জরিনা বেগম জানাল যে সে শনিবার সকালে শিকাগোর এক জায়গায় যেতে চায় তার বন্ধুদের সাথে দেখা করার জন্য। আমি চাইলে সে আমাকে রাস্তায় কোথাও নামিয়ে দিতে পারে। আমি বললাম, আমার যাওয়ার জায়গা নাই। সে বলল, তোমাকে তাহলে খাবার দোকানে রেখে যাই? আমি বললাম, থাক। তাইলে আমাকে হেঁটে হেঁটে ফিরতে হবে, আর সারাদিন খাবারের দোকানে বসে থাকাও সম্ভব না। তোমার মত তুমি ঘুরে আস, আমি আমার মত ব্যবস্থা করে নেব।
দুপুরটা পাউরুটি খেয়ে পার করলাম, সন্ধ্যায় আসলেই ক্ষুধা লাগল। ব্যাগে ল্যাপটপ ভরে বেরিয়ে পরলাম। ল্যাপটপ নেবার কারণ হল, হোটেলের ইন্টারনেট কাজ করছে না। বিভিন্ন দোকানে ফ্রি ওয়াই-ফাই থাকে, সেটা যদি একটু ব্যবহার করা যায়। হাঁটতে হাঁটতে একটা শপিং লটে ঢুকলাম, Bed bath & Beyond নামের দোকানটায় ঢুকলাম। Adam Sandler এর Click সিনেমাটা দেখার পর থেকেই এই দোকানটায় ঢোকার শখ ছিল আমার। এই দোকানটায় বিছানা বালিশ, আর বাথরুমের মালপত্র পাওয়া যায়। খুব দ্রুতই 'বোরড' হয়ে বের হয়ে আসলাম। পাশের স্পোর্টস শপে ঢুকলাম এরপর। যে জিনিসটা বেশ মজা লাগল, তা হল মরিচের স্প্রে আর টিয়ার গ্যাস স্প্রে। আত্মরক্ষার জন্য এগুলো কেনে মানুষ, জগিং করার সময় সাথে নেবার জন্য বিশেষ স্ট্র্যাপও আছে। অনেক মেয়েরা নাকি এগুলো সাথে রাখে আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য। বড় বড় ছুরি দেখলাম, যেগুলো দিয়ে সিনেমার হিরোদের দেখেছি জংগলে গাছের বেড়ে ওঠা পাতা কেটে রাস্তা বানিয়ে নিতে।
হাঁটতে হাঁটতে অনেক দূর চলে আসলাম। রাস্তা থেকে একটু দূরে চিকন একচিলতে ফুটপাথ। বসে পরলাম, তার উপরেই। পথে কারও সাথে দেখা হয় নি, কাজেই কেউ বিরক্ত করবে বলা মনে হল না।
হাঁটতে গিয়ে মনে হল, আরে! ব্যাগে তো ক্যামেরা আছে! রাস্তাঘাটের ছবি তোলার কিছুই নাই জানি, তবুও আমি তাই তুললাম। মনে হল ঢাকা হলে ছবি তোলার সময় হয়ত কয়েকজনের সাথে ধাক্কাই লেগে যেত, এখানে কোন মানুষই নাই।
ছবি অবশ্য সবই ফালতু টাইপের:
একটা ফোয়ারা দেখে আবার বসলাম। লংগার এক্সপোজার দিয়ে ফোয়ারার ছবি তোলার চেষ্টা করলাম। ভাল হল না।
ফেরার পথে Starbucks এর ইন্টারনেট চুরি করার চেষ্টা করলাম, পেলাম না। Panera Bread নামে একটা wifi পেলাম। সেটা দিয়ে মেইল চেক করে ফিরে আসলাম।
আমার 'আদার হাফ' জানাল যে আজ বাঙালি কমুনিটিতে বারবিকিউ ডিনার করা হবে, ফুড ফেস্টিভালের লাভের টাকায় সবাই মিলে দুটি প্রোগ্রাম করা হল। আমার কপালে ছিল না, তাই চিমনি রকের (চিমনির মত পাহাড় আছে নাকি) প্রোগ্রাম আর লেকের পাশের বারবিকিউ - দুটোই মিস করলাম। ফুড ফেস্টের দিন আমি স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে ক্যানভাসিং করেছিলাম: Would you like to test some Bangladeshi food? This is Biriyani, a very famous food, and this is chicken kebab. I would suggest you must try this, everyone is coming back after eating one...... If you come later, you may not find it any more. খুব একটা খারাপ হয়নি আমাদের, আমরা সোল্ড আউট হয়েছিলাম। স্টলের সামনে আমরা বাংলাদেশের পতাকা আঁকা একটা বোর্ডও লাগিয়েছিলাম আমরা।
আগের পর্ব: Click This Link
(খাদ্য ব্লগ)
আলোচিত ব্লগ
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিমানের দেয়াল
অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১
তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes
শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন