﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُونُوا قَوَّامِينَ بِالْقِسْطِ شُهَدَاءَ لِلَّهِ وَلَوْ عَلَىٰ أَنفُسِكُمْ أَوِ الْوَالِدَيْنِ وَالْأَقْرَبِينَ ۚ إِن يَكُنْ غَنِيًّا أَوْ فَقِيرًا فَاللَّهُ أَوْلَىٰ بِهِمَا .....
অনুবাদ: “হে ঈমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক, আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায় সঙ্গত সাক্ষদান কর, তাতে তোমাদের নিজেদের বা পিতামাতার অথবা নিকট আত্মীয় স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তবুও ।“ - আল কোর’আন (সূরা নিসা:১৩৫ আয়াতের অংশ)
>>তাফসীর: “কোর’আনের বিভিন্ন আয়াতের দ্বারা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, ইনসাফ ও ন্যায় নীতি প্রতিষ্ঠা ও তার উপর অবিচল থাকা শুধু সরকার ও বিচার বিভাগেরই বিশেষ দায়িত্ব নয় । বরং প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । যেন সে নিজে ন্যায় নীতির উপর স্থির থাকে এবং অন্যকেও ইনসাফ ও ন্যায়নীতির উপর অবিচল রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে । অবশ্য ইনসাফ ও ন্যায় নীতির একটি পর্যায় সরকার ও শাসন কর্তৃপক্ষের বিশেষ দায়িত্ব । তা হচ্ছে দুষ্ট ও অবাধ্য লোকেরা যখন ন্যায় নীতিকে পদদলিত করবে , নিজেরা তো ন্যায় নীতির ধার ধারবেইনা, বরং অন্যকেও ন্যায় নীতির উপর স্থির থাকতে দেবেনা । তখন তাদেরকে দমন করার জন্য আইনের শাসন ও উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা অপরিহার্য । এমত অবস্থায় একমাত্র ক্ষমতাসীন সরকার ও কর্তৃপক্ষই ইনসাফ ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠিত করতে পারে ।
বর্তমান বিশ্বের মূর্খ জণগণ তো দূরের কথা , শিক্ষিত স্বাধীনাও তনে করেন যে ইনসাফ ও ন্যায় নীত প্রতিষ্ঠা করা শুধু সরকার ও আদালতেরই দায়িত্ব, এ ব্যাপারে জনগণের কিছু দায় দায়িত্ব নেই । এহেন ভ্রান্ত ধারনার কারণেই বিশ্বের দেশে সব রাজ্যে সরকার ও জনগণের দৃষ্টি পরস্পর বিরোধী শক্তিতে বিভক্ত হয়ে গেছে । শাসক ও শাসিতের মধ্যে দুস্তর ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছে । সব দেশের জনগণ সরকারের কাছে ইনসাফ ও ন্যায় নীতি দাবি করে কিন্তু নিজেরা কখনও ন্যায় নীতি করতে প্রস্তুত নয় । এরই কুফল আজ সারা বিশ্বকে গ্রাস করেছে । আইন-কানুণ নিস্ক্রিয় ও অপরাধ প্রবণতা ক্রমবর্ধমান ।“..
.. {তাফসীর মা’রেফুল কোর’আন, ২৮৮ পৃষ্টা, সৌদি বাদসা কর্তৃক সম্পাদিত}
উপরোক্ত আয়াতে করীমা ও তার তাফসীর থেকে আমরা যা বর্তমানে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি :
*সরকার ও জনগণ উভয়েরই রাস্ট্রের দায়িত্ব আছে । শাসক শাসন করবে আর শাসিতরা তাকে সম্পূর্ণ ভাবে সহযোগিতা করবে ।
*শাসিতরা বা সাধারণ জনগণের দায়িত্ব হল সরকারের সকল আইনকে মেনে চলা , এবং পরিবশে পরিস্থিতি ঠিক রাখা । এটাই ইসলামী রাজনীতি ।
*জণগণের মধ্যে যদি কেউ অসুস্থধারা সৃষ্টি করে, যদি অশান্তি সৃষ্টি করে তবে সরকারকেই তা দমন করতে হবে , কঠোর ভাবে ।
*পরিবশে শান্ত রাখতে , দেশ স্থিতিশীল রাখতে সরকারের উচিত সর্বচ্চো শক্তি প্রয়োগ করে বিদ্রোহী দমন করা ।
*সুশির , সভ্য বা শিক্ষিতরাও বিভ্রান্তি ছড়ায় যে সরকারেরই সকল দায় দায়িত্ব আসলে কোর’আনের আয়াতের ব্যাখ্যা তা নয়, সরকার ও প্রজাদের সকলেরই দায়িত্ব শান্তি স্থাপন করা । এতে শিক্ষিত সুশিলরা সবাইকে সরকারের প্রতি জনসমর্থন বৃদ্ধিতে কাজ করবে । যাতে দেশে বিদ্রোহী বা অশাস্তি সৃষ্টিকারী , নাশকতাকারী তৈরি না হয় ।
*কোন অবস্থাতে শাসক ও জনগণ পরস্পর দূরে যাবেনা । একসাথে কাজ করবে ।