হালাল হারামের ব্যাপারে প্রচলিত বিধি হচ্ছে:
১. সবকিছু হালাল তবে যা কিছু নিষেধ করা হয়েছে তা ছাড়া।
২. শুকর এবং সব হিংস্র (কার্নিভোরাস) নিষিদ্ধ। অবশ্য গুইসাপ খাওয়া জায়েয।
৩. যে সব খাদ্য (বা প্রাণী) কোন দেবতার উদ্দেশ্যে নিবেদিত, তা নাজায়েয।
৪. যে সব হালাল পশুর রক্তপাতহীন মৃত্যু হয়েছে তা নাজায়েয।
৫. যে সব হালাল পশু জবেহ করার সময়ে আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়নি বা স্মরণ করা হয়নি তা নাজায়েয।
৬. কোন খাদ্যে হারামের মাত্রা যা-ই হোক না কেন, তা সম্পূর্ণ না জায়েয।
উক্ত ৫নং বিষয়ে আমার মত হলো: আল্লাহর নামের শর্ত -এর তাৎপর্য্য হলো আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কোন নামে জবেহ করলে হবে না - এটি বোঝানো। সুতরাং অন্য কোন নাম নেয়া না হলে, আল্লাহর নাম নেয়া হোক বা না হোক, রক্তপাত হলে তা খাওয়া জায়েয হবে। এমনকি, গুলি করে মারলেও। কারন, গুলিতে রক্তপাত হয়, পরিমাণ যা-ই হোক না কেন।
আর নগণ্য মাত্রায় হারাম বা এ ধরনের কোন কিছুর উপস্থিতিকে নগণ্য হিসাবেই বিবেচনা করা উচিত। একেবারে পিওর বা নিখাদ হ তে হবে শুধুমাত্র ইসলামী আক্বীদা। অন্য সব কিছুতে অল্প-স্বল্প বেশ কম হতে পারে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, কোন কাপড়ে নাপাকী থাকলে, সেটি যদি যথেষ্ট প্রসস্থ হয়, তাহলে সেই কাপড় পড়ে নামাজ পড়া যাবে। অবশ্য সুযোগ থাকলে চেঞ্জ করে নেয়া ভাল।
অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এ সব হালাল-হারামের বিধি-বিধান নাযিল হয়েছে মাদানী যুগের শেষ পর্যায়ে। ইসলামী সমাজের উচ্চতর মান হিসাবে আমরা এগুলোকে মেনে নিব এবং যেখানে যতটুকু সম্ভব ফলো করবো। যেখানে বিরুদ্ধ পরিবেশ সেখানে এসব নিয়ে অহেতুক দুশ্চিন্তা করার দরকার নাই। এসব বিধি-বিধান নাযিল হওয়ার পুর্বে যেসব সাহাবী মৃত্যু বরণ করেছেন, বা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের ঈমাণ ও ইসলাম অপূর্ণ ছিলো কি? সবকিছুতে জায়েয-নাজায়েয খোঁজা এক ধরনের দ্বীনি শূচিবায়ুগ্রস্থতা! যতক্ষণ না স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ও সুস্পষ্টভাবে কোন কিছু নাজায়েয প্রমাণিত হবে – ততক্ষণ পর্যন্ত তা জায়েয। এটিই হলো শরিয়তের মূলনীতি।
এ বিষয়ে আল্লামা ইউসুফ কারযাভী’র ‘ইসলামে হালাল ও হারামের বিধান’ পড়া যেতে পারে।