somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন হিরো আলম আর আমাদের হীনমন্যতা :(( :(

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হিরো আলমের নাম শুনে নি এমন মানুষ বর্তমান বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া মুশকিল । তার নামের ইতিহাস তার চরিত্রের মতই বৈচিত্র্যময় । আশরাফুল আলম ওরফে ডিশ আলম ওরফে হিরো আলম । হয়তো অনেকেই জানেন না, কিন্তু হিরো আলমের নাম শুধু বাংলাদেশেই নয়, ভারত এমনকি ভারতকে ছাড়িয়ে পাকিস্তান পর্যন্ত পৌঁছে গেছে । এই লোকটার নাম বেশিরভাগ আসে হাস্যরসাত্মক কারণে, সমালোচনার কারণে । কি নিয়ে সমালোচনা ? কি নিয়ে এত হাসাহাসি ? তার চেহারা, তার অভিনয়, তার শারীরিক গঠন-আকৃতি, তার ডায়ালগ ডেলিভারি, তার বাচনভঙ্গি, তার নায়ক হওয়ার হাস্যকর চেষ্ঠা ইত্যাদি ইত্যাদি । হয়তো আমি বা আপনি নিজেও উপরের যে কোন একটি বা অনেকগুলো কারণে এই লোকটাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছি বা করি



হিরো শব্দটি ইংরেজি । এর অর্থ নায়ক আর বড় অর্থে বললে কোন একটি গুণাবলীর ঊর্ধে উঠে যাওয়া মানুষকে বুঝায় । এই হিরো যে সেলুলার পর্দাতেই হতে হবে কিংবা ফ্যান্টাসি জগতেই হতে হবে তাই নয়, বাস্তব জগতেও হিরোরা বাস করে । সত্যিকার অর্থে আশরাফুল আলমরাই হিরো । কারণ তিনি হয়তো লৌকিকতার সাথে মানানসই নয় কিন্তু নির্বাচনে দাড়িয়ে নিজে বুক ঠেকিয়ে প্রতিবাদ হোক কিংবা নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গণধর্ষণ এর শিকার গৃহবধূকে দেখতে চেয়ে সরাসরি আসামীদের ধরতে বলার আল্টিমেটাম দেওয়া কিংবা আরও অনেক কারণই আসলে তাকে হিরোর আসনে বসিয়েছে । হিরোরা যে শুধুই যেহারা দিয়েই হিরো হয় না, এই আশরাফুল আলম তার একটি জলজ্যান্ত প্রমাণ ।

এই লোকটা আরও একবার আলোচনায় এসেছেন অমর একুশে বইমেলায় একটি বই প্রকাশ করে । বইটির নাম, "দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, আমরা সমাজকে বদলে দেবো" । সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই বই থেকে ১০টি লাইন ভাইরাল হয়েছে।

সেই ১০ চুম্বক লাইন হলো-

১. আপনারা শিক্ষিত কাগজে-কলমে, মনুষ্যত্বের শিক্ষা শিক্ষিত লোকের মাঝে তেমন একটা নাই।

২. আমি অশিক্ষিত হয়ে লাত্থি উস্টা খেয়েও বেঁচে আছি, আপনারা শিক্ষিতরা কেন আত্মহত্যা করেন?

৩. আমার চেহারাটা নিয়ে আর কী বলবেন? আল্লাহই তো আমারে বানাইছে। আমি তো বানাই নাই। আমি কী করবো? এই চেহারা চেঞ্জ তো করতে পারবো না৷

৪. জীবনের সব ব্যবসা আমি টাকা দিয়ে করেছি, শুধু নির্বাচন ছাড়া।

৫. শিক্ষিতরা যে আমারে নিয়ে মজা করেন, আমার জায়গায় থাকলে তো রিকশা চালায়ে খাইতেন। আমি তো তাও চেহারা খারাপ বলে মিডিয়ায় আইছি, আপনার তো চেহারা মোটামুটি। আপনি তো তাও পারতেন না।

৬. আমি আমার ভক্তগো একবার ধন্যবাদ দিলে সমালোচকগো দুইবার ধন্যবাদ দেই। তারা আমার ভিডিও খিয়াল করে দেখে। ঘুমাতে যাওয়ার আগেও দেখে, উইঠেও দেখে।

৭. সারটিফিকেটধারী শিক্ষিত লোক হইলো ভীতু। নিজেরা তো কিছু করবেই না, কেউ করতে দেখলেও গা জ্বলে। এরা যে কি চায় নিজেরাই জানে না।

৮. আমি পরিত্যক্ত সন্তান হয়ে চানাচুর বেচে, সিডি, ডিশ লাইন, মিউজিক ভিডিও করে ১০-১৫টা মানুষের দায়িত্ব নিতে পারি, আপনি শিক্ষিত হয়ে কিছু পারেন না কেন?

৯. আমি হিরো আলম আমার ভিডিও দেখে খালি মানুষ হাসবে এই জন্যে কাজ করি। আমার মাইনসের হাসিমুখ দেখতেই ভালো লাগে। এই সব ভাইরাল, সমালোচনা এসবের জন্যে কাজ করি না।

১০. আমি সকল বিধবা মা, পরিত্যক্ত নারী ও শিশুদের জন্যে একটা সংস্থা করে যেতে চাই। যাতে, আমার মায়ের মতো কারো মার যেন মাইর খেয়ে রাস্তায় বাচ্চা নিয়ে রাত কাটানো না লাগে।”

বইটি কেউ কিনতে চাইলে অমর একুশে বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী অংশে ১৯৬ নম্বর তরফদার প্রকাশনীর স্টলে পাবেন (তথ্যসূত্রঃ দেশ রূপান্তর)

উপরের কথাগুলো একবার ধৈর্য্য ধরে পড়ে দেখুন, সত্যি জীবনঘেঁষা কিছু দৃষ্টিভঙ্গি আপনার বদলাবেই বদলাবে । লোকটা নিজেও জানে তার চেহারা খারাপ, মোট কথা তার সীমাবদ্ধতাগুলো সে জানে এবং সে অবলীলায় সেগুলো স্বীকারও করে । অথচ আমরাই কিনা নিজেদের সীমাবদ্ধতাগুলো লুকিয়ে রেখে তাকে নিয়ে হাসাহাসি করি । জী হ্যাঁ, এতেই ফুটে ওঠে আমাদের হীনমন্যতা :(
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৪৩
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×