somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নেপাল ভ্রমন - (৩য় পর্ব)

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ সকাল ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন পৌছতেই একটি ফরম পেলাম এবং আমার ফরম পুরণ করা বাবদ না কি জন্য যেন আমার কাছে ৫০ টাকা চাইল। আমি বললাম, রশিদ ছাড়া কোন টাকা আমার পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।
আমাকে বলল, তাহলে নিজে নিজে ফরম পুরণ করে দিতে হবে। সাধারণত যারা ৫০ টাকা দেয় তাদের পুরো ফরম পুরণ কর্তে হয়না।
আমি বললাম, দিন আমার ফরম আমিই পুরণ করতে পারবো।
আমাকে বলল, ফরম পুরণে কোন প্রকার ভুল হলে ৫০০টাকা জরিমানা দিতে হবে।

আমি নির্ভুল পুরণ করা ফরম তাদের হাতে দিলাম। তারা আমার ফরম ভাল ভাবে চেক করে দেখলো। আমার পাসপোর্ট চেক করলো। মেশিনেও চেক করলো এবং আমাকে বলল, মেজ সাহেব আসুক সে না আসতে আমাকে যেতে দেয়া যাবেনা তাতে মেজ সাহেব তাদেরকে গালমন্দ করবে।
আমি বসে রইলাম। কারণ এই সময়ে সময় নষ্ট করা ছাড়া আমার আর কোন কাজ ছিল না। ইন্ডিয়া ডুকে আমাকেতো নেপালের দিকেই যেতে হবে। নেপাল যেতে এখান থেকে মাত্র ১ঘন্টার পথ। আমার ইন্ডিয়ার ভিসা রয়েছে ৩ দিনের। দেড় ঘন্টা বসে থাকার পরও মেজ সাহেব এল না। শেষে একজন আরেকজনকে বলল, আর কতক্ষন বসিয়ে রাখবা এবারে যেতে দাও। আমি কাস্টমস্ এর দিকে যাওয়ার অনুমতি পেলাম।

কাস্টম্সে আমার ব্যাগ ভাল ভাবে যাচাই বাছাই কর্তে কর্তে ৫০ টাকার বায়না করলো।
আমি বললাম, ৫০টাকা কেন দেব?
তারা বলল, এটাই নিয়ম এখানে ৫০ টাকা লাগবে।
আমি বললাম, আমার পক্ষে ৫০টাকা দেয়া সম্ভব না।
তারা বলল, নেপালে ঘুরতে যাচ্ছ আর ৫০ টাকা নাই এসব কি বলছেন।
আমি বললাম, আমি ছাত্র। কত দূরের পথে ঘুরতে যাচ্ছি। রশিদ ছাড়া টাকা দিতে দিতে আমার টাকা ফুরিয়ে ফেলতে পারবোনা।
তারা আমার পাসপোর্টে এনডস দেখলো। কোন ডলার এনডস করা নেই।
তারা বলল, এনডস নেই কেন?
আমি বললাম, ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখিয়ে ভিসা নিয়েছি। এনডস থাকবে কেন?
তারা কোন কথা বলল না।

এসময় তারা আমার ব্যাগ থেকে একটা সিডি ক্যাসেট ও একটি এমপিথ্রি প্লেয়ার বের করে বলল, এটা কিসের ক্যাসেট?
বললাম, বাংলা গানের।
তারা সেটা বাজিয়ে শোনর চেস্টা করলো। একজন কানে নিয়ে বলল, বাংলা, আমি কিছুই বুঝিনা, তুমি দেখতো।
আরেক জন কানে নিয়ে শুনলো বাংলা জনপ্রিয় দেশাত্বাবোধক গানের প্রথম গান, সুর্যদয়ে তুমি তুমি সুর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ, প্রিয় জন্মভূমি। গান শুনে বলল, বাংলাগান ঠিক আছে। এরপর আমাকে বলল, এসব নিয়ে যাচ্ছেন কেন?
আমি বললাম, দূরের দেশে একা একা ঘুরতে যাচ্ছি সেখানে গান শুনতে নিষেধ আছে নাকি?
তারা আমাকে বলল, ইন্ডিয়ান টাকা আছে?
আমি বললাম, আছে।
তারা বলল, দেখি।
আমি ৫০০টাকার একটি ইন্ডিয়ান নোট বের কর্লাম। তারা বলল, আর আছে?
আমি বললাম, না।
তারা বলল, এই টাকা কোথায় পেয়েছেন?
আমি বললাম, দুইমাস আগে কলকাতা বেড়াতে গিয়েছিলাম। ফেরার পর থেকে গিয়েছিল।
তারা বলল, এই টাকা না ভাঙ্গিয়ে ফের্লাম কেন?
বললাম, আবার নেপাল যাওয়ার সময় লাগ্বে এই ভেবে রেখে দিয়েছিলাম।
তারা বলল, এই টাকা আপনি নিতে পার্বেন না। এটা এখানে থাকবে। জানেননা ইন্ডিয়ান টাকা বাংলাদেশে নেয়ার নিয়ম নেই।
আমি বল্লাম, জান্তাম না। আর আপনাদের এই কাজটা করা ঠিক হবে না। আমি একজন ছাত্র। আপনাদেরও ছেলে মেয়েও হয়তো লেখাপড়া করে আমার মতো ছাত্র বা ছাত্রী।
তারা আমার দেয়া ৫০০ টাকার ইন্ডিয়ান টাকাটা ভাল ভাবে দেখে বল্ল এটা যদি জাল টাকা হতো তাহলে আজ আপনার খবর ছিল।

এরপর তারা আমাকে ইন্ডিয়া প্রবেশের অনুমতি দিয়ে একজনের সাথে যেতে বল্ল। আমি তার পিছু পিছু যেতে শুরু কর্লাম। আমাকে বিএসএফের লোকজন চেক করে বিদায় জানালো। ঐ লোকটি আমাকে এক মানি চেঞ্জের দোকানে নিয়ে দেখিয়ে দিল এখান থেকে টাকা ডলার ভাঙ্গাতে হবে।
আমি বললাম, আমার কাছে ইন্ডিয়ান টাকা আছে ভাঙ্গানোর দরকার নেই।

আমি হেটে হেটে টেক্সি ক্যাবের ডাকে সারা না দিয়ে সামনে চলে গেলাম এবং একটি ব্যান ভাড়া নিয়ে জলপাইগুরি চলে গেলাম।

জলপাইগুরি বাসস্টান্ড থেকে আমাকে বাসে করে যেতে হবে শিলিগুড়ি পর্যন্ত। তখন দুপুর হয়ে গেছে। আমি একটি হোটেলে দুপুরের খাবার খেয়ে বাসে উঠলাম।

শিলিগুড়ি পৌছার পর কি করবো না করবো ভাবতে লাগ্লাম।
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×