ভরা অটো-বাইক মাদরাসা অতিক্রম করতেই জুব্বা-পাগড়ি আচ্ছাদিত কয়েকটা বাচ্চা ছেলে হৈ হৈ করে উঠল— ভাই, স্ট্যান থেইকা ঘুরায়া খালি আইসেন; রিজাব, রিজাব। ড্রাইভার ‘আচ্ছা’ বলে মাথা কাত করলেন। আমার দিকে না-তাকিয়েই বললেন— অন্য কেউ হইলে জীবনেও ‘হ’ কইতাম না। ওদের কথা ঠিক আছে। নইলে এমনে পাবলিক আইতে কয়, কিন্তু কথা রাহে না; অটো একটা পাইলেই উইঠা যায়। ওদের কথা ঠিক থাকে।
গতকাল সন্ধ্যার এই ঘটনা আরেকটা সন্ধ্যা মনে করিয়ে দিল। অফিস থেকে ফেরার পথে প্রচণ্ড ভিড় রাস্তায়। সুপ্রভাত গেট বন্ধ করে হু হু করে চলে যাচ্ছে। একটু স্লো পেয়ে একটাতে ধাক্কা মেরে ঝুলে পড়লাম। সাথে আরও একজন। হেল্পার ঠেলছে ‘নামেন-নামেন, সিট নাই-সিট নাই। আমরাও নামবো না, সে-ও তুলবে না। ঝুলতে ঝুলতে ফ্লাই ওভারে পর্যন্ত এসে দেখি রেলিঙে ঘষা খেয়ে দুজনেই অক্কা পাবো। এবার পাশের সহঝোলা-যাত্রী কাতর মিনতি করে বলল— ভাই, আমি নেমে যাচ্ছি, প্লিজ হুজুরকে নিয়ে যান, প্লিজ।
একজন গার্ড প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার পথে সালাম দেন। এমনকি তার অলক্ষে যদি কিছু দূর এগিয়ে যাই, তিনি দৌড়ে সামনে এসে সালাম দেন। আজ একজনের আড়ালে পড়ে গিয়েছিলাম, দেখি তিনি ঘার বাঁকিয়ে পিছন দিক থেকে জোরে ‘আস-সালামু আলাইকুম, হুজুর’ বলে উঠলেন। বানিয়ে বলছি না—ট্রাস্ট মি।
এই আস্থা ও ভালোবাসা এখনও মানুষ হুজুরদের জন্য পুষে রাখে। আমিও একজন হুজুর মানুষ।
আর কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে না...
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:১০