somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মার্ক্স এবং ফ্রয়েডের থিউরিঃ বাস্তবতা এবং প্রাসঙ্গিকতা।।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক সময় অনেক কিছু লিখতে ইচ্ছে হয়। কিন্তু ব্যক্তিগত দূর্বলতা, সময়ের সুবিন্যাসের অভাব আর সামাজিক-রাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর জন্য লেখা হয়ে উঠেনা। কবিতা লিখতে পারিনা। কারণ ছন্দের অন্তঃমিল খুঁজে পাইনা। কিছু বিশ্লেষণমূলক লেখা আর ছোটগল্পই আমার সম্বল।

আজ আমার বিশ্বাসবোধ থেকে দুইটা বিষয়ের অবতারণা করতে চাই। অনেকেই দুটো বিষয়কেই বালখিল্যতা মনে করেন। ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়। কিন্তু এগুলোই বাস্তবতা। Exception may not be an example- কথাটি কে বলেছিলেন এই মুহূর্তে মনে নেই। অবশ্য গুগলে দেখলেই পাওয়া যাবে। প্রকৃতপক্ষেই ব্যতিক্রম কোন উদাহরণ হতে পারেনা। যেমনটি দূর্ঘটনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

প্রথমেই আসবে কার্ল মার্ক্সের কথা। তিনি সবসময় বলেছিলেন সবকিছুই একটি বিষয়কে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়। সেটা অর্থ, পুঁজি, মূলধন, বিত্ত যে নামেই অভিহিত করিনা কেন। সবকিছুর পেছনেই এই বিষয়টা জড়িত। সব সংগ্রামের মূল হচ্ছে শ্রেণী সংগ্রাম। সবকিছু একে কেন্দ্র করেই ঘুরছে। আমরা যদি Altruism বা নিঃস্বার্থ দানের কথা চিন্তা করি তাহলে মার্ক্সের নীতি মার খায়। যদি আব্রাহাম মাসলোর হিয়ারার্কি অফ নিডস এর কথা মনে করি তাহলে প্রথমেই আসে জৈবিক সকল চাহিদার ফুলফিলমেন্ট। তারপর সেফটি নিড, এসটিম নিড, সামাজিক স্বীকৃতি... সবশেষে আসে সেলফ একচুয়ালাইযেশন বা আত্ম-পরিপূর্ণতা। এই আত্ম-পরিপূর্ণতা বা সেলফ একচুয়ালাইযেশন এর জন্যসর্বপ্রথম যে শর্তটি পূরণ করতে হবে তার জন্য প্রয়োজন অর্থ বা পূঁজি। তাই আমরা এক্ষেত্রে দেখতে পাচ্ছি অর্থ বা পূঁজিই হচ্ছে সবকিছুর জ্বালানি।

এবার আসি সিগমন্ড ফ্রয়েডের কথায়। ফ্রয়েডের অনেক কথাকে অনেকেই অবান্তর মনে করে থাকেন। সিগমন্ড ফ্রয়েড সাইকোএনালাইসিসের জনক। সর্বোপরি তিনি সাইকোলজির একজন পাইয়োনিয়ার। তাঁর হাত ধরেই সাইকোলজির আজকের এই অবস্থান। ফ্রয়েডের মতে, মানুষ দুইটা মৌলিক ড্রাইভ দ্বারা পরিচালিত হয়। একটা হচ্ছে এরোজ, যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় জৈবিক আকাঙ্ক্ষা পূরণের তীব্র বাসনা। আরেকটি হচ্ছে থানাটোজ, যার অর্থ দাঁড়ায় মৃত্যু বা ধ্বংসের বাসনা।

এরোজের জন্য মানুষ সবকিছু অর্জনের চেষ্টা করে। জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি। শিশুরা এরোজ পূরণ করে মায়ের নিপুল সাক করে দুগ্ধ পানের মাধ্যমে। পরবর্তি সময়ে এরোজ পূরণের জন্য অর্থ উপার্জন, ক্যারিয়ার, ভাল গার্লফ্রেন্ড, ভাল জীবনসংগী খুঁজে। সামাজিক কারণে এরোজের সাইকো-সেকচুয়াল দিকটি অনেকটা চেপে রাখে মানুষ। আর এজন্যই মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। এটাকে বলে সাবলিমেটেড বা অবচেতনে লুকিয়ে রাখা ড্রাইভ। এরোজের আরেকটা নাম আছে- দ্য ড্রাইভ ফর প্লিজার। এরোজের জন্যই মানুষের মধ্যে পাশবিকতার জন্ম নেয়। সামাজিক বন্ধন, রীতিনীতি, আইন-আদালত, নৈতিকতা পাশবিকতাকে দমন করে রাখে।

এবার আসি থানাটোজের বিষয়টিতে। প্রত্যেক মানুষ তার মনের মধ্যে, অবচেতন মনে মৃত্যুর চিন্তা ধারণ করে। মানুষের ধ্বংসাত্মক আচরণ এই থানাটোজ ড্রাইভ থেকেই সৃষ্টি। হতাশা হচ্ছে থানাটোজের আরেকটি রুপ। ফ্রয়েডের ফ্রাষ্ট্রেশন-এগ্রেশন হাইপোথেসিস রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে হতাশা থেকেই সকল আগ্রাসন আর ধ্বংসাত্মক আচরণের সৃষ্টি। সব ধরণের ভয়ও হচ্ছে এই মৃত্যু ভয় বা থানাটোজের ছ্বদ্মাবরণ। মানুষ সব ধ্বংসের দিকে ছুটে যায় এই থানাটোজের কারণে।

সবশেষে আমি আমার মন্তব্য দিয়ে শেষ করতে চাই। যে যাই বলুকনা কেন,মার্ক্স এবং ফ্রয়েড দুইজনই মানুষের মানবিক এবং অমানবিক দিকসমূহ, চাওয়া-পাওয়া এবং সামাজিক, রাজনৈতিক আর রাষ্ট্রীয় জীবনের গূরুত্বপূর্ণ দিকসমূহের মৌলিক ভিত্তির সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ভিত্তির উপর আলোকপাত করেছেন। মার্ক্সের পূঁজির থিউরিই আমার জীবনের বাস্তবতা। ফ্রয়েডের থানাটোজ থিউরিটাও রয়েছে। এর জন্যই আপাতঃদৃষ্টিতে সব সুবৃত্তি থেকে পিছিয়ে পড়ছি।

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×