আমরা কি মানুষ নাকি মুখোশ ......
মানুষ জাতিকে চেনা বড়ই কঠিন ......বাইরে এক ত ভিতরে আর এক, কার মন কখন কি বলে কি যে চায়
বুজা বড়ই মুশকিল ....তবুও আমরা মানুষ জাতি হিসাবে ও চেস্ট
"আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বিবেক দিয়েছেন; কু প্রবৃত্তি দেন নি। পশুদেরকে
কু প্রবৃত্তি দিয়েছেন; বিবেক দেন নি।
আর মানুষকে কু প্রবৃত্তি ও বিবেক উভয়টি দিয়েছেন।
তাই মানুষের বিবেক যখন কু প্রবৃত্তির উপর প্রাধান্য পায় তখন সে
ফেরেশতাদের সমপর্যায়ে পৌঁছে যায়। আর যখন তার কু প্রবৃত্তি বিবেকের উপর
প্রাধান্য পায় তখন সে পশুর স্তরে নেমে যায়।”
আমাদের বর্তমান সময়ে মানুষের মধ্যে কু প্রবৃত্তি বিবেকটাই সব সময় ই জাগ্রত থাকে ...
তাই ত সমাজের আজ এত আধপতন......
এই অধপতনের মুল কারন হল ভারতীয় সংস্কৃতির কুপ্রভাব...... বাংলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে
ভারতীয় সংস্কৃতির কুপ্রভাব। পরিবারগুলো ভেঙে যাচ্ছে সমাজের সর্বস্তরে শুরু হচ্ছে নৈতিক অধঃপতন।
হু হু করে বাড়ছে হিন্দি স্টাইলে অপরাধ। মাদকের ব্যবহার ও বিকৃত যৌনাচার।
আমরা সর্বনাশা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ভাবতে বাধ্য হচ্ছি, এ দেশে কবে না জানি ধর্ষণকে শিল্পের মর্যাদা
দেয়া হয়।
আজ আমাদের বালক-বালিকারা মাতৃভাষার পরিবর্তে হিন্দিতে কথা বলছে। কিশোর-কিশোরীরা লেখা পড়া
বাদ দিয়ে প্রেম করার জন্য উথালপাথাল করছে। তরুণ-তরুণীরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা বলে
সারা দিন কোথায় যে হারিয়ে যাচ্ছে, তা আল্লাহই ভালো জানেন। বেশির ভাগ তরুণ-তরুণী বিবাহবহির্ভূত
অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। আবার এসব সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী না হয়ে ক্ষণস্থায়ী হচ্ছে অনৈতিকতার
কারণে। সকালে এক প্রেমিক তো বিকেলে আরেকজন। অন্য দিকে ছেলেরা তো আরো একধাপ এগিয়ে তাদের
বান্ধবী বা প্রেমিকাদের গলগ্রহ হয়ে পড়ছে। তারা মেয়েদেরকে প্রলুব্ধ করছে তাদের ব্যয় নির্বাহের জন্য।
কোমলমতি মেয়েরা প্রায়ই পরিবার থেকে টাকা চুরি করে তাদের প্রেমিক প্রবরের হাতে তুলে দিচ্ছে। মাঝে
মধ্যে দেখা যাচ্ছে, একটি ছেলেকে নিয়ে একাধিক মেয়ে কলহ-বিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। অন্য দিকে একটি
মেয়েকে নিয়ে একাধিক ছেলের বন্য লড়াই তো আদিমকালেও ছিল তবে সাম্প্রতিককালে তা সীমা অতিক্রম
করেছে।
গ্রামের একটি মেয়ে কিংবা শহরের একটি নিন্মবৃত্ত পরিবারের মেয়ে অনায়াসেই অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে
তুলছে তার বাপ-চাচার বয়সী ধনাঢ্য কোনো লোকের সাথে। জৈবিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মোটা
অঙ্কের মাসোয়ারারজন্য তারা এসব কাজ করছে। আর এসব নোংরা বিষয় নিয়ে তাদের কোনো লজ্জা
বা হায়া নেই।
অনেকে বরং গর্ব করে তাদের কীর্তিকলাপের রগরগে কাহিনী বান্ধবীদেরকে বলে বেড়ায়। ফলে
ভাইরাসের মতো এই সামাজিক ব্যাধিটি দিনকে দিন সমাজকে গ্রাস করছে। ছেলেরাও পিছিয়ে নেই।
তারাও খুঁজে বেড়ায় ধনাঢ্য বয়সী মহিলাদের এবং পেয়েও যায়। সম্পর্ক স্থাপন করার পর তারা ঢং
করে ডাকে আন্টি। এ ক্ষেত্রে মেয়েদের তুলনায় তারা থাকে নিরাপদ। একজন বয়স্ক পুরুষের সাথে
কিশোরী মেয়েদের দেখলে সমাজ সহজেই সন্দেহ করে বসে। অন্য দিকে আন্টির সাথে কোনো
কলেজপড়–য়া তরুণকে দেখলে তুলনামূলক সন্দেহ হয় কম।
আর পরিবারের অভ্যন্তরে বাড়ছে পারস্পরিক সন্দেহ, অবিশ্বাস, হানাহানি। কেউ কাউকে বিশ্বাস করছে না।
কেউ কাউকে মর্যাদা দিচ্ছে না,আবার কেউ কারো প্রতি নির্ভরও করতে পারছে না। ফলে পরিবারগুলো
বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।সমাজ থেকে মায়া-দয়া উঠে যাচ্ছে। শ্রদ্ধাবোধ,গুণীজনকে সম্মান, মুরব্বিদের সমীহ করা
এসব এখন কেতাবি ভাষা......
ভারতীয় সংস্কৃতির এই সব কুপ্রভাব গুলু স্টার প্লাস, স্টার জলসা, জি বাংলা, সনি, এমটিভি,
জিটিভি প্রভৃতি সিরিয়ালগুলো দেখানো হয় । আপনি যদি ওদের প্রচারিত সিরিয়ালগুলো দেখেন,
তবে প্রথমেই আপনার নজরে আসবে মহিলাদের কুটনামি সম্পর্কে। কিভাবে বউ শাশুড়িকে পরাজিত করবে
বা কিভাবে ননদ,জা, দেবর, শ্বশুর, স্বামী, নিজের গর্ভজাত ছেলেমেয়ে, কাজের লোক, অফিসের সহকর্মী প্রমুখের
সাথে কুটনামি করতে হয় তা আপনাকে শিখিয়ে ছাড়বে। আপনি যদি পরপর দু-তিন দিন দেখতে থাকেন, তবে
আপনার নফসে আম্মারা আপনাকে ওই টিভি চ্যানেলগুলোর সেবাদাস বানিয়ে ছাড়বে।
আপনার খাওয়াদাওয়া, প্রাকৃতিক কর্মাদি এবং নিদ্রা সব কিছুই আপনি প্রণতি দিতে থাকবেন
ওইসব অনুষ্ঠানের জন্য। এরপর প্রকৃতির নিয়মে আপনি যা দেখছেন তা বিশ্বাস করতে থাকবেন।
বিশ্বাসের ওপর ভালোবাসা জন্ম নেবে এবং এক সময় আপনার ভালোবাসার বস্তুগুলো রোপণ
করার জন্য আপনি উঠেপড়ে লাগবেন।
কুটনামি থেকে আপনি চলে যাবেন পরকীয়ায়। রগরগে সব কাহিনী দেখার পর আপনার জিভে
পানি চলে আসবে। কিভাবে দেবর ভাবীর সাথে, পুত্রবধূ শ্বশুরের সাথে, শালিকা দুলাভাইয়ের সাথে,
গৃহকর্তা কাজের লোকের সাথে, গৃহকর্তী পিয়ন-ড্রাইভার-দারোয়ানের সাথে পরকীয়ার নামে অবাধ
যৌনাচার করে একেকটা বাড়ি বেশ্যালয়ে পরিণত করে ফেলছে তার বাস্তব চিত্র দেখতে পাবেন।
আগেকার দিনে অনৈতিক সম্পর্কের কোনো দৃশ্য চিত্রায়িত বা অভিনীত হলে শেষ পরিণতি দেখানো
হতো নীতি-নৈতিকতার পক্ষে। অনৈতিক সম্পর্কের পাত্রপাত্রীরা হয় দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হতো,
নয়তো নির্ঘাত কোনো অপঘাতে মারা যেত। মাঝে মধ্যে সামাজিক বিচার বা কোর্ট-কাচারির বিচারের
মাধ্যমে তাদের শাস্তি দেয়া হতো; কিন্তু ইদানীং সব কিছু দেখানো হচ্ছে উল্টোভাবে। এখানে অনৈতিক
কাজের নায়ক-নায়িকাদের গগনচুম্বী সফলতা আপনাকে মন্দ কাজের দিকে অবশ্যই প্রলুব্ধ করবে।
এরাই ভালো ব্যবসায় করছে। সুন্দর বাড়িতে থাকছে। সমাজ ও রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ সব দায়িত্ব পালন করছে
এবং জনগণের নেতা হয়ে যাচ্ছে। আচ্ছা বলুন তো, আপনি কি এসব কাণ্ডকারখানা বরদাশত করতে
পারবেন? দোহাই আপনার! খুব ভালো করে চিন্তা করুন এবং আপনার মনমানসিকতা আমাদের জানান।
এরপর আপনি কিশোর-কিশোরীদের নষ্টামিমূলক সিরিয়াল দেখতে থাকুন এবং নিজের ১৩-১৪ বছরের
সন্তানসন্ততি কিংবা আত্মীয়পরিজনের কথা ভাবতে থাকুন। কিশোর-কিশোরীরা প্রথমত, এমনভাবে
পোশাক পরে যাতে করে তাদের শরীরের গোপন অঙ্গগুলোর ভাঁজ এবং অবস্থান আপনি সহজেই
দেখতে এবং বুঝতে পারেন। এরা প্রায়ই নিতম্ব দুলিয়ে আপনাকে আকর্ষণ করবে। কখনো দুই পা
ফাঁক করে এমনভাবে নাড়াতে থাকবে যাতে আপনার দৃষ্টি, মন ও চিন্তা বিশ্বলোক থেকে ছুটে এসে
ত্রিভুজের অস্তিত্বে বিলীন হতে চাইবে। তারা বুক দুলিয়ে, ঠোঁট নেড়ে এমনভাবে তাদের অভিব্যক্তি
প্রকাশ করবে, যাতে করে আপনি প্রলুব্ধ হয়ে তাদের প্রতি এক ধরনের নিষিদ্ধ আকর্ষণ অনুভব করবেন।
আপনি ৬০ কিংবা ৭০ বছরের বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা হওয়ার পরও সঙ্গী বা সঙ্গিনী হিসেবে ১৩-১৪ বছরের কিশোর-
কিশোরীর সঙ্গ পাওয়ার জন্য পাগল হয়ে যাবেন।
এখানেই শেষ নয়, ভ্রষ্টাচার এবং বিকৃত মানসিকতার উলঙ্গ দৃশ্যগুলো আপনি দেখতে পাবেন কোমলমতি
শিশুদের ড্যান্স বা নৃত্য প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে। কতই বা ওদের বয়স হবে বড়জোর ৮ বা ১০ বছর!
এসব শিশু জোড়ায় জোড়ায় নৃত্য পরিবেশন করে। একটি ছেলে-মেয়ে একান্ত গোপনে যেসব যৌন
সুড়সুড়িমূলক কর্মকাণ্ড করতে লজ্জা বোধ করবে, সেসব কর্মকাণ্ড প্রকাশ্যে করে দেখানো হয় এসব
শিশুর মাধ্যমে। তাদের প্রতিটি নৃত্যের মূল মুদ্রা হলো কে কত জোরে তার মধ্যপ্রদেশ দোলাতে পারে
এবং কে কত দক্ষতার সাথে নিজোট উল্টিয়ে-পাল্টিয়ে দীর্ঘক্ষণ ধরে তার দুই পা ফাঁক করে রাখতে পারে।
তারপর তারা চোখে, মুখে, ঠোঁটে ও বুকে যৌনতার ঝড় তুলে বিভিন্ন ইঙ্গিতপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি করে আপনাকে
প্রলুব্ধ করবে তার বয়সী শিশুর দিকে অনৈতিকভাবে তাকানোর জন্য এবং আপনি যদি না-ও তাকান
তবে আপনার কিশোর-কিশোরী বা বালক-বালিকা পুত্র-কন্যা তো তাকাবেই। আর এক শ্রেণীর মানুষও
তাকাবে আর এরা হলো আপনার পিয়ন, ড্রাইভার, দারোয়ান এবং অশিক্ষিত শ্রমজীবী যুবক-যুবতী।
ফলে কোনো এক অসতর্ক মুহূর্তে আপনার ঔরসজাত বালক বা বালিকাটি যদি কারো দ্বারা নিগ্রহের বা
লালসার শিকার হয়েই বসে তবে আপনি কাকে দায়ী করবেন.........
তাই অনুরুদ ভারতীয় চ্যানেলগুলো বন্ধ করুন। ওদের সমাজ পচে গেছে। তাই ওদের কোনো কিছু আমাদের অনুসরণ
করার দরকার নেই। চীন, জাপান বা ইউরোপীয় দেশগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখুন, ওসব দেশে এসব দেখানো
হয় না......
কার্টেসী : এম পি মাওলা রনি