somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক + এক = এক+এক

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ভোর ৫:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তোমাকে ভালোবাসি কিনা? সত্যি বলতে, তোমার প্রতি আমার অনুভূতিসমূহ ও তোমাকে নিয়ে আমার ভাবনার রাশি কোন একটা সুনির্দিষ্ট শব্দের কাঠামোর ভেতরে আটকে ফেলা খুবই দুরূহ একটা ব্যাপার। ওগুলো এতই দুর্বার, দুরন্ত, অদম্য, প্রাণবন্ত, চঞ্চল, স্পন্দনশীল ও শক্তিশালী যে ভালোবাসা শব্দ নামক ক্ষুদ্র খাঁচাটির ভেতরে পুরে দেওয়ার সাথে সাথে এক ঝটকায় তা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ করে হঠাৎ আলোর ঝলকানি দিয়ে দিকবিদিক ছড়িয়ে পড়ে, আকাশপানে কিছুদূর ছুটে গিয়ে বিস্ফোরিত হওয়া বাজির মত।

কথা খুব জটিল করে কথা বলি, সহজভাবে বলতে পারিনা কেন? কি করে পারবো বলো, মনোভূমি থেকে অনুভূতিগুলো যদি একে অপরের সাথে প্যাচিয়ে লতিয়ে উঠে ও ভাবনাসূত্রগুলো যদি দুষ্ট ছেলের হাতে পড়ে পরস্পরের সাথে মিলে জট পাকিয়ে যায় তাহলে সেগুলোকে ভাষায় রূপদানের সময় সরলে রূপান্তরের চেষ্টা করলে যে তার সবটুকু রস-ই যে ভেজা কাপড়ের দুপাশ দুজনে ধরে কষে মোচড়াতে থাকলে যেমন বাড়তি পানি ঝরে পড়ে ঠিক তেমনি ভাবে নিংড়ে মাটিতে পড়ে তৎক্ষণাৎ শুষে যাবে!

হ্যাঁ, ব্যাপারটা জানার পরও আসি, শত চেষ্টায়ও নিজেকে ফেরাতে পারিনা। তোমাকে দেখার বা তোমার সাথে কথা বলার মুহুর্তেই আমার ভিতরকার সমস্ত গ্লানি, খেদ, ক্লেদ, ক্লান্তি, ক্ষোভ, জড়তা, অস্থিরতা, বিষন্নতা; শীতকালে গাছের বোটা নরম হলুদ পাতার মত ধীরে ধীরে খসে পড়তে আরম্ভ করে। তারপর ক্রমান্বয়ে আমি স্নিগ্ধ হতে শুরু করি, বসন্তকালে কচি পাতা গজিয়ে উঠলে যেমন সজীব হয়ে উঠে গাছ। অথবা পানির বদলে স্নিগ্ধতায় ভর্তি কোন পুকুরে পাথরের মত ডুবে গিয়ে তলার মুগ্ধতার নরম বিছানায় শামুক-ঝিনুকের মত শুয়ে থাকি, তারপর স্নিগ্ধতা ফুড়ে ফুড়ে শালুক ফুলের মত তোমার দিকে মাথা তুলে দাঁড়াই। পৃথিবীর যাবতীয় অলসতা ও নিদ্রালস, দীর্ঘ পথ হেঁটে এসে চৈত্রের দুপুরে বৃক্ষের ছায়ায় আশ্রয় নেয়া পথিকের শরীরে যেমন ঠিক তেমনিভাবে আমার বুকে ওজনহীন বিশালাকার পর্বতের মত জমে উঠে। তোমার শ্বাস-প্রশ্বাসের মদির বাতাস ততক্ষণে আমাকে জাগিয়ে তুলে পাখির পালকের মত স্নিগ্ধতার পুকুরে ঢেউয়ের দোলায় ভাসিয়ে নিয়ে যেতে থাকে।

আসলে, তোমার প্রতি আমার অনুভূতিগুলোই যেন আমাকে বাঁচিয়ে রাখে। জানো, কখনও এমনও মনে হয়, আমার সমস্ত অনুভূতি ও চিন্তা করার ক্ষমতা যদি লোপ পায়, সকল অঙ্গ-প্রতঙ্গ হয়ে পড়ে অকার্যকর, সেদিনও যদি শুধুমাত্র পেটে ক্ষুধার এবং মনে তোমার প্রতি অনুভূতির তাড়না বোধ করি তাহলেই বুঝতে পারব যে বেঁচে আছি, বেঁচে আছি প্রাণের সম্পূর্ণটুকু নিয়েই।

আমার একাকীত্বের বিস্তীর্ণ আকাশের পুরোটাকেই তুমি ভরিয়ে রাখো ভেসে চলা ছেড়া মেঘের মত। ঘুমের আশায় শুয়ে থাকা প্রলম্বিত মুহুর্তগুলোতে তুমি এত প্রত্যক্ষভাবে উপস্থিত থাকো যে, নিজেকে মনে হয় মানসিক হাসপাতালে শুয়ে থাকা কোন হালুসিনেইশনের রুগী। ব্যস্ত রাস্তার ফুটপাথ ধরে একাকী-নিঃসঙ্গ হেঁটে চলার সময় বুঝতে পারি- তুমি চলছো আমার কাঁধে কাঁধ রেখে, কানের কাছে মুখ নামিয়ে জিহ্বায় মৃদু আলোড়ন তুলে, ঠোঁট নাড়াতে নাড়াতে। যানজটে ভরা রাস্তা দিয়ে পরিবহণ বাসে চলার সময় তুমি মাঝখানের কোন একটা স্টপেজ থেকে তড়িঘড়ি উঠে পড়, তারপর আমার পাশের যাত্রীদের দু-হাতে ঠেলে সরিয়ে কাছ ঘেঁষে আসো, সামান্য ওমের আশায় মুরগীর ছানা যেমন মা-মুরগীর পালকের ছোঁয়ায় আশ্রয় নেয়। খোলা বইয়ে মুখগুজে থাকার সময় সাদা পৃষ্ঠাগুলোতে পাশাপাশি শুয়ে থাকা কালো কালো শব্দ জটের ফাঁকে ফাঁকে তোমার মুখ নিঃসৃত বাক্যগুলো বিছিয়ে যায় খুব সহজেই।

সমতলে উদ্ভ্রান্ত ঘুরতে ঘুরতে দিশেহারা হয়ে যদি পড়ি, তোমাকে সাথে নিয়ে সোজা রওনা দেই পাহাড়ের দিকে; পাদদেশে পৌঁছে খাড়া ঢাল বেয়ে পর্বতারোহণের সরঞ্জাম ব্যাতিরেকেই উপরের দিকে এমন তরতরিয়ে উঠতে থাকি যে পাশের দেশ নেপালের শেরপা জাতির দক্ষ পর্বতারোহীরাও ভয়ে শিউরে উঠবে। চোখা মাথা কঞ্চির মত মেঘের পেটে ঢুকে পড়া শিখরে উঠে আমরা এমনভাবে গজরাতে থাকি যেন আমাদের ভেতরটা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে তপ্ত বালুতে রাখা চাউলের মত ফুটছে আর তারপর প্রচন্ড বেগে, ঘূর্ণনরত লোহার চাকতির সাথে অপর একটি লৌহ দন্ডের সংঘর্ষে তৈরী হওয়া সংখ্যাহীন আগুনের সূক্ষ্ণ সূক্ষ্ণ ফুলকির ন্যায়, বেরিয়ে আসছে, পৃথিবীর কক্ষপথের আকারে ছড়িয়ে পড়া, দুই ঠোঁটের মাঝখান দিয়ে।

মাঝে মাঝে নাগরিক জীবনের সকল ব্যস্ততা ও দৈনন্দিনতাকে তুচ্ছ করে তুমি-আমি চলে যাই সমুদ্রের কাছে, গর্জন করতে করতে হিংস্র সাপের মত ধারালো ফণা তুলে একের পর এক তীরের দিকে এগিয়ে আসতে থাকা ঢেউয়ের উপর একসাথে আছড়ে পড়তে পড়তে একসময় শরীরের সমস্ত শক্তি নিঃশোষিত হয়ে যায়। তারপর হঠাৎ ভাটার টানে সমুদ্র তার গভীরতার দিকে আমাদের অবশ দেহদুটিকে টেনে নিয়ে চলে, ছোট বেলায় সুপারি গাছের খোলে বসে কোন বন্ধুর টেনে নিয়ে চলায় মাটি ঘেষটে এগিয়ে যাওয়ার মত। আমাদের চলার গতির সমানুপাতিকে ঘুচে যেতে থাকে স্বচ্ছ নীল আকাশ ও একই রঙের সমুদ্রের মধ্যকার বিশাল ব্যবধান। তারপর “নীল” ধীরে ধীরে “ধূসর” হয়, আর আমরা আকাশের উচ্চতায় এবং একই সাথে সমুদ্রের গভীরতায় ঘুমিয়ে পড়ি। বহুটা সময় পরম নিভৃতে কেটে যাওয়ার পর পাখির কূজনে, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকে, বাতাসের হিস-হিস শব্দে ধীরে ধীরে আমাদের অজ্ঞানতা ঘোঁচে। ঘুম ভেঙ্গে দেখি পড়ে আছি সমুদ্রের মাঝখানে আদিম প্রকৃতিতে ছাওয়া নির্জন দ্বীপের বালুকা বেলায়।

প্রত্যকদিন বিকেলে সূর্য যখন ক্লান্তিতে আধবোজা চোখে তার রাত্রির আবাসের দিকে, বাতাসের-বেগ-শূন্য আকাশে গাইল ধরা ঘুড়ির ধরনে, ঢলে পড়তে শরু করে তখন মায়ের বকুনিকে আগ্রাহ্য করা চঞ্চল গ্রাম্য বালক-বালিকার মত জমাট ধানক্ষেতের মাঝখানের আলপথ ধরে দৌড়াতে থাকি। ক্লান্তিতে আমাদের পা দুটি অবশ হয়ে গেলে দাঁড়িয়ে পড়ি। তারপর নিজেদের ভেতরটাকে দুহাতে মেলে ধরে দিগন্তের দিকে বাড়িয়ে দেই, পূজোর থালায় সাজিয়ে নৈবদ্য ঠাকুর-দেবতার দিকে এগিয়ে দেওয়ার মত। তারপর খানিকটা হঠাৎ বিস্মৃতির পর টের পাই আমাদের শরীর দুটিও যেন ধানগাছের মত সরু, সজীব ও নমনীয় হয়ে উঠেছে। উত্তুরে বাতাস এসে আমাদেরকে দোলা দিয়ে যায়, একে অপরের উপর কখনও এদিকে কখনও ওদিকে এলিয়ে পড়ি; আবার খাড়া হই, আবার এলিয়ে পড়ি।

আলো-বাতাস রুদ্ধ, আশেপাশে গাছগাছালি হীন গুমোট কামরাটিতে ঘুম ঘুম ভাবের মধ্যে কাতরাতে কাতরাতে কখনওবা মনে হয়- আমি যেন একটা ফাঁপা বেলুন, তুমি আক্সিজেন বাহিত বাতাসের রূপ ধরে আমার মধ্যে প্রবেশ করছ আর আমি নিজের আকৃতিতে ফুলে ফুলে উঠছি। তোমাকে ভেতরে আটকে ফেলার সামান্য চেষ্টা করা মাত্রই তুমি বেলুনের ছোট ফুটো দিয়ে যেমন বাতাস ঠিক তেমনি দ্রুতগতিতে বের হয়ে যাও। পরক্ষণেই টের পাই, সাপের সদ্য ছেড়ে যাওয়া খোলসের মত হয়ে সমস্ত শরীর ব্যথায় জড়িয়ে বিছানার উপর পড়ে আছি আর একরাশ শূন্যতা যেন আমার বুকটাকে উপর্যুপরি ঠেসে চলেছে।

ঘুমের বাড়ির দিকের রাস্তা ধরে শামুকের গতিতে আরো খানিকটা এগিয়ে হঠাৎ আলতোভাবে মনে হয়, সাদা কুয়াশার ঘন আস্তর হয়ে তোমার নিজের আকৃতিতে আমার চতুর্দিক বিস্তার করে আছো, আর আমি ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছি নীচের দিকে । তারপর উপরে উঠার ক্ষীণ চেষ্টায় হাত বাড়িয়ে তোমাকে ছুঁতে যাওয়ার মুহুর্তেই কে যেন আমাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, আমার থেকে সবচেয়ে দূরতম বিন্দুতেও তুমি যেন আর নেই, তাও ছাড়িয়ে গেছ বহুপূর্বেই।
জানো, তোমার সাথে কাটানো প্রত্যেকটা মুহুর্তে আমাদের কথোপকথন চলে, হেন কোন বিষয় নেই যা বাদ পড়ে যায়। আমার বলে চলার সময় তুমি তন্ময় হয়ে হরিণছানার মত চোখ মেলে তাকিয়ে থাকো। তবে, মাঝে মাঝে আলতো করে থামিয়ে দিয়ে তোমার অনুভূতি, ভাবনা ব্যক্ত করা শুরু কর, মনে হয় যেন চিড়িয়াখানায় সদ্য স্থান লাভ করা কোন বন্য-জন্তু হঠাৎ ছাড়া পেয়ে সম্মুখপানে ধাবিত হল। আর ওদিকে আমার শ্রবণেন্দ্রিয়ের সমস্ত দরজা-জানালা এক এক করে হাট হয়ে খুলে যেতে থাকে, যাতে করে তোমার ডোরাকাটা অনুভূতিগুলো বিনা বাঁধায় শব্দের গতিতে পার হয়ে ভিন্ন কোন জগতে, অন্য কোন সময়ে প্রবেশ করতে পারে; ব্লাকহোলের ভেতরে থাকা বিশাল বিশাল ওয়ার্ম হোলের(Wormhole) ভেতরে জীবন্ত ঢুকে পড়তে পারলে যেমন সূদূর অতীতের কোন একসময়ে যখন হয়ত আমাদের এই মহাবিশ্বই তৈরী হয়নি বা কেবল তৈরী হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে, সহস্র আলোক বর্ষ দূরে থাকা এই মহাবিশ্বেরই কোন গ্যালাক্সীতে বা সম্পূর্ণ আলাদা মহাবিশ্বে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আমার চোখ দুটি তখন তোমার মুখের উপর নিবিষ্ট হয়। তোমার চোখের তারার নাচানাচি, চোখ দুটো কিঞ্চিত কোনাচে করে ঈষৎ উপরের দিকে - একই ভঙ্গীতে নীচের দিকে তাকানো, হঠাৎ আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে মানুষের জঙ্গলের ভেতর দিয়ে সুদূর পানে তাকানোর প্রয়াস, অন্য কিছু ভাবতে গিয়ে হঠাৎ কথা বলা থামিয়ে দেওয়া- কিছুক্ষণ আনমনা থেকে আবার শুরু, এবড়োখেবড়ো রাস্তায় ঝাঁকি খেতে খেতে এগিয়ে চলা খালি লরির মত ঠোঁটের উঠানামা, ভুরুর প্রসারণ-সংকোচন, দুই ভুরুর মাঝখানের ও চোখের কিনারের চামড়া হঠাৎ কুঁচকে যাওয়া আবার পরক্ষণেই আলগা হয়ে পড়া, বন্যার পানির তোড়ের মত বের হওয়া খিলখিল হাসিটাকে মাঝপথেই চেপে ধরলে গালের মাঝপথ দিয়ে ঠোঁটের দুই কোণের বর্তুল আকারে উপরের দিকে ঠেলে উঠার চেষ্টা, মুখের উপর ছড়িয়ে থাকা হালকা হাসির চাকতির ধীর ঘূর্ণন, কখনওবা রাতের অন্ধকারে ইঁদুরের মত দু-একটি বিরক্তির রেখার ক্ষিপ্র যাতায়াত এবং ক্ষণিকের জন্য অন্যসব কিছু মুছে গিয়ে বায়ুহীন তপ্ত মরুভূমির মত অচঞ্চল ঢেউ ফুটে থাকা একটা প্রশান্ত ভাব ইত্যাদি সবকিছুই আমার খুবই ভেতরে এবং একই সাথে একেবারে সম্মুখে অনুভব করতে থাকি।

আমাদের দুজনের এই যে আলাপচারিতা, বলা যায়, আমার নিজের সাথে নিজেরই। তুমি আমার ভেতরে আসীন হও বা গজিয়ে উঠো আমার নিজেরই একটি রূপ ধরে । হয়তবা, তুমি নিজেরই স্বরূপে প্রবেশ করে আমার একটা অংশ হয়ে যাও। তুমি এবং আমি- এই দুজনের মিলনের ফলেই যেন “আমি”র ও “তুমি”র জন্ম হতে থাকে বারংবার। আমরা যেন আমাদের দুজনের বহু সাধনার, প্রয়াসের, অধ্যবসায়ের সম্মিলিত সৃষ্টিকর্ম। দীর্ঘ দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র আবেশে নিজেদের মধ্যে মিশে থেকে নিজেকে এবং একই সাথে তোমাকে সৃষ্টি করে চলি, দুজনে আলাদা দুটি সত্ত্বা হয়ে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকি, কখনও পরস্পরকে ছেড়ে যাই আবার এমনও হয় যে দুজনের মধ্যে লেগে যায় ধুন্ধুমার যুদ্ধ।

তুমি তো জানো, চারপাশের অনেকেই আমার সমন্ধে বলাবলি করেঃ আমি নাকি ভীষণ নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন করি, ঘর হতে বের হতে চাই না, সবসময় কেমন আনমনা হয়ে থাকি, তেমন কোন বন্ধু-বান্ধবের সাথে সংশ্রব নেই, এমনকি একজন প্রেমিকা পর্যন্ত জোটাতে পারিনি। চায়ের স্টলের তুমুল আড্ডায় অংশগ্রহণ করার বদলে ধীরে ধীরে ঝিমিয়ে পড়ি, অন্যসকলে আমার উপস্থিতির কথা পর্যন্ত বেমালুম ভুলে যায়। পরিচিত জনসমষ্টির মধ্যে হঠাৎ পড়ে গেলে কথা বলার ও না বলার ভয়ে মানুষের অস্তিত্ব টের পাওয়া শামুকের মত নিজের ভেতরে সেঁধিয়ে যাই। প্রায় সকল ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে নিজেকে সন্তপর্ণে বাঁচিয়ে চলি। অথচ দেখো, ভেতরে তোমার-আমার দাম্পত্য জীবনের একটি মুহুর্তকেও তারা যদি নিজেদের অনুভবে আনতে পারত তাহলে কালবোশেখী বাতাসের তীব্র ঝাপটার মত আমাদের প্রানোচ্ছলতা ও জোড়া শালিকের মত উড়ে বেড়ানো দেখে যারপরনাই অবাক হয়ে যেত। এবং এটাও বুঝতে পারত যে, বায়ুস্তব্ধ পরিবেশে পানির উপরিতলের মত আমাকে অচঞ্চল দেখালেও, উপরকার স্বচ্ছতাটুকু ভেদ করেও দৃষ্টি যায় না এমনমাত্রার গভীরে আমাদের দুজনা’র চলছে সুপারনোভার তুমুল বিচ্ছুরণ, পুনরায় জন্ম নেবার ও দেবার নিমিত্তে ধ্বংশ হতে থাকা প্রাচীন নক্ষত্রের মত।

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×