প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর মানুষের সৃষ্টিশীলতার চূড়ান্ত প্রদর্শনীর মিশ্রণ মানুষের মনকে কতোটা তৃপ্তি দিতে পারে তা নাকি ব্যাংককে না গেলে বোঝা যায় না। গত এক-দেড় বছর যাবতই বন্ধুরা মিলে অনেকবার প্লান করেছি ব্যাংককে ঘুরতে যাবো কিন্তু সবার একসাথে সময় সুযোগের মিশ্রণ হচ্ছিল না কিছুতেই। সামনে আমার বিয়ে ঠিক হওয়ার পর পরই বন্ধুরা সব জেঁকে ধরল যে শেষ(!!)বারের মত বন্ধুরা একসাথে ঘুরতে যেতেই হবে। তাদের ধারণা বিয়ের পর তারা আর আমাকে পাবে না, পেলেও বউ সহ! যদিও আমি জানি বন্ধুদের ছাড়া আমার একদিনও চলবে না তবু ঘোরার ব্যাপারে সায় দিতে মোটেই দেরি করলাম না। কেন যেন মনে হচ্ছিল বিয়ের পর পরাধীন হয়ে যাব তাই একটু স্বাধীনতা উপভোগ করা যাক, ক্ষতি কি?
কিন্তু প্লান করতে গিয়ে পরলাম বিপাকে, কোন হোটেলে উঠব, কত টাকা লাগবে, কত ক্যাশ নিয়ে যাব, এতে হবে কি না এইসব আর কি। বিশেষকরে হোটেল বুক না করে গেলে জার্নি করে গিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে হোটেল খুঁজবো কোথায় ? আবার শুধু হোটেল বুক করার জন্য ট্র্যাভেল এজেন্সিকে এত টাকা সার্ভিস চার্জ দেয়ারও কোন মানে হয় না। নেট ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখি আমার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ক্রেডিট কার্ড দিয়ে দেশে থেকেই অনলাইনে দেশের বাইরে হোটেল বুক করে ফেলা যায়! বিশাল দুশ্চিন্তা নামল মাথা থেকে। আরও মজা হলো, হোটেলে ওয়াক-ইন রেটের থেকে অনলাইন বুকিং এ বিশাল ডিসকাউন্টও আছে - প্রায় ৩০-৪০%! আর পায় কে! সহজেই হোটেল বুক করে ফেললাম অনলাইনেই কোনও ঝামেলা ছাড়াই ! প্লেনের টিকেট ম্যানেজের দায়িত্ব ছিল জুবায়েরের কাঁধে, সে ঝামেলাও মিটল।
এ কয়েকদিন মাথায় শুধু ব্যাংকক ঘুরছে। এ শহরের একদিকে যেমন বন্য সৌন্দর্য অন্যদিকে নাকি ঝকঝকে শহর। প্রাচীন কালের গৌরবের সৃতিগুলোও নাকি চকচক করছে এখনও বহাল তবীয়তে। শহরটি দর্শনীয় সব টেম্পলে ভর্তি। Temple of the Emerald Buddha এর কথা তো অনেক শুনেছি। আরেকটি ইচ্ছে আছে The Escape Hunt Experience Bangkok নামক একটি থিম পার্কে যাওয়ার। আর দারুণ সব নাইট লাইফ এক্সপেডিশন তো রয়েছেই
যেহেতু হোটেল বুক আগেই করে ফেলেছি সুতরাং বেশ ভালো অংকের টাকা নিয়েই যাচ্ছি। এ সুযোগে ভাবছি বিয়ের শপিং ও করে আনব
কাল আমাদের ফ্লাইট, বন্ধুরা মিলে যাচ্ছি ব্যাংকক সুতরাং এইমুহুর্তে মাথায় শুধু ব্যাংককই ঘুরছে। আমাদের জন্যে দোয়া করবেন আর ভালো থাকবেন সবাই। ফিরে এসেই ট্রিপের অভিজ্ঞটা জানাতে পারব আশা রাখছি।