বিশ্বের ইতিহাসে একমাত্র বাংগালী জাতি ছাড়া আর কেউ স্বাধীনতার প্রশ্নে এতটা বিভক্ত হয় নি।কারন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেকে বেশির ভাগ মানুষই বিশ্বাস করতে পারে নি।পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনের অন্যত্তম নেতা শেখ মুজিবও কিন্তু দেশ ভাগের পক্ষে ছিলেন না।তাই তিনি স্বাধীনতার ঘোষনা দেন নি।২৫ শে মার্চ সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি ইয়াহিয়ার পক্ষ থেকে ফোন কলের অপেক্ষা করেছিলেন।এমনকি গ্রেফতারের সময়ও তিনি যুদ্ধ করার কোন নির্দেশ দিয়ে যান নি।ইসলাম পন্থী দল গুলো ভারতকে বিশ্বাস করতে পারে নি যেমনটা পারে নি মুজিব।তাই তো তিনি মুক্ত হয়ে ইন্দিরা গান্ধীকে প্রথম বলেছিলেন,"আপনার আর্মিকে কখন ফিরিয়ে নিবেন..?"আর সেই আশংকাই আজ সত্য প্রমানিত হয়েছে। ভারত আমাদের স্বাধীনতা কে গ্রাস করে ফেলেছে।আজকে ১৬ ঈ ডিসেম্বরকে ভারতীয় মিডিয়া ভারতের বিজয় দিবস হিসেবে প্রচার করছে।সম্প্রতি একটা ভারতীয় সিনেমায় বাংলাদেশকে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের ফল হিসেবে বর্ননা করেছে।
.
৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান আর্মির আত্ত্বসমর্পন অনুষ্ঠানেও উপস্থিত থাকতে দেওয়া হয় নি মুক্তিযুদ্ধের সেনাপতি ওসমানীকে।পাকিস্তান বাহিনী আত্ত্বসমর্পন করেন ভারতের জগজিৎ সিং অরোরার কাছে।আত্ত্বসমর্পন অনুষ্ঠানের ছবিতে দেখা যায়....লেফটান্যান্ট জেনারেল নিয়াজি (পাকিস্তান) আত্মসমর্পনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন। তার পাশেই বসে নিয়াজির সাক্ষর অবলোকন করছেন লেফটান্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা (ভারতীয়) । তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে, বাঁদিক থেকে ভাইস এডমিরাল কৃষ্ণন (ভারতীয়), এয়ার মার্শাল হরি চাঁদ দেওয়ান(ভারতীয়), লেফটেনান্ট জেনারেল সগত সিং (ভারতীয়), জেনারেল জে এফ আর জ্যাকব (ভারতীয়), তাঁর কাঁধের ওপর ফ্লাইট লেফটেনান্ট কৃষ্ণমূর্তি (ভারতীয়) তাকিয়ে আছেন। অল ইন্ডিয়া রেডিওর সাংবাদিক সুরজিৎ সেন (ভারতীয়) ডান দিকে মাইক্রোফোন ধরে আছেন।এমনকি জেনারেল ওসমানী আত্ত্বসমর্পনের কথাও তখন জানতেন না।
.
সেনাপতি ওসমানীর মত অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের অত্যন্ত তুচ্ছ জ্ঞান করত ভারতীয় বাহিনী।ভারতীয় অফিসারদের লেখায় সেটা দেখা যায়।৯ ম সেক্টরের প্রধান মেজর জলিলের লেখা থেকে জানা যায় ভারতের জেনারেল অরোরা তাজউদ্দীন ও ওসমানীকে ব্লাডি ইদুর বলে গালি দেয়।
.
কিন্তু মুজিবের অনুরোধেঈ জেনারেল ওসমানী এই সব কথা বাহিরে বলেন নি।৮৩ এর নভেম্বরে বিচিত্রার সাক্ষাতকারে তাকে প্রশ্ন করা হয়,"পাকিস্তানী সৈন্যদের আত্ত্বসমর্পন আপপনার কাছে হলো না কেন??"জবাবে ওসমানী বলেন,"মুক্তিযুদ্ধের এমন অনেক ঘটনা আমি জানি যাতে অনেকেরই অসুবিধা হবে"।চিকিতসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার প্রাক্কালে জীবনের শেষ সাক্ষাতকারে ওসমানী বলেন,"একটা আত্ত্বজীবনী লিখব, সেটা জেনারেল ওসমানীর জীবন গ্রন্থ হবে না,হবে বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস।বইটা শেষ করতে না পারলে আমার মৃত্যুর সাথে সাথে অনেক অজানা ইতিহাস চাপা পড়বে।ফিরে অবশ্যই লিখব,আর কিসের ভয়,কারে ভয়??এক বংগবন্ধুকে ভয় করতাম।সেই লোকটারে কথা দিছিলাম কিছু কিছু কথা বলব না,লিখব না।তিনিও নাই,আমার দেওয়া কথাও নাই।" এক ভাষনে ওসমানী ভারতকে তিন নং শত্রু বলেন।কিন্তু জেনারেল ওসমানী আরর ফিরেন নি।ফিরে এসেছে তার লাশ,তার লাশের সাথে চাপা পড়ে গিয়েছে এক বিশাল ষড়যন্ত্রের ইতিহাস।
.
মুক্তিযুদ্ধের গোপন ষড়যন্ত্র ফাস করে দিবেন হুমকি দেওয়ায় স্বাধীন দেশ থেকেই বাহাত্তুরে গুম হয়ে যান বুদ্ধিজীবি হত্যা তদন্তের প্রধান জহির রায়হান।
.
কিন্তু ভরসা একটাই জাতি আজ সচেতন হয়েছে।তারা আর হলুদ মিডিয়ার উপস্থাপিত ইতিহাস বিশ্বাস করে না।সত্যের বিজয় একদিন হবেই,তাতে আরো প্রান যাবে তবে যাক....!!
.
তথ্যসূত্র :বিচিত্রা,নভেম্বর ৮৩
অরক্ষিত স্বাধীনতাঈ পরাধীনতা
মূলধারা ৭১
নিয়াজীরা আত্ত্বসমর্পনের দলিল।।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪০