somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিছিল খন্দকারের কবিতা

২২ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শরীরে বিদ্যুৎ চমকায়
............
এই যে ঘূর্ণিঝড়
পাতা ওড়ে
সন্ধ্যাটা বাঁশঝাড় হয়ে শনশন করে বাজে।
জানালার কাঁচে লাগে বৃষ্টির ছাট,

বুকের মধ্যে বোনের
ছোটো সে নরম পায়ের দাগ,
তাতে জমে ওঠে পানি!

বাইরে ঝড়,
ধুলো ওড়ে, পাতা-
শরীরে বিদ্যুৎ চমকায়!

আচানক ফুঁয়ে কার নিভে যায় মোম

গ্লামার নেই
..........
নদীর নিকটে যাই-
সেখানে অনন্তের ঢেউয়ে দোলে সূর্য,
তারই সাথে পঁচা ফল, মরদেহ, কাক-!

নষ্ট ঘড়িতে থেমে আছে বিগত মাসের পহেলা তারিখ
সাদা শার্টে উৎসব দিনের হলুদ স্মৃতি
তালের শাঁসের দাগ, ভ্রমনের কষ।

চুলের মধ্যে এসেছে থেমেছে ধুলোর পর্যটন,
ইট ও কীটের জীবন নিয়ে
পাড়ায় পাড়ায় ফুরফুরে
ঘুরছেন জনাব রাজনীতি।

প্রেমের ধাঁধা ও কাদায় ঢুকে যার জীবনের চাকা আটকে গেছে
ব্যাচেলর মেসে সে নিজেই স্লিপিং পিল, বালিশের নিচে
ভ্যাকুয়াম জীবন তার পেন্ডুলাম হয়ে দোলে, দোলে রে...!

বৈরাগ্য
.............

ঘুমের মধ্যে ভিজতে ভিজতে উঠে দেখি নমনীয় দিন
চোখের আওতায় উড়ছে মেঘ, হাত নাড়ছে বৃষ্টি
চশমার কাঁচ মুছে রাস্তায় মোড়ে
সামান্য ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছেন রিটায়ার্ড বুড়ো
বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে তার পেনশনের কাগজ

পাশের বাড়ির টিনের চাল বেয়ে
অবিরাম ঝরে যাচ্ছে বারিধারা
কেউ তা পাতিলে ধরে রাখছে না

কে এক গোবেচারা
বর্ষায় ডুবে থাকা ম্যানহোলে পড়লো
আর হো হো করে হেসে উঠলো কারা

এসব ঘটনার দাপটে সন্ধ্যা পালিয়ে গেলো
বৃষ্টি থামলো,
নামলো রাত, কেউ আমাদের সাথে নামলো না!

কাঙ্খিত কণ্ঠস্বর
....................
বাতাসের দিন এলো
বই থেকে উড়ে যেতে চাইছে পড়া, না পড়া পৃষ্ঠারা

ট্রেন মিস করার পর প্লাটফর্মে বিমর্ষ আলস্য নিয়ে
বসে থাকা যাত্রীর মতো এই মেঘলা দুপুর-
তাকে সুর না দেওয়া একটা বোবা লিরিক মনে হয়।
বিকেলের দিকে সে গান হয়ে উঠবে কি?

তাহলে বিকেল নাগাদ আসবে কেউ?
এ ঘর পাবে পাখালীর কাকলীমুখর বাগানের মর্যাদা?

এসব প্রশ্ন পেরিয়ে সন্ধ্যায় হাত থেকে ফসকে পড়ে কাপ
তার চুরমার শব্দকে পরিচিত কণ্ঠস্বর মনে হয়।

ইচ্ছা করে, সন্ধ্যা জুড়ে ভাঙি সহস্র চায়ের কাপ
কাঙ্খিত কণ্ঠস্বর নিয়ে তারা বাজুক,
বাজতে থাকুক!

দৃশ্যের বিভৎস নন্দন
.............
প্রাসঙ্গিক অনিচ্ছায়
মৌন থাক দুপুরের প্রকৃত কারণ।
দাঁতে নখ কাটার উদাসিনতা
সূর্য ডোবার আগে কিছুটা বিষন্নতা থাক,
এতে তার অধিকার আছে।

দুঃখ থেকে কান্না ছেঁটে নিয়ে
এই বসে থাকার সমূহ ভার
নিয়ে সাবলীল নদীর আঁধারে
তরঙ্গ তুলে ডুবছে নুড়ি
আমার করতল থেকে তাকে ছুড়েছে যে কে
বেখেয়ালে!

তার ভাবনায় যে নৈরাজ্যময় গুঞ্জরণ
জলের তুমুল ক্রোধে তাতে জ্বলুক আগুন মোহনায়
কেননা দৃশ্যের নন্দন নিয়ে কী বিভৎস দাবানলে
পুড়ে গেলে বন
কেউ কেউ ছবি তুলে রাখে!

ঝড়ের অ্যাডভেঞ্চার
....................
নীখিল নীরব হয়ে আছে-
বাতাস দিচ্ছে ঝাট রাস্তাঘাট
এই শ্যাম ভোরে।
শহরে বৃষ্টি
তাতে গোসল সেরে
গাছপালা
হাওয়ায় ঝাড়ছে চুল।
আর ঘরে ঘরে ওড়ে পর্দা জানালার
তারা উড়ে যেতে চায়।

এই বজ্রবৃষ্টি, মেঘের চিৎকার
এই ঝড়ের অ্যাডভেঞ্চার শেষে
উঠবে যে রংধনু, তাতে পা দুলিয়ে ইচ্ছা বসার!

ছায়া
.................
যে কোনো মাঝরাতে-
দূরাগত অন্ধকারে
অভ্যস্ত বাদুরের পাখার ঝাপটা চকিতে জাগালে
দেখি মুহূর্তে আকাশেই ফুরিয়া যাওয়া পতিত উল্কার আভাস,
শুনি নৈঃশব্দে সুঁই চালানো রাতজাগা সেলাই মেশিনের আওয়াজ
মনে পড়ে হাতের মাজনে ঝকঝকে পাতিলে
ঠিকরে পরছে ভোরের রক্তাক্ত রোদ।
কুঠারে ধার দেওয়ার সময়ে ছিটকে পরা দৈব স্ফূলিং
খেলা করে চিন্তায়।
আমি জীবনের অতীত দৃশ্যবলী ভাঁজ করে সাথে নিতে নিতে
ঝরা ফুলের মতো ফুপু মা'র শুকিয়ে যাওয়া
ফ্যাকাশে চিবুক মনে করি-
আর তার হাতে লাগানো আম গাছের নিচে এসে ভাবি
ফুপুর ছায়ায় দাঁড়িয়েছি!

ইবাদত
.........
সারা দিন জিগিরে জিগিরে
সারা রাত ধ্যানে জায়নামাজে
আমার সকল পূণ্য পাপ
তুলে দেব প্রভুর জাহাজে।

দীর্ঘ পথ
...........।
দীর্ঘ পথ, খানাখন্দ আছে
চাকা ফস্কালে হাজারখানেক ফুট নিচে-
কার ড্রাইভিং কতো ভালো, বোঝা যাবে
ওই যে আবছা চূড়া, ওখানে পৌঁছানো গেলে।

আপাতত চোপা বন্ধ, নজর সামনে কবিবর!

অভিশাপ
..................
আমি যা জানি নাগো, তাও ঠিকই জানি
ফুলের অভিশাপে তোর ভাঙল ফুলদানি!

কবিতা লেখার এক দশক
...................................
নিজেকে শূন্যে ছুঁড়ে
ধরছি দক্ষ হাতে,
সহসা তাকিয়ে দেখি
দাঁড়িয়ে জলপ্রপাতে!

ফুঁসছে জলের ধারা
নামছে তুফান তুলে
এ খেলা সাঙ্গ হবে
হাতটা ফসকে গেলে।

নাকি হাত ছেড়ে দেবে?
ঢের হলো দেখাশোনা
মহা এক ঘূর্ণি তুলে
বলছে জলের ফনা!

তাকেই ধমকে বলি
ছিলাম ধীবর বটে
চেনা আছে ঘূর্ণিঘড়ো
জন্মতো নদী তটে।

যুবতী স্রোতের তোড়ে
টলছে কুটিল ফনা
দেখছে পরখ করে
ছোবলে সম্ভাবনা!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×