মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আজকাল এত আলোচনা হয় যে আসলে জিনিসটা কি সেটা নিয়েই ধন্দে পড়ে যাই। নানা মুনির নানা মত থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আমাদের একটি সর্বসম্মত বিশ্বাস থাকা উচিত কিন্তু বাস্তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে একেক জনের একেক ধারণা আবার অনেকের ধারণা সাংর্ঘষিক ও ভাসা ভাসা, তবে বেশির ভাগেরই কোন স্পষ্ট ধারনাই নাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে জিজ্ঞেস করেছি যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আসলে সে কি বোঝে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের কাছে আমি কোন অর্থবহ উত্তরই পাইনি। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রাজনৈতিকভাবে নানান হীন স্বার্থে ব্যবহারের ফলে সত্যিকার অর্থে বর্তমান প্রজন্মের মনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সম্পর্কে সঠিক কোন ধারনা নাই। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমরা ন্যূনতম কিছু আবশ্যিক বিষয়ে ঐক্যমতে আসতে পারিনি যা জাতি হিসেবে খুবই কলঙ্কের এবং লজ্জাজনক। অন্তত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিষয়ে আমাদের সামগ্রিক একটা স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। আমাদের বুদ্ধিজীবীগণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মত একটি সহজ সরল বিষয়কে রকেট সাইন্স এ পরিণত করেছে যার ফলে আমরা বিভ্রান্তিকর ও বিষাক্ত ধারণায় বিশ্বাসী।
ফেসবুকের নিউজফিড দেখলে মনে হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানেই আওয়ামী লীগের সাথে ভিন্নমতের মানুষদের চৌদ্দগুষ্টি তুলে গালাগালি করা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কোন রাজনৈতিক দলের অধিকার নয় এটা বাংলাদেশের আপামর মানুষের অধিকার। স্বাধীনতার বছরে আমরা অনেক বিষয়েই দৃশ্যমান উন্নতি অর্জন করেছি কিন্তু যা করতে পারিনি সেটা হল আশাব্যঞ্জক বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি। আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়ন এর শম্বুক গতি বা নেতিবাচক গতির কারণে আমরা স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
বিঃদ্রঃ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আমি বুঝি 'একটি শোষণমুক্ত ন্যায় ভিত্তিক সমাজ' ব্যবস্থা যেখানে সকল মানুষ তার অন্তর্নিহিত সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারবে'।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৩:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



