প্রতিযোগিতামুলক বাজারে চাহিদা অনুসারে প্রডাক্ট প্রাইস নির্ধারন করা হয়।
এটাই সার্বজনিন নিয়ম।
একটি শার্ট বংগবাজারে একরকম, বড় দোকানে একরকম, বিদেশে রপ্তানী হলে আরেকরম।
নিউইয়র্ক-ডালাস বিমানভাড়া পিক সিজনে ৪০০ ডলার, নরমাল টাইমে ২০০। বিশেষ সময়ে এয়ারলাইনগুলো যখন ভাতে মরে তখন ১০০ ডলারেও নেমে আসে। আমি ১২০ ডলারেও গেছি।
২ ডলার গাড়ী পার্কি চার্জ পিক আওয়ারে ৩০ ডলার। বড় ইভেন্ট বা স্টেডিয়ামে খেলা থাকলে পার্কি চার্জ ৭০ ডলার।
বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও পিক আওয়ারে ৩ গুন মুল্য। সব ব্যাবসার ক্ষেত্রে এটাই নিয়ম।
জনস্বার্থে সরকার কিছু জরুরি নিত্যপ্রয়জনীয় পন্য ও সেবার দাম নির্ধারন করে দেয়।
দামী পাঞ্জাবী নিশ্চয় জরুরি নিত্যপ্রয়জনীয় পন্য নয়। পাঞ্জাবীর অভাবও পড়ে নি ৩০০ থেকে ৩০০০ টাকার যে কোন যায়গা থেকে কিনতে পারবেন।
আড়ং পাঞ্জাবীতে যে ট্যাগ ছিল তার চেয়ে কি বেশি দাম কি নেয়া হয়েছে?
কিন্তু একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাঁর পন্যের দাম কতো নির্ধারন করবে, সেখানে সরকার হস্তক্ষেপ করে কোন আইনে?
জীবন রক্ষাকারী পন্য যেমন খাবার, অষুধ, বাসভাড়া এসব ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রন ও হস্তক্ষেপ হতে পারে কিন্তু বিলাস দ্রব্যের বেলায় এই হস্তক্ষেপ কেমনে হয়?
চাহিদা বাড়লে জিনিসের দাম বাড়াবে, সেটা রিটেইল সেলসের খুবই বেসিক বিষয়। আবার চাহিদা না থাকলে জিনিসের দাম কমিয়ে স্টক খালি করতে ক্লিয়ারেন্স সেল দিবে, অনেক সময় একটার ক্ষতি অন্যটা দিয়ে পোষানো হয়, এডজাস্ট করা হয়, কোনটাতে প্রফিট ম্যাক্সিমাইজেশন করা হয়। এগুলো খুব সাধারন সেলস এন্ড মার্কেটিং বিষয়।
এখন ৭শ টাকার পন্য ১৪শ টাকায় পরের সপ্তাহে বিক্রি করায় যদি জরিমানা দিতে হয়, তাহলে যদি ১৪শ টাকার পন্য মূল্যছাড় করে ৩শ টাকায় বিক্রি করলে সরকার কি ক্ষতিপুরন দিবে?
আইনের ধারাটি প্রযোজ্য হবে শুধু মাত্র প্রদর্শিত মূল্যের চেয়ে মূল্য বেশি রাখলে। যেমন লবনের প্যাকেট ১৫ টাকা লেখা থাকলে ২০ টাকা রাখলে শাস্তি দেয়া যেতে পারে।
কম্পানী আইন, কনজিউমার ল বা বিজনেস ল কোথাও বলা নেই কোম্পানি সময়ভেদে প্রাইসিং পরিবর্তন করতে পারবে না৷
যদি না সরকার যদি দাম নির্ধারণ না করে দেয়,
এটা একটা বিজনেস এনটিটির একটি স্বাধীনতা। এটাই হওয়া উচিত।
অপ্রিয় কথা
আড়ং ডাকাত। এরপরও আড়ং এর মত প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশীয় কাপড়ের বাজারকে এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়ে রেখেছে।
ভারতীয়, পাকি ইত্যাদি অপব্রান্ডের ভিড়ে সম্পুর্ন দেশী ব্রান্ডের একমাত্র আড়ং ই আছে য অভিযাত গিফটের জন্য বাছাই করা হয়। বিদেশে কাউকে কিছু পাঠাতে হলেও আড়ং ফার্স্ট চয়েস। বাকিরা রং অঞ্জনস সাদাকালো ইত্যাদি কোনরকম ভাবে টিকে আছে। কোনটাতেও তারা আড়ংএর ধারে কাছে নাই। আমি আড়ং এর নিয়মিত কাস্টমার নই তবে দেশী ব্র্যান্ড হিসেবে একটা আস্থার জায়গা আছে। সামর্থ অনুযায়ী অন্তত কোয়ালিটি দেশী পণ্য এক ছাদের নিচে পাওয়া যায়৷ অল্টারনেটিভ কিছু গড়ে উঠছে তবে উদ্যোক্তাদের কারও মধ্যে সে প্রেরণা কম বা হয়তো সুযোগও হয়ে উঠছে না নানা কারণে।
ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব জরিমানা করে দোকান সিলগালা করে দিলেন।
ভাল কথা, ড্রেসি ডেইল নামে একটা দেশী শপ, দেশী নামে বিদেশী পন্য বেচার দোকান আছে জানেন? তাদের সর্বনিম্ন জামার দাম পনর হাজার। এছাড়া জারা, নাবিলা, মান্যবার, ভাসাভি এইসবে যেয়ে দেখুনতো ওরা কত দামে বেচে। দশবছর আগেও এক লেহেঙ্গা ১ লাখ টাকায় বিক্রী হয়েছিল, যার বর্তমান ভ্যালু ৩ লাখ।
ঈদের এই সময়ে উত্তরায় আড়ং এর মতো একটি আউটলেট সিলগালা করা অনেক ক্ষতির
আড়ং বয়কটের ডাক দিচ্ছেন অনেকে। সম্পুর্ন দেশী ব্র্যান্ড আড়ংকে বাদ দিয়ে কার থেকে কিনবেন? আড়ং গ্রামীন শ্রমিকদের রক্তচোষা হলেও মানুষের ত কর্মসংস্থান হচ্ছিল, কিন্তু এইসব দরিদ্র নারীদের পথে বসিয়ে দিবেন? দেশী পন্যের পাছা মেরে আর বিনা শুল্কে বিদেশী পন্য ভারতীয়, পাকি লন ইত্যাদি চলবে। ভিআই পি জারা, নাবিলা, মান্যবার, ভাসাভি ইছামত দাম হাঁকিয়ে ব্যাবসা করে যাবে। ভালই।
সর্বশেষ খবর।
এই বদলির আদেশ আগেই হয়েছিল।
স্বাভাবিক বদলি। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের এসাইনমেন্ট শেষে আরেকটি সাধারন কর্মস্থলে যাওয়ার আদেশ।
ই-ফাইলিংয়ের মাধ্যমে বদলির আদেশ গত ২৯ মে। আড়ংয়ের অভিযানের সঙ্গে তার বদলির কোনো সম্পর্ক নেই। ই- ফাইলিং একটা ডিজিটাল প্রক্রিয়া যেখানে হেরফেরের কোনো সুযোগ নেই। অডিট করলেও দেখা যাবে যে, তাকে বদলির জন্য ২৯ তারিখেই প্রক্রিয়া শুরু হয়। কারণ রমজানের বাজার অভিযানের পরেই তাকে প্রচলিত কাজে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা আগেই ছিল। যেহেতু গতকাল শেষ বাজার অভিযান ছিল, তাই অফিশিয়াল চিঠিদেয়া।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৯ দুপুর ২:৩৬