কারাগার নামটির সাথে আমরা সকলে কমবেশী পরিচিত। কিন্তু কেউ কি উন্মুক্ত কারাগারের কথা শুনেছি ? যেখানে কেইস টেবিলে কয়েদিকে শুনতে হয়না কয়েদিরা সাবধান (জেলার সাহেবের আগমনে) তবে প্রায় শুনতে হয় সাবধান বিমান হামলা যেখানে ফাইলে ঘুমাতে হয়না কিন্তু হাজারো রাত নির্ঘুম কাটাতে হয়। যেখানে পরিবারের কাউকে ছেড়ে থাকতে হয় না কিন্তু হঠাৎ পরিবারের কোন সদস্যকে চিরতরে বিদায় জানাতে হয়।যেখানে প্রত্যেক কয়েদি উন্মুক্ত কিন্তু স্বাধীন নয়। কারা নিরাপত্তা বলে কোন নীতিমালা এই কারা কর্তৃপক্ষের কাছে নেই। যার প্রত্যেক কয়েদি সর্বোক্ষন আতঙ্কিত। এখানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকাল-সন্ধা হাটু উচু করে বসিয়ে গর্ণনা করা হয় না। কিন্তু কয়েদি সংখ্যা বৃদ্ধিতে গণহত্যা বা জেল হত্যা চালাতে গণনা করা হয়। এই কারাগারের কারারক্ষীর দায়িত্ব নিয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে মানবতাবাদী দাবিদার বর্বর ইসরাইল সেনাবাহিনী। আর সেই কারাগারটির নাম ফিলিস্তিন বা গাজা। (কাল্পনিক)
গাজা এমনি একটি জনপদের নাম যাকে কারাগার বলতে দ্বিধাবিভক্তিতে পড়তে হয় না। অবরুদ্ধ অপদস্ত এক জনপদের নাম গাজা। এই গাজা বাসিরা যেন নিজ দেশে পরবাসী। গাজাবাসীকে দেখতে হয়েছে হাজারো হত্যাযজ্ঞ, ধংসলীলার মহাযজ্ঞ। সর্বশেষ জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ইসরাইলি তিন কিশোরকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে গাজাবাসীদের উপর নির্মম মানব হত্যা ও ধংসলীলা শুরু করে ইসরাইল। আর এর জন্য দায়ী করে গাজায় প্রতিনিধিত্বকারী হামাসকে। হামাস বিষয়টিকে অস্বীকার করেছে যে, তারা অপহরণ করেনি। অনেক বিশ্লেষকদের সন্দেহ- ইসরাইলের নীল নশকা বাস্তবায়নের জন্য এটি একটি অজুহাত মাত্র। এজন্য ইসরাইল এক ফিলিস্তিনি নাগরিককে ধরে নিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ইসরাইল এখন নতুন বায়না ধরেছে, হামাসের কৃত সব সুড়ঙ্গ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা আক্রমন চালিয়ে যাবে। এ সুড়ঙ্গগুলো দিয়ে গাজাবাসী তাদের অবরুদ্ধ জীবনকে কিছুটা হলেও স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে।
এ পরিস্থিতিতে ফিরে তাকাই একটু ইতিহাসের পাতায়, ফিলিস্তিন ভূমিতে আরব-ফিলিস্তিনিরা সপ্তম শতাব্দীরও আগে থেকে বসবাস করে আসছিল। জাতিসংঘ ১৯৪৭ সালে ইউরোপ-আমেরিকা নিয়ন্ত্রিত সেই ভূমিকে ভাগ করে ইহুদিদের জন্য ইসরাইল এবং আরবদের জন্য ফিলিস্তিন নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্র তৈরীর সিদ্ধান্ত নেয়। ইসরাইল ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করলে আরবরা তা প্রত্যাখ্যান করে, শুরু হয় যুদ্ধ, যা চলছে আজঅবধি। ইসরাইল জাতিসংঘ নির্ধারিত নতুন ফিলিস্তিনের অনেকন জায়গা দখল করে নেয়, জাতিসংঘ ১৯৪৭ সালে সীমান্ত ফেরত যেতে বললেও ইসরাইল তাতে অস্বীকৃতি জানায়। অন্তত সাত লাখ ফিলিস্তিনিকে ভিটে ছাড়তে হয়। তারপর থেকে আরও অনেক যুদ্ধ ও ধংসযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:৩৮