মন খারাপের ঝাঁপি খুলে দিয়ে নিঃসঙ্গ এক চাঁদ
প্রতিশোধের স্পৃহায় বাতাসে ছড়ায়
একরাশ উচ্ছৃঙ্খল জোছনা।
শূন্য ঘরের বদ্ধ জানালার কাঁচ ভেদ করে
হুড়মুড়িয়ে সে আলো গ্রাস করে নির্জনতার নির্মেঘ মন।
পিচ ঢালা হাইওয়ের ঠিক মাঝখানে
অযত্নে খুঁড়ে রাখা ক্ষত বিক্ষত গর্তের মত
নির্দোষ স্মৃতির যানবাহন অতিষ্ট এক জ্যাম বাঁধিয়ে
ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে রাখে অতীতমুখী পথচারীদের।
সে গর্তের চেয়েও ঢের গভীর এক তল হীন কুয়ো
চাঁদ হয়ে গেঁথে আছে মন আকাশের বুকে।
কেউ কেউ শখের বশে খনি ভেবে ঝাঁপ দেয় সেখানে
মুক্তো-মনির খোঁজ করে করে ঘোলা পানিতে ক্লান্ত হয়,
অথচ তারা সমুদ্রের নীলে পা ভিজিয়ে
ঝিনুক খোঁজেনি কখনো।
চাঁদের হলদে আলোয় -
নীল সাগরের চঞ্চল ধূসর ঢেউ
প্রবল উন্মত্ততায় আছড়ে পরে
সুদূর অতীত থেকে ভেসে আসে বর্তমানের খেলাঘরে।
বহমান নদীর মত প্রবাহিত স্মৃতি,
আশ্রয়েের শেষ সন্ধানের খোঁজে মেশে হৃদয় মোহনায়।
সেলুলয়েডে বন্দীফিতার অস্পষ্ট ছবির মত
চেনা গড়নের সব অচেনা মুখের কলাকুশলীরা,
মাঝরাত কাঁপিয়ে উন্মাতাল প্রদর্শনের মঞ্চ মাতিয়ে
চুরমার করে ভেঙ্গে ফেলে রাতের ভুতুরে নির্জনতা।
সদ্য ঘুম ভাঙা দিকভ্রষ্টেরা আর্তস্বরে চিৎকার করে বলে -
কে কোথায় আছো?
দয়া করে বন্ধ করো এসব!
আঁটঘেটে বন্ধ করে দাও
নষ্ট চাঁদটার মন খারাপের ঝাঁপি!
মেঘের সাথে মিলিয়ে গাঢ় ছাই রঙা চাদরে
চাঁদটাকে কেউ ঢেকে দিয়ে যাও প্লিজ!
নয়তো কালচে কাপড়ে বেঁধে দাও আমার এ দুটি চোখ
তবু মলিন কাফনে জড়িয়ে আমাকে ঠেলে দিওনা চন্দ্রলোকের গুহায়!
ব্যতিক্রম আজ শুধু -
রোজকেরে তামাশায় অতিষ্ট নির্ঘুম মূর্ত মানবী।
উদ্ধারকাজে এগিয়ে আসা স্বৈরাচারী সঙ্গীর দিকে তাকিয়ে
সাহসী দৃঢ় কন্ঠে সে প্রতিবাদ করে বলে ওঠে -
ভুলেও আজ কাছে এসোনা প্রিয়তম!
তোমার শরীরে, তোমার নি:শ্বাসে মিশে আছে যে জোছনার কপটতা;
সে মিথ্যে আলোতে মোমের মত গলিয়ে পুড়িয়ে
আমাকে নি:শেষ করার সাহস করোনা তুমি!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুন, ২০১৮ রাত ১২:০২