বানভাসি আর নদীভাঙা মানুষগুলোর দু:খ-দুর্দশার জন্য কি শুধুই প্রকৃতি দায়ী নাকি দায়ী আমরাও????
কুড়িগ্রামের নাজিম খান, ফুলবাড়ি ও আশেপাশের কিছু এলাকায় দেখতে গিয়েছিলাম। সর্বসান্ত মানুষগুলোকে সান্তনা দেওয়া ছাড়া কিছু করার ক্ষমতা আমার নাই। মনে হচ্ছে আমিই সবচেয়ে বড় অপরাধী।
নাজিম খান এলাকা থেকে বন্যার পানি প্রায় নেমে গেছে কিন্তু নদী ভাঙন চলছেই। তিস্তার পানি এখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। সেই সাথে তীব্র স্রোত নদীর পাড় ভাঙার সাথে সাথে যেন বুকের একেকটা পাঁজড় ভেঙে দিচ্ছে।
সকালে যেখানে দাড়িয়ে এই ছবিগুলো তুলেছি; এখন যখন লিখছি তার কিছুই আর আস্ত নাই। চিরতরে বিলীন হয়ে গেছে নদীর গভীরে। অসহায় মানুষেরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছে কতটা নির্দয়ভাবে তাদের সাজানো সংসার-স্বপ্ন হারিয়ে যাচ্ছে নদীর গর্ভে।
প্রশ্ন হলো- তিস্তার মত মরা নদীতে এতো পানি কি শুধুই বর্ষার পানি???
উত্তরটাও পরিস্কার হলো যখন ফুলবাড়ি যাওয়ার পথে ধরলা নদী পার হচ্ছিলাম। গত সপ্তাহে এ নদীর পানি বিপদসীমার উপরেই ছিলো। কিন্তু বৃষ্টি কমার সাথে সাথে পানিও কমে গেছে। আজ নদী যেন নিরব শান্ত। মাঝিরা এখনও লগি টেলে নৌকা পারাপার করছে।
মাত্র ২০ কিমি দূরত্বের ব্যবধানে দুইটি নদীর চিত্র এতোটা ব্যতিক্রম হতে পারে কি??
উত্তর- ”না”।
তবে নিশ্চিত ভাবে তিস্তার পানি শুধু বৃষ্টির পানি নয়, এ পানি পরম বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের অতিরিক্ত দুষিত পানি। যে পানির স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আমাদের বেচে থাকার আশ্রয় টুকু।
আমরা আর আমাদের নিরবতাই এই সব মানুষের দু:খ-দুর্দশার জন্য দায়ী।
মনে রাখবেন, যারা ত্রান বিতরন করছেন তারা মহানুভবতা দেখাচ্ছেন না; বরং এই সব অভাগী মানুষের কাছে আপনার জমে থাকা ঋণ পরিশোধ করছেন।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:২৯