somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হতচ্ছাড়া তোরা শান্তি পাবি না

১৮ ই মে, ২০০৮ সকাল ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত প্রায় দুই বছরে দ্রব্যমূল্যে নির্মম কষাঘাতে জর্জরিত এ দেশের মানুষ। সবকিছুর একটা ছন্দ থাকে। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের উর্দ্বোগতির কোন ছন্দ নেই। জিনিসপত্রের দাম যে হারে বাড়ছে তাতে কোনভাবেই কোনকিছু মেনে নেয়া যায় না। মানুষের জীবনধারনের মান নিচে নামছে দ্রব্যের দামের সাথে পাল্লা দিয়ে। বেশীরভাগ জিনিসের দামই ডবলের বেশী। যেমন, ২৮ টাকার আটা এখন কিনতে হচ্ছে প্রায় ৪৫ টাকা বা তার বেশী কোন কোন ক্ষেত্রে। ২৩ টাকার চাল ৪৩ টাকা। ২৬ টাকার একলিটার লিকুইড মিল্কভিটা দুধের দাম এখন ৪৫টাকা।

তারপরও সবকিছু চলছিল, কিন্তু সরকার কিছুদিন আগে জ্বালানীর দাম আরেক দফা বাড়িয়েছে। সিএনজির দাম ডবল করেছে। এখন বলছে জ্বালানী তেলের দাম আবার বাড়াবে। চিন্তা করুন কি অবস্থা। একটা দেশের সব দায়দায়িত্ব কি জনগনের কাঁধে তুলে দেয়া উচিত। সরকার কি ভর্তুকি দেবে না? সরকার কিছুদিন আগে ডিজেলে ভর্তুকি দিয়েছে কৃষকদেরকে। কিন্তু কয়টা মাঠপর্যায়ের কৃষক ভর্তুকির টাকা পেয়েছে? এমনও উদাহরন আছে একই পরিবারের পাঁচ ছয়জন সদস্যের নামে ডিজেলের ভর্তুকি দেয়া হয়েছে। খাদ্য দ্রব্যমূল্য বেশী হওয়াতে ফিলিপাইনের সরকার কৃষির উপর ভর্তুকি দিচ্ছে আবার মেডিসিনের উপর ভর্তুকি দিচ্ছে।

আসছে আমনের সময়। সরকার বলছেন বাম্পার ফলন করতে হবে। কিন্তু কি ভাবে? আর তাতে লাভই বা কি? বোরোর বাম্পার ফলন করে কি হলো? মানুষ কমদামে চাল পাবে এই আশা করেছিল। কিন্তু বোরো চাল বাজারে আসার পর আবারও চালের বাজার উর্দ্ধোমুখি। যদি সরকার দোহাই দেন যে এটা ব্যাবসায়ীদের কাজ তবে সরকারের উচিত ব্যাবসায়ীদের কন্ট্রোল করা। অবশ্যই এটা সরকারের দায়িত্ব।

প্রত্যেকটি দ্রব্যের দাম যদি ডবল হয় তবে কি আমাদের বেতন বা ইনকাম ডবল হয়েছে? আমরা কোথায় যাবো? কি ভাবে চলবো। তাহলে প্রতিষ্ঠান গুলোর উচিত বেতন বাড়ানো। অবশেষে সরকার, সরকারী কর্মচারীদের বেতন ২০ ভাগ বাড়াচ্ছে। আর সেই ঘোষনা আসছে আগামী বাজেটে। এই বাড়ানোকে ভিত্তি করে আবারো প্রত্যেকটি জিনিসের দাম আরেক দফা বাড়বে।

আমাদের সমাজে একটা শ্রেণী আছে যাদেরকে কখনই তাদের জীবন ধারণ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। সুতরাং দাম বাড়লেই কি আর না বাড়লেই কি। আর সব রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকরা বড় বড় ব্যাবসায়ী এই শ্রেণীর অর্ন্তভুক্ত। সুতরাং তারা কখনই বুঝতে পারেনা সমাজের কি অবস্থা, দেশের মানুষের কি অবস্থা। কারণ তাদের কোন সর্ম্পক্ততা নেই জনগনের সাথে। তারা কালো কাঁচে ঢাকা গাড়ীতে পুলিশী প্রহরা নিয়ে চলাফেরা করেন। অফিস যান বাসায় আসেন। ক্লাবে যান, আড্ডা মারেন। এরা হলেন সমাজের উচ্চবিত্ত্ব এবং মধ্যবিত্ত্ব।

আর একটি শ্রেণী, যারা গায়ে খেটে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছে তাদের জীবনধারণের জন্য। আজকের খাওয়া তো জোগাড় হলো কালকের খাওয়া কোথা থেকে জোগাড় হবে এই চিন্তায় তারা বিভোর। আবার এদের মধ্যে কেউ কেউ ভালো আছে তুলনামূলক ভাবে একই শ্রেণীর অন্যান্যদের তুলনায়। যেমন একটা উদাহরন দেই: একটি ঢাকা শহরের রিক্সাওয়ালা, তাকে চাল, ডাল অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য কিনতে হচ্ছে রোজ ভিত্ত্বিতে। আজকে যা কামাই করছে তাই দিয়ে কিনছে তার প্রয়োজনীয় জিনিস। সে বলছে, তার মালিক রিক্সাভাড়ার জমার টাকা বাড়িয়েছে, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, তাই ভাড়া বেশী দিতে হবে। প্যাসেঞ্জারকে ভাড়া বাড়িয়ে দিতে হচ্ছে। ১২ টাকার ভাড়া এখন ২৫ টাকা দিতে হচ্ছে (এবং এই রিক্সাওয়ালা ভাড়া বেশী চাওয়ার যথেষ্ট সংগত কারণ আছে)। তাহলে দেখা যাচ্ছে যেহেতু সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে তাই রিক্সাওয়ালাটি তার ভাড়া বাড়িয়েছে এবং আনুপাতিক হারে সে আগের মতই আছে। তার কোন উন্নতি হয়নি আবার অবনতি হয়নি।

তাহলে বিপদের আছে কে বা কারা? সেটা হলো আমরা যারা নিম্ন মধ্যবিত্ত্বরা। আমরা চাকুরী করে সংসার চালাই। প্রতিমাসে একটা লিমিটেড ইনকাম। এর বাহিরে আর কিছু নাই। চাকুরী টিকিয়ে রাখার জন্য যারপর নাই পরিশ্রম করি অফিসে। চাকুরী না করলে খাবো কি? আমাদের বেতন কি তাহলে দ্রব্যমুল্যের সাথে পাল্লা দিয়ে ডবল হয়েছে? হয়নি। খুব কষ্টে পার করতে হচ্ছে দিন। বিনোদনের বাজেট থেকে টান দিয়ে ভরতে হচ্ছে খাদ্যের বাজেটে। অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাতকে সংকুচিত করে জীবনধারন করতে হচ্ছে।

কিন্তু এভাবে আর কতদিন চলবে? আমরা কি আর কোনদিনই শান্তি পাবো না। আমরা আসলেই হতচ্ছাড়া। আমাদের সারাজীবন নির্মম কষাঘাতেই মরতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০০৮ সকাল ১১:৩৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×