশা আর বীরত্বের কাহিনী বলতে লাগল। আর যাকে নিয়ে আমাদের পাড়ায় এত গল্প সে নিতেন'দা প্রথমে বুক ফুলিয়ে হাটতে লাগল আর সবার ঘরে ভাল-মন্দ খেতে লাগল। নিতেন'দা খেলার আগেই আমাদের হিরো হয়ে গেল। আমরা রাত জেগে জেগে প্লেকার্ড ব্যানার বানাতে লাগলাম। "নিতেন'দা তুমি এগিয়ে চল, আমরা আছি তোমার পিছে" "দাও! দাও! দাও সালাম ,নিতেন'দাকে দাও সালাম", "গোল দিবে কেরে নিতেন'দাত সামনেরে" আরো কত কিছু। সময় যত যেতে লাগল আস্তে আস্তে নিতেন'দার বুক ফুলিয়ে হাটা'টা কেমন চুপষে যেতে লাগল আমরা বুঝতে পারলাম না। আমরা মনে করলাম বড় খেলোয়ারদের খেলার আগে একটু টেনশানে থাকে আমরা পাত্তা দিলাম না।
আজ আমাদের পশ্চিমপাড়া বনাম পূর্ব পাড়ায় খেলা। আমরা অনেক উৎসাহের সহিত পেকার্ড ব্যানার আর বাদ্য-বাজনা নিয়ে রেডি। আর পূর্ব পাড়ার লোকজন কেমন চুপসে আছে। আর চুপসে থাকবে নাই বা কেন এমন একজন খেলোয়াড়ের সামনে!!! খেলোয়াড়েরা সবাই মাঠে প্রবেশ করল।আর সবাই মাঠ কাপিয়ে নিতেন'দা- নিতেন'দা বলে চিৎকার করতে লাগলাম। নিতেন'দা সবার উদ্দেশ্যে হাত নাড়াল হিরোর মত। খেলা যথারীতি আরম্ভ হল। একি খেলার পাচঁ মিনিটের মাথায় আমরা একটা গোল খেয়ে গেলাম! নিতেন'দা থাকতে আমরা একটা গোল খেয়ে গেলাম। কলকাতার ক্লাবের গোলকিপার ,আবার জাতীয় দলে যাবে এই শীতে ..। পাশের একজন বলে উঠল " নিতেন'দার দোষ নেই, ডিফেন্সের দোষ।" ঠিক আছে মানলাম ডিফেন্সের দোষ এই কথা বলতে বলতে আরেকটা গোল! খেলার পনের থেকে বিশ মিনিটের মাথায় এক হালি পূর্ন হল। পিছনে ফিরে দেখি আমাদের পশ্চিমপাড়ার লোকজন অর্ধেক নেই। আর বাদ্য যন্ত যাহা যাহার কাছে ছিল তাহা নিয়া পলায়ল করিয়াছে। এদিকে পূর্ব পাড়ার লোকজনের হইচইয়ে আর এইখানে মনে হয় টিকা দায়, আর তাদের লোকজন বাড়তে লাগল। এদিকে আমিও পগারপার হব ভাবছি কিন্তু আমি অতি উৎসাহের সহিত নিতেন'দার জামা কাপড় আর জুতা জোড়া নিয়ে অতি সম্মানীত ভেবে ছিলাম তা আমি নিয়ে কি করব ভাবতে পারছিলাম না। চারিদিকে এখন শুধু পূর্ব পাড়ার লোকজন তাই অতি শরমের সহিত উঠতে পারলাম না। কারন আমি নিতেন'দার বীরত্ব সম্পকে অনেক গল্প ছড়াইছি। যাহক পশ্চিমপাড়ার লোক বলে অতি শরমের সহিত নিতেন'দার জামা কাপড় আর জুতা জোড়া নিয়া গাছের চিপায় লুকাইলাম। এদিকে মাঠে আরেক কান্ড ঘটে গেল। সপ্তম গোলটা বাচাইতে গিয়া নিতেন'দা তার বিরাট শরীর নিয়া চিত হইয়া পরে গেল। তাকে উঠাইতে দু-তিন জন টানাটানি করতে লাগিল। যাহক রেফারীও মনে হয় ক্লান্ত হইয়া বাশি ফুয়াইয়া হাফ টাইম বলিয়া দিলেন। এদিকে আরেক বিপত্তি বাজল নিতেন'দা আর কিছুতেই মাঠে নামিবেন না বলিয়া ঘোষনা দিয়া দিল। আমাদের পশ্চিমপাড়ার বাকি দশ খেলোয়ার হাহাকার করতে লাগিল "এই বার বুঝি আর কুড়ি গোল খাইতে বাকি থাকিল না কিছু । আর কেউ মাঠে নামতে আগ্রহী না জানিয়ে রেফারীকে খেলা শেষ করার জন্য অনুরোধ জানানো হল। তখন রেফারী রক্ত চক্ষু করিয়া হুংকার ছাড়িয়া পূর্ব পাড়াকে বিজয়ী ঘোষনা করিয়া দিল। এদিকে আমি তাড়াতাড়ি খেলা শেষ হওয়ায় অতি আনন্দের সহিত পূর্বপাড়ার মিছিলে যোগদান করিলাম। হাততালি দিতে না পারিয়াও নিতেন'দার জামা নাড়াইয়া,জুতা উঠাইয়া উল্লাস প্রকাশ করিতে করিতে নিতেন'দাকে খুজিতে লাগিলাম।
এদিকে বেচারা নিতেন'দা একটা ঘোরের মধ্যে আছে। আমাকে দেখিয়াও চিনিতে পারিল না। আমি যখন তার জামা আর জুতা জোড়া দিলাম তখন আমার দিকে ফেলফেল করিয়া চাহিয়া থাকিয়া বলিল "কার"। আমি অতি দুঃখের সহিত জানাইলামা যে এগুলো আপনার। বেচারা কাপড়-চোপড় পড়িয়া চারিদিকে তাকিয়া বলিল আমার বেগ কোথায়।সতীস'দার ছোট ভাই সেই মাঠের মধ্যে তাহার বেগ আনিয়া দিল। এই মাঠ হইতেই নিতেন'দা কলকাতা উদ্দ্যেশে রওনা দিলেন। এমন এক সন্ধ্যায় একদিন আমরা নিতেন দা কে কত আনন্দের সহিত বরন করে নিয়েছিলাম আর আজ ........।
আজও আমি টেলিভিশনের সামনে বসে থাকি ইন্ডিয়ার কোন ফুটবল ম্যাচ হলে। নিতেন'দাকে খুজি যদি তাকে গোল পোষ্টে দেখা যায়। কারন ঐ শীতেই ত................
আইনের ফাঁকফোকর-০৩
যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি
(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।
ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন
সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।
সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা
সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন