দেশে মুক্তিযোদ্ধা বারছে আর বারছে । এতে আমার কোন আপত্তি নাই। আগে যাদের খুজে পাওয়া যায়নি তাদের এখন খুজে তালিকা ভুক্ত করা হচ্ছে, এটাত ভালো কথা। কিন্তু প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা , প্রকৃত দেশ প্রেমিকরা, যারা দেশের জন্য শুধুই দেশের জন্য জীবন দিতে গিয়েছিল, দিয়েছে তাদের মনে হয় আর খুজে পাওয়া কষ্টসাধ্য । এটা আমার ধারণা । ধারণাটা কিভাবে জন্ম নিলো তা পরে বলছি। তবে যাদের কে পাওয়া যাচ্ছে তাদের যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়া উচিত বলে আমার মনে হয়। আমি জানি কথা গুলোর সাথে আপনারা ও একমত হবেন। সহমত না হলেও কাছাকাছি মতামত থাকবে। এটা আবলিলায় বলা যায়। তবে মুক্তিযোদ্ধা খুজতে ভুল করে রাজাকার কে মুক্তিযোদ্ধা বানালে সেটা শুধু বেদনাদায়ক হবে না ,দুর্ভাগ্য জনক হবে বলে আমি মনে করি। আজকাল প্রায়ই রাজাকারের পরিবারের সদস্যরাও মুক্তিযোদ্ধা সাজার চেষ্টা করছে।
দেশে মুক্তিযোদ্ধ নিয়েও রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে। কে মুক্তিযোদ্ধা ছিলো ,কে মুক্তিযোদ্ধ করেও রাজাকার/অপরাধী, কেউ আবার রাজাকার থেকেও অপরাধি নয়। এ নিয়ে নানা মুনি’র নানা মত আছে। বলতে গেলে শেষ হবে না। তবে আমি মনে করি যারা মুক্তিযোদ্ধো করেছে তাকে তার প্রাপ্য সম্মানটা দেয়াই উত্তম।আমি কোন দল সমর্থন করি না, এটা মিথ্যা কথা। আমরা সক্রিয় ভাবে হউক আর মনে মনে হউক, কোন না কোন হল কে ঠিকই সমর্থন করি। তাই বলে বিরোধী দলের কোন ভাল কাজকে মুল্যায়ন করব না । এটা কেমন কথা??????
দেশ স্বাধীনের আগে বঙ্গবন্ধু দেশের,বাঙ্গালীদের জন্য যথেষ্ট করেছে।দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি হয়েছেন “বঙ্গবন্ধু”।তিনি বাঙ্গালীদের যা দিয়েছেন তার এই অবদান কথা অস্বীকার করাটা গোড়ামি ছাড়া আর কিছুই নয়। হ্যা “বাকশাল” হয়তবা তার একটা ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। তার আসেপাশে সে সময় কিছু “দুধের মাছি” জুটেছিল যারা তাকে এটা করতে প্রলোভিত করেছে। আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, এত বড় নেতা কেন লোকজনের কথা শোনে ভূল করবে? আমি আপনাকে প্রশ্ন করছি ,বাকশাল যে খারাপ সিদ্ধান্ত ছিল। এটা আপনি কি ভাবে বুঝলেন? সেই সময় হয়ত এ সিদ্ধান্তটায় আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি, সামাজিক মুক্তি এককথায় সার্বিক মুক্তির পথ করে দিত।
দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হল। আবার বঙ্গবন্ধু নিহত হল। ক্ষ্মতার পালা বদলের মাধ্যমে আলোচনায় আসলেন মেজর জিয়া। তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধের সেক্টর কমান্ডার।স্বাধীনতা যোদ্ধে যার নামে একটি ফোর্স ছিল। মুক্তিযোদ্ধে অবদানের জন্য যিনি পেয়ে ছিলেন “বীরউত্তম” উপাধি। কিন্তু এই বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কেও অনেকে প্রশ্ন তোলেন। তাচ্ছিল্যের সাথে বলেন “ তিনি ও নাকি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন!” বুঝিনা যারা মুক্তিযোদ্ধের কথা বলেন , মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চেচামেচি করেন। তারা কি করে আবার একজন সেক্টর কমান্ডার কে নিয়ে এভাবে কথা বলতে পারেন???
রাজাকারদের বিচার করা হবে।বিচার ব্যবস্থা এতই খারাপ যে, আমরা তাদের বিচার করতে পারছিনা। রাজাকার,আলবদর দের আবার নতুন নামকরন হয়েছে। এই নতুন নাম হয়ত হাজার হাজার রাজাকার কে মুক্তির পথ দেখাচ্ছে।এত বিচার বুঝিনা,গুলি করে মারা উচিত এইসব রাজাকারকে। কিসের মানবাধিকার? মানব মারতে মানবাধিকারের প্রশ্ন আসুক, কুকুর মারতে মানবাধিকার কি?
কিন্তু না আমদের রাজনীতি বিদরা এটা নিয়ে রাজনীতি করবেন । তাই বিচার হয়ে গেলেত ইস্যু শেষ হয়ে যাবে। তখনত আবার জনগণের উন্নয়ন করতে হবে।যেটা করার ইচ্ছা নাই।
বার বার মুক্তিযোদ্ধের কথা বলা হবে।যা শুধুই ফায়দা নেয়ার জন্য। সে দিন দেখলাম একজন মুক্তি যোদ্ধার নামে করা স্টেডিয়ামের নাম বদলে কোন এক নেতার চাচার নামে রাখা হয়েছে। এই না হলে স্বাধীনতা প্রেম!!!!
এখনকার রাজনীতিবিদ দেরকে আর কি বলব! কয়জন কে নিয়ে বলব? বলতে গেলে বলা শেষ হবে না।এদের সম্পর্কে আমার কিছু প্রশ্ন আছে-
*তারা কিভাবে রাজনীতি করে ?
*তারা কার নামে রাজনীতি করে?
*তারা কি দেশের জন্য আদৌ কিছু করেছে?
*যদি দুই নেত্রীর নামের প্রথম অথবা শেষ অংশ কেটে ফেলা হয়। তবে তারা কয়টা ভোট পাবে?
*কয়টা লোক তাদের ভালোবাসে?
*কয়টা লোক তাদের ভালোবাসে ভোট দেয়?
আসোলে এই দুই নেতা নিজের কোন গুন দিয়ে রাজনীতি করেনা। এরা হল দুজন মহান নেতা, দেশ প্রেমিকের লাশের উত্তরসূরি। কিন্তু যোগ্য উত্তরসূরি নয়।এরা যাদের আদর্শের কথা বলে তা নিজেই মেনে চলে না। এরা দেশকে নয় ,ক্ষমতাকে ভালোবাসে।
দেশকে ভালোবাসলে তারা নিজেদের মধ্যের গোলমাল, স্বার্থ নিয়ে টানা হিচড়া, কাদা ছুড়াছুড়ি করত না। যেখানে দেশের লোকর দ্রব্য মূল্য,বিদ্যুত সংকট, বন্যা ইত্যাদি সমস্যায় জীবন চলে যাচ্ছে । সেখানে তারা, এটা- ওটার নাম পরিবর্তন করা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাত না।কাজের অভাবে মানুষ যখন ক্ষেতে পাচ্ছেনা। তখন তারা এ-সে আন্দোলন দিয়ে এই ক্ষুধার্ত লোকের সংখ্যা বাড়াচ্ছে। নিজের দলের লোকদের এত অন্যায় , অপকর্ম সহ্য করত না। নিজের স্বার্থের জন্য এরা যুবসমাজকে ব্যবহার করত না। দেশের উনয়নের কথা চিন্তা না করে। তারা পরে আছে উল্টা-পাল্টা ইস্যু নিয়ে।
আমার মনে হয় তারা যাদের নামে রাজনীতি করে ।যেই মহান নেতাদের নামে রাজনীতি করে। তারা বেঁচে থাকলে নিজের দলের এসব অপকর্ম দেখে রাজনীতি ছেড়ে দিত।
কিন্তু আমরা এইসব নেতাদের একজনার কথা বললে আরেকজন কে উপেক্ষা করছি। আমাদের যেভাবে বোঝানো হচ্ছে আমরা সে ভাবেই কাজ করছি। একবার চিন্তাও করছি না,কোনটা ভালো কোনটা খারাপ। যদি বিরোধী দলের মত কে সহ্য করতেই না পারি ।তাহলে আমাদের গণতন্ত্রের দরকার কি?
আসলে নেতার আসনে বসলেই নেতা হওয়া যায় না। নেতা তৈরি করা যায় না। নেতা জন্মায়। কাল থেকে কালে নেতা জন্মায়। হে মহান নেতা, তোমরা আমাদের আলোর পথে নিয়ে যেতে এসে কোথায় ফেলে গেলে। বাঙ্গলী আজ তোমাদের শূন্যতা অনুভব করছে। কবে আমার আবার নতুন কোন নেতার দেখা পাব?? আর কত অপেক্ষা?????
আমাদের অতীত ইতিহাসের কথা।এইসব নেতার কথা, আমাদের দূর্নিতির কথা, আমাদের রাজনীতির কথা, আমাদের আর একটা নেতার জন্য অপেক্ষার কথা বললে আসলে তার কোন শিরনাম দেয়া যায় না।
পরের বলগ :দেশে আজ আমাকে যদি মুক্তি্যোদ্ধা খুজতে বলা হয় তাহলে আমি একজন কে খুব সহজেই…………………………।।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ৩:২৮