somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৌদি নারী যেভাবে সাহসী (!) হয়ে উঠল.........

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাহসী বলতে কি বোঝায়? আমরা সাহসী বলতে বুঝি যে বিপদের পরোয়া না করে নিজ লক্ষ্যে অটল থেকে লক্ষ্য অর্জনের পথে অগ্রসর হয়, তাকে। সাহসের আরও কিছু ডেফিনেশন আছে। আমাদের দেশে সবচেয়ে সাহসী প্রজন্ম ধরা হয় মুক্তিযুদ্ধের সময়কার প্রজন্মকে যারা মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে অসীম সাহসে ভর করে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ইতিহাস বিখ্যাত এক অসম যুদ্ধে।

কিন্তু হালে সাহসের সংজ্ঞা বোধ হয় বদলে গেছে। পার্শ্ববর্তী দেশে সাহসী অভিনেত্রী বলতে বুঝায় যারা খোলামেলা পোষাকে বা পোশাকবিহীন অবস্থায় ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে বা সহ অভিনেতার সাথে অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনিয় করতে কোন রকম সংকোচ বা দ্বিধা করেনা। আমাদের দেশের নায়িকাদের এতদূর যাওয়া লাগেনা। মোটা দাগে হাত পা দেখা যায় - এরকম গাঢ় রঙয়ের পোশাক পরে রাস্তায় বের হলেই তাকে সাহসী বলা চলে। কিন্তু আফসুস, এটুকু সাহস দেখাবার মত মেয়ে আমাদের রাস্তাঘাটে দেখা যায়না বললেই চলে।


কিন্তু সৌদি আরবের ব্যাপারটা কি? ইসলাম ও শেষ নবীর জন্মস্থানের ইজ্জত রক্ষার্থে সেদেশে মুসলিম পুরুষ ও নারীদের চলাচলে কিছুটা কড়াকড়ি অনেক আগে থেকেই ছিল। এ নিয়ে পশ্চিমা দেশে বিস্ত্র সমালোচনা থাকলেও দেশের ভেতরে এ নিয়ে তেমন একটা উচ্চবাচ্য থাকেনি। মেয়েদের গাড়ি চালানো, মাহরাম ব্যতীত ভ্রমণ করা, পর্দা ছাড়া চলাফেরা করা নিষিদ্ধ ছিল - কিন্তু এসব আইন কেবল সৌদী নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য ছিল। পশ্চিমা দেশের মেয়েরা কোন কাজে সৌদি ভ্রমণে এলে সৌদি রীতিনীতিকে কাঁচকলা দেখিয়ে খোলা চুলে উড়ে বেড়াত আর তার ছবি সংবাদ মাধ্যমে পোস্ট করে সৌদি মেয়েদেরকে 'স্বাধীনতার' লোভ দেখাত।

সৌদি সরকারও সেই তথাকথিত স্বাধীনতার গুরুত্ব বুঝে কড়াকড়ির রাশ টানতে শুরু করেছিল। প্রথমে গ্যালারিতে নারী পুরুষ একসাথে বসে খেলা দেখা, তারপর কন্সার্ট, তারপর সিনেমা হল, তারপর গাড়ি চালাবার অনুমতি দেওয়া - মোট কথা স্বাধীনতার লোভে পড়া নারীরা যা মনে মনে চাইছিল, সরকার এক এক করে সব উম্মুক্ত করে দিচ্ছিল। আর কিছুদিন ধৈর্য্য ধরলে হয়তোবা পর্দার বিধানও তুলে দিত, কিন্তু ব্যাপারটা সেনসিটিভ বলে এটা বাস্তবায়ন করতে সময়ের প্রয়োজন ছিল।

কিন্তু সৌদি তরুণী রাহাফ আল কুনুনের আর তর সইছিলনা। বয়েস ১৮ বছর হয়ে গেছে। বিশ্ববাসীকে এই সময়েই যদি তার রূপ সৌন্দর্য দেখানো না যায়, তবে তার আর মূল্য কি? তাই সাহসী (!) হয়ে ওঠার জন্য সে এই সময়টাই বেছে নিয়েছে। সৌদি রীতিরীতিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানোর জন্য সে পালিয়ে প্রথমে যায় সেক্স নগরী বলে খ্যাত ব্যংককে। যদিও থাই সরকারের তাকে রাখতে আপত্তি ছিলনা, তারপরেও এই তরুণীকে ইসলামের বিরুদ্ধে মোক্ষমভাবে ব্যবহার করা যবে - এই সম্ভাবনার কথা চিন্তা করে তাকে নিয়ে জাতিসঙ্ঘ, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার মধ্যে কাড়াকাড়ি পড়ে যায়। সৌদি থেকে পালানো এই মেয়ে সবদিক থেকে আমেরিকার কাছাকাছি দেশ কানাডকেই তার পছন্দের আবাস হিসেবে বেছে নেয়। আর কানাডাও এরকম ফ্রিডম স্যাম্পল পেয়ে এত খুশি হয় যে বাকবাকুম করে তাকে 'ব্রেভ কানাডিয়ান' খেতাব দিয়ে দেয়। ধন্য ধন্য সাহসী নারী।

সাহসী নারীর গল্প তো অনেক শুনলেন। এবার দেখুন কিছু ভীতু নারীর ছবিঃ


এই বালিকার নাম আহেদ তামিমি। এর ঘটনা আশা করি সবাই জানেন।


ফাতিমা ফারহিন। হিজাব না খোলায় ভারতের লখনৌ এর সেন্ট জোসেফ স্কুলের এই ছাত্রীকে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।


ফারিহা নিজাম। যুক্তরাষ্ট্রের ১৯ বছরের এই বালিকাকে পাবলিক ট্রান্সপোর্টে প্রায়ই নানা অস্বস্তিকর ঘটনার মুখোমুখি হতে হয়। একবার এক মহিলা টেনে ছিড়েও ফেলেছে বলে সে তার টুইটারে জানিয়েছে।


গ্লোরিয়া গুমি নামে কেনিয়ার এই মেয়েটি নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ঈমান রক্ষার সংগ্রাম করে যাচ্ছে। নাস্তিক পিতামাতার এই কন্যা এখনো তার ঈমানে অটল আছে।


রোমানিয়ার মেয়ে স্টেফানি হিজাব পড়ায় তার পরিবার ও সমাজের নানা রকম কটুক্তি সহ্য করে যাচ্ছে।


সিঙ্গাপুরের নও মুসলিম সিতি নূরকে হয় হিজাব না হয় চাকরি এই দুটোর একটা বেছে নিতে হলে তার বস। তিনি জবাব দেন, চাকরি চলে গেলে আরেকটা পাব, কিন্তু যে সত্যের সন্ধান আমি পেয়েছি, তা চাইলেও সবাই পায়না।


সৌদি তরুণীকে 'ব্রেভ কানাডিয়ান' উপাধি' দেয়া কানাডার ১৭ বছরের এই তরুণী লায়লা ইসলাম গ্রহণ করায় তার পরিবার তাকে ত্যাগ করে। বন্ধু বান্ধবের আর্থিক সাহায্যে লেখাপড়া শেষ করা এই তরুণী এখন বিবাহিত জীবন যাপন করছেন।


বাংলাদেশী হিজাবী তরুণী সালমা আফরোজের প্রচন্ড কষ্ট হয়েছে ইসলাম বিদ্বেষী দেশ অস্ট্রিয়ায় নিজের ধর্ম পালন করতে। 'আল্লাহ আমার সাথে আছেন' এরকম কনফিডেন্ট নিয়ে তিনি সেখানে ঈমান নিয়ে টিকে আছেন।

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:২৮
১৪টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×