সাঁতারের পোশাক খুলে ট্রাউজার আর জ্যাকেট পরে নিল আকিব। নাইম এম এম পিস্তলটা দ্বিতীয়বার চেক করলো। গুলি, সেফটি ক্যাচ, সাইলেন্সার সব ঠিক আছে। সাব মেশিন গানটা পিঠে ঝুলিয়ে নিল, জ্যাকেটের নিচে। গুলি ভর্তি চারটা ম্যাগজিন দুই হাটুর নিচে আটকে দিল। পাঁচ ইঞ্চি লম্বা ধারালো বার্মিজ চাকুটা চালান করে দিল জ্যাকেটের কলারে।
মৃদু হাসির রেখা ফুটে উঠলো আকিবের ঠোঁটের কোনে। চার বছর আগে থাইল্যান্ডে একটা অপারেশন করেছিল। সেই অপারেশনে মায়ানমারের নাগরিক ম্যাতিং অঝং এর সাথে পরিচয় হয়। বন্ধুত্ব হয়। পাঁচ ইঞ্চি বার্মিজ চাকুটা সেই গিফট করেছিলো। এই চাকুর বৈশিষ্ট্য হল অগ্রভাগে শক্তিশালি এন্টি কগুলেন্ট রিয়াজেন্ট (EDTA) ইউজ করা হয়েছে যা খত স্থান থেকে দ্রুত রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ছরিয়ে যায়। এরপর ভেঙ্গে ফেলে রক্তের রেড ব্লাড সেল না লোহিত কণিকা। যা রক্ত জমাট বাঁধার শক্তিকে নিস্তেজ করে দেয়। দ্রুত রক্ত ঝরতে থাকে। সামান্য দুই-তিন ইঞ্চির একটা ক্ষত সুঠাম দেহি যে কাউকে রক্ত ঝড়িয়ে মেরে ফেলতে সময় নেবে সর্বোচ্চ আধা ঘণ্টা।
সুইমিং ব্যাগটা তিনটা ফল আছে এমন এক ক্যাওরা গাছের নিচে দুই ফিট গর্ত করে পুতে রাখল। আশপাশে তাকিয়ে দেখল অনেক গাছেই তিনটা করে ফল ঝুলছে। কোমর থেকে কিচেন নাইফ বের করে গাছে থাকা একটা ফলের উপর নিচ করে অর্ধেক কেটে ফেললো। এখন এই কাটা ফলটাই পুতে রাখা সুইমিং ইকুয়েপমেন্ট খুজে বের করতে সাহায্য করবে।
নাফ নদি দ্বিতীয়বার সাঁতরে পার হবার ইচ্ছা নেই আকিবের, তবু ব্যাকআপ হিসেবে এগুল রেখে দেওয়া। একটা স্পিড বোট ঝেরে দিতে পারলেই ভাল হয়। এ ক্ষেত্রে সাঁতরানোর হাত থেকে বাঁচলেও নাসাকা বা বিজিপির একটা মিসাইলে শেষ হয়ে যেতে পারে আকিবের জীবন। আপাতত ফেরা নিয়ে ভাবছে না আকিব। সেটা অবস্থা বুঝে ব্যাবস্থা নেওয়া যাবে। এক যায়গায় বেশিক্ষন থাকা ঠিক হবে না। এছাড়া অর হাতে সময় ও বেশি নাই। আজ রাতেই যা করার করতে হবে।
ফেইসবুকে বিজিবির নায়েক রাজ্জাকের নাক দিয়ে রক্ত গড়ানো, চোরের মত মাল-সামান সামনে নিয়ে মাথা নিচু ছবি দেখে, উলঙ্গ করে ছবি তোলার চেষ্টা করা হয়েছিল শুনে রাগে ফুসেছে আকিব। একবার ভেবেছিল নিজেই উদ্ধার করবে নায়েক রাজ্জাককে। বিজিবি আলোচনার মাধ্যমে অনেকদুর এগিয়েছে শুনে উদ্ধারের পরিকল্পনা বাদ দিয়েছে। কিন্তু প্রতিশোধের প্রতিজ্ঞা থেকে পিছু হটেনাই।
যে দিন বোটে করে নায়েক রাজ্জাক পা রেখেছে মাতৃভূমিতে, সে রাতেই আকিব সাঁতরে পাড়ি দিয়েছে নাফ নদি। সে এখন মায়ানমারের সীমান্তবর্তী সাগর উপকূলে। এখান থেকে সামান্য দূরে মংডু ২ নং বিজিপি ক্যাম্প। এই ক্যাম্পেই নায়েক রাজ্জাককে বেধে রেখে নির্যাতন করা হয়। সীমান্তবর্তী রাস্তা দিয়ে গেলে তিন কিলো। আকিব যাবে ঘন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে। তাকে পাঁচ কিলো পথ পারি দিতে হবে। এই মুহূর্তে শত্রুর চোখে পরতে চায়না আকিব। গভির জঙ্গলের ভেতর দিয়ে হাঁটছে সে। হাঁটছে বললে ভুল হবে, মধ্যগতিতে দৌড়াচ্ছে। নাইট ভিশন গগলস পরায় দেখতে একটুও অসুবিধা হচ্ছে না। বুক পকেট থেকে ম্যাপ বের করে শেষবারের মত দেখে নিল। প্রবেশ ও ফেরার পথ মুখস্ত, তবু একবার দেখে নেওয়া। ফেরার সময় দেখার সুযোগ নাও হতে পারে
পুরো পর্বটি পড়তে ক্লিক করুন
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:২৬