শেষ ব্লগ লিখেছি আড়াই মাস আগে। এই আড়াই মাসে মনযোগ দিয়ে ব্লগ খুব একটা দেখাও হয়নি। ব্লগ আমার এক প্রশান্তির জায়গা, ব্লগ আমার এক বিশ্বস্ত বন্ধু, বইয়ের মত যা আমাকে সবসময় পাশে থেকেছে। সুখে দুঃখে ব্লগকে একান্ত আপন করে নিয়েছিলাম। বৈচিত্রময় চিন্তা চেতনার বহিঃপ্রকাশের এক চিরন্তন প্ল্যাটফরম হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ব্লগ। স্বপ্নের পিছে ছুটতে ছুটতে বিগত আড়াই মাস ব্লগে ঢুকার সুযোগ পর্যন্ত হয়নি। কিন্তু আবারো স্বপ্ন আমাকে ফাঁকি দিয়েছে। ঘরের কাছের তারাগুলো কেন এত দূরে? স্বপ্নের খুব কাছাকাছি গিয়েও লক্ষ্য ছুঁতে না পারার কষ্ট বারবার আমাকে প্রমিথিউসের শাস্তির মত ঠুকরে ঠুকরে হৃদপিন্ডকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করছে। না তারপরও আমি স্বপ্ন দেখে যাই। গেলোটিনে শিরোচ্ছেদের হুকুম আসার পরেও আমি স্বপ্ন দেখে যাবো।
কিছু বিষয় নিয়ে লেখার খুব ইচ্ছা। কিন্তু ব্যর্থতার জিঞ্জিরে আটকা পরে আমার শুধু লেখকস্বত্ত্বা নয়, সমগ্র অস্তিত্বই হতাশার চোরাবালিতে ডুবে যেতে বসেছে। তবুওতো জীবন থেমে থাকেনা। জীবনের স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করেনা। তাই আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখছি। স্লাইকোন থেমে গেছে। এবার ঘুরে দাঁড়ানোর নিরন্তর প্রচেষ্টা। সাইকোলজি আমার প্রিয় বিষয়। এর অনেক ভাগ আছে। সোশ্যাল থেকে শুরু কনজিউমার সাইকোলজি পর্যন্ত। আমি আমার স্বপ্ন নিয়ে আবার ফিরে আসবো। প্যারাসাইকোলজি একটা মজার বিষয় যা অক-সাইন্স হিসেবে থেকেছে। বিজ্ঞানীরা কিছু বিষয়ের কোন ব্যাক্ষায় খুঁজে পায়নি।
এবার আসি আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা, ইতিহাস আর জনজীবন নিয়ে। হাজার হাজার মানুষ সমুদ্রে ভাসছে। দুই দেশে শত শত বাঙ্গালীর গণকবর পাওয়া গেছে। এসব নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে। এই দায় কার? অবশ্যই সরকারের। সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশি মারা যাচ্ছে। কোন কিছুর বিহিত নেই। সব গুলামী চুক্তি হচ্ছে। যে দেশের শত মিলিয়নের বেশি মানুষ বস্তিতে বাস করে। যে দেশ নাগরিকদের নূন্যতম স্যানিটেশনের ব্যবস্থা করতে পারেনা। যে দেশে প্রায়শই কৃষক, তাঁতি আত্মহননের পথ বেছে নেয়। যে দেশের ৪০ ভাগ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। যে দেশ অধিকাংশ সোশ্যাল ইনডেক্সে আমাদের থেকে পিছিয়ে। সেই দেশের কাছ থেকে আমাদের ঋণ নিতে হয় শুধু স্যাটালাইট স্টেট এবং গোলামি করবার জন্যই।
১৯৭৪ এর দূর্ভিক্ষ, রক্ষীবাহিনী, বাকশাল, কুইক রেন্টালের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার দূর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ গণহারে পাচার, নির্বিচারে মানুষ হত্যা, মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার কেড়ে নেওয়া, এছাড়াও আরো অজস্র বিষয়। তবে কিছুটা আশার কথা হল এর মধ্যেও দেশ কিছুটা এগোচ্ছে। কাজের সুবাদে দেশের কমপক্ষে ২০ টি জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরার সুযোগ হয়েছে। দেশে বিদ্যুৎ উপচে পড়ছে কিন্তু উপজেলা আর গ্রাম পর্যায়ে বিদ্যুতের কোন উন্নতি নেই। যা হয়েছে ঢাকা মহানগরীতে আর জেলা শহরগুলোতে। এখন একটা উপজেলা শহরে চাকুরীর সুবাদে বাস করছি। সেখানে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বড়জোর ১৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে। আর ১০ ঘন্টায় নেই। গ্রামের অবস্থাতো আরো খারাপ।
এখন বিদ্যুৎ সরবারহ ব্যবস্থা সেকেলে এইসব বলে জনগনকে বুঝানোর প্রয়াস চালাচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ বিদ্যুৎ সরবারহ ব্যবস্থাও বুঝেনা, আর ন্যাশনাল গ্রীডে কত মেগাওয়াট যোগ হল সেটাও বুঝেনা। সাধারণ মানুষ বুঝে সুইচ দিলে বাতি চলবে, ফ্যান চলবে, মোবাইল চার্জ দিবে এইসব। স্রষ্টা কোন জাতি যেরকম, তাদের জন্য সেরকম রাষ্ট্রব্যবস্থা নির্ধারণ করে দেন। আসলে আমরাই জাতি হিসেবে ভালোনা। আমরা এরকম রাষ্ট্রব্যবস্থাই ডিজার্ভ করি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:৩১