গল্প বা উপন্যাসে ‘বলি’ দেয়া প্রথা সম্পর্কে পড়েছি। ভবিষ্যৎ বিপদ বা অনিষ্টের হাত থেকে রক্ষা পেতে পশু বলি দেয়া হত। বলি দেয়ার প্রকার আবার অনেকরকম। পশু বলি দেয়া ছাড়াও বলি দেয়া হতো ধন সম্পদ, পুত্র-সন্তান, কুমারী নারী বা বিধবা নারীকে। বেশিরভাগ বলির শিকার হতে হতো অসহায়-অবলা কেউ একজন। এই অবলা কেউ একজনের জীবননাশের বিনিময়ে শক্তিশালীরা নিজেদের ভবিষ্যৎ ভাগ্য সুপ্রসন্ন করে নিত।
নতুন আরেক প্রকার বলি দেয়ার প্রচলন হলো এবছর। স্বপ্নকে বলি দেয়া। শিক্ষার্থীদের জীবন আর স্বপ্নকে বলি দেয়া হচ্ছে এখন থেকে। জাতির ভবিষ্যৎ সুন্দর করার জন্য বলা হলো এরপর থেকে নাকি আর ঢাবিতে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়া যাবে না।
সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে যুগোপযোগী কিন্তু তা এভাবে কেন? ২০১৪ ব্যাচের স্টুডেন্টরা এবছর অ্যাডমিশন টেস্টর প্রিপারেশন নেয়ার জন্য সময় পেয়েছিল মাত্র ২/৩ মাস। অথচ বরাবরের মত তাদের লড়তে হয়েছে ১৮/২০ মাসের প্রিপারেশন নেয়া সেকেন্ড টাইম স্টুডেন্টের সাথে। ফলাফল ৪৮% চান্স পেল সেকেন্ড টাইমাররা। অন্য দিক থেকে বললে ৪৮% চান্স পাওয়ার যোগ্য ফার্স্ট টাইমাররা বাদ পরে গেল।
সেই অবলা ৪৮% ছেলেমেয়েদের কথা কে ভেবেছে? কেন তাদেরকে এক যুগের লালিত স্বপ্নকে বলি দিতে হচ্ছে? এটা কি কোন অবিচার নয়? কি অপরাধ তাদের?
এমন একটি সিদ্ধান্ত কোন একদিন অবশ্যই নিতে হত। তবে সিদ্ধান্ত যখনই নেয়া হোক না কেন তা অত্যন্ত ২-১ বছর আগেই শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেয়া উচিৎ ছিল। যেন তারা এব্যাপারে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে পারে। এরকম হুট করে একটা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার অর্থ এই শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে বলি দেয়া।
রিজওয়ানুল মিথুন
১৭ অক্টোবর, ২০১৪