কাশ্মিরের জন্য সত্যিকার অর্থে আমার খুব কিছু করার নেই। পারব সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করতে, যেন আন্তর্জাতিক প্রটেস্টার গ্রুপের সঙ্গে একাত্ম থাকতে পারি। মিসরে ‘উই আর অল খালেদ সাইদ’ গ্রুপের কথা মনে আছে—যারা ফেসবুক সংগ্রাম থেকে আরব বসন্ত নামিয়ে এনেছিল? আর পারব, যদি কোথাও প্রতিবাদ মিছিল হয়—যাতে বাইরে থেকে একটা রাজনৈতিক কূটনৈতিক প্রেসার তৈরি করা যায়—তাতে যোগ দিতে।
আমার সবটুকু শক্তি-ক্ষমতা এই দুটিতেই ক্ষান্ত।
এর বাইরে আমি পারি, কাশ্মির সম্পর্কে যেন কোনও রিউমার ছড়িয়ে না-পড়ে, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে। যেন তাদের সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়। জনমানুষের আস্থা নষ্ট না হয়। আফগানে গিয়ে অনেক আরব নাকি এই কারণে ফিরে এসেছিলেন যে, ওখানে তো কুফর আর শিরকের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। কেননা, আফগানিরা এখনও গলায় তাবিজ পরে, যা শিরক।
সেরে নিতে পারেন প্রয়োজনীয় পাঠ
সুতরাং সঠিক তথ্য-সংগ্রহ করা ও যাচাই করে তথ্য গ্রহণ করার বিকল্প নেই। এখন যুদ্ধ যতটা না হয় বুলেট দিয়ে—শতগুণ বেশি হয় তথ্যের বেয়নেটে। সত্য ও সাহসী তথ্য প্রচারের যুদ্ধে শহিদ হওয়ার নজিরও কম নেই। সুতরাং প্রয়োজনীয় প্রচুর পাঠ আত্মস্থ করে ফেলা দরকার; যেন সুযোগে কাজে লাগানো যায়। আবেগের বশে কারামত বুঝাতে গিয়ে যেন মিথ্যার আশ্রয় না নিই—যা আখেরে মুখোমুখী সংলাপে চারপাশের শত্রুদের সামনে আমাদের হারিয়ে দেবে। দেখা যাবে, সশরীরে কিছু উপকার করতে পারলামই না, বরং এখানে বসে বসে হারছি। জয়ের আশা তাহলে কিভাবে করব?
আমরা হয়তো সাংগঠনিকভাবে কখনও এক হতে পারব না, তবে স্পিরিচুয়াল লেভেল এক করে নিতে পারি। তো পরস্পরে এই সূত্রে সমমনাদের সাথে হৃদ্যতা বাড়াতে পারি। মুসলিম দেহের অঙ্গগুলোর দূরত্ব কমিয়ে আনতে পারি। আমাদের সভা-সেমিনারগুলো যেন কেবল দলীয় পরিসরে সীমিত হয়ে না পড়ে। ইস্যু যেহেতু এক, তাই সবাই আসুক, সবাই থাকুক, সবাই বলুক।
টলটলে পানির নীচে ভারতের বিষাক্ত শৈবাল আর উপরে ভাসমান রঙিন কাশ্মির
একজন দাঈ এমতাবস্থায় ভিনদেশিদের আয়োজিত ফোরামে কথা বলার সুযোগ হাতছাড়া করবে না। জাতিসংঘের একটা অধিবেশনের ভিডিওতে দেখেছি, ফিলিস্তিনের ফাতাহ গ্রুপ বিরাট বিরাট অবদানের গুল-মারছিল। হামাসের কোনও প্রতিনিধি ছিল না। কিন্তু প্যালেস্টাইনি স্টুডেন্ট ইউনিয়নের এক ছাত্র অধিবেশনে ফ্লোর পেয়েই হামাসের পক্ষে তুবড়ি ছুটিয়ে দিল। এত চমৎকার উপস্থাপনা তার, সবাই হা করে শুনছিল।
সংকট থেকে শিক্ষাটা নেওয়া, দখলদারদের টেকনিকগুলো বুঝতে চেষ্টা করা, চারপাশে কারা তাদের তা দিচ্ছে তাদের জানা, নিজেদের দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং এমন পরিস্থিতি সামনে এলে আমরা কী করতাম, ভেবে রাখা দরকার।
সবশেষে এইসময় আমাদের তাহাজ্জুদ যেন কাজা না হয়, আর দোয়ায় অশ্রু যেন শুকায়...
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:২৮