শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে বরফাচ্ছাদিত সাইবেরিয়া থেকে
হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ঝাঁক ঝাঁক পরিযায়ী পাখি
এই সুজলা-সুফলা শ্যামল বাংলার শোভা বর্ধন করে;
হাওর-বাওর-বিলের জলে জলকেলি, খুনসুটি, প্রেমে, কামে মত্ত থাকে।
শীত শেষে পাখিরা ফিরে যায় স্ব-ভূমে, অনেক পাখির আর কখনও-ই ফেরা হয় না
চোরাশিকারির বিষটোপের শিকার হ’য়ে ঠাঁই হয় শহরের হোটেলের প্লেটে।
যদি মানুষের মাংস খেলে যৌবন দীর্ঘায়িত হ’তো
বাঙালি অপরের সন্তান তো বটেই, নিজের সন্তানের মাংস রেঁধেও চেটে-পুটে খেতো!
বন্যা কিংবা উপকূলের জলোচ্ছ্বাসের কালে মানুষ যখন প্রাণ বাঁচাতে
ঘর-বাড়ি ফেলে চ’লে যায় নিরাপদ আশ্রয় শিবিরে
তখন কিছু লোক রাতের অন্ধকারে জনশূন্য বাড়ির মালপত্র লুটে-পুটে নিয়ে যায়।
যদি সম্ভব হ’তো, বাঙালি পূর্ণিমার জ্যোৎস্না লুটে
ছিট কাপড়ের মতো কেটে কেটে বেচে দিত!
ঘন কুয়াশার রাত্রে যখন গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে
কিছু মানুষ ম’রে যায়, কিছু মানুষ রক্তাক্ত-আহত হ’য়ে যাতনায় কাতরায়
তখন একদল পাষণ্ড উপকারীর ছল ধ’রে মৃত ও আহত যাত্রীর শরীর হাতরে
টাকা, গহনা ও অন্যান্য সম্পদ লুটে নিয়ে যায়।
যদি সম্ভব হ’তো, বাঙালি উদ্ভিদ ও প্রাণির জীবন বিপন্ন ক’রে
বাতাস প্যাকেটে ভ’রে বিক্রি ক’রে দিত!
বাঙালি গুদামের ধান, চাল, পিঁয়াজ, আলু, চিনির মতোই
অন্তরে মজুদ ক’রে রাখে হিংসা, বিদ্বেষ, শঠতা, কপটতা, লালসা।
বাঙালির পক্ষে সম্ভব হ’লে গ্রীষ্মের রোদ গুদামে মজুদ রেখে
শীতকালে কেজি দরে বিক্রি ক’রে দিত!
ছেলেবেলায় ঘুম পাড়ানোর সময় মা ছড়া বলতেন-
‘ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো
বর্গী এল দেশে
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে
খাজনা দেব কিসে?’
এখন আর বর্গীরা হানা দেয় না বাংলায়, এখন বাঙালি-ই বর্গী
এখন বাঙালি-ই মগ-পর্তুগীজ জলদস্যু, বাঙালি-ই বৃটিশ-পাকিস্তানী শোষক
বাঙালি-ই দেশের সোনার ধান লুটে, বিদেশের ব্যাংকে ডলার জমায়।
মেঘ পান করলে যদি পিপাসা মিটত
এই পোড়া বাংলায় আর বৃষ্টিই হতো না!
বাঙালি অন্যের জমি ঠেলে খায়, মস্ত বড় পাহাড় খায়, নিবিড় অরণ্য খায়
আস্ত একেকটা নদী খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলে।
বাঙালির পক্ষে সম্ভব হ’লে ফুল তোলা নকশীকাঁথার মতো
ঐ রাশি রাশি গ্রহ আর নক্ষত্র ভরা আকাশটাও গিলে খেত!
১৬ জানুয়ারি, ২০২৪
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:১১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


