নিরুপায় হয়ে রাশিয়ার ভ্যাকসিন স্পুটনিক -৫ এর জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিলো পাকিস্তান।
পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ এই রাশিয়ার ভ্যাকসিন আমদানি ও বণ্টনে স্থানীয় একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি এজিপিকে অনুমতি দিয়েছে।
এর আগে WHO অনুমোদিত অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন আনার অর্ডার দিয়েছিল, কিন্তু এক বছরেও তা পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় অপরিক্ষীত চাইনিজ সিনোভ্যাক্স অর্ডার দিয়েছিল, সেটাও বিলম্বের সম্ভাবনা থাকায় এখন আরেকটি অপরিক্ষিত স্পুটনিক জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিল পাকিস্তান।
যথা সময়ে ডিসিশন না নিলে যা হয়।
টিকা প্রাপ্তির বিলম্বের সম্ভাবনা দেখে তুরস্কের মত ধনী দেশও ব্যায়বহুল ফাইজার বা মডার্নার ভ্যাক্সিন নেয়নি, তারা নিচ্ছে চাইনিজ সিনোভ্যাক্স, যার ফেজ থ্রি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হয়নি। WHO অনুমোদন ও নেই (তবে পেয়ে যাবে)।
এই মুহুর্তে ট্র্যাভেল টুরিজম ও সার্বিক অর্থনীতি চালু করার ও পাবলিক মনবল ফিরিয়ে আনতে সবদেশ যে কোন মুল্যে দ্রুত যে কোন ভ্যাকসিন পেতে মরিয়া।
বিশ্বের শতাধিক ভ্যাকসিন তৈরির পথে, এর ভেতর বাংলাদেশের একটা কম্পানিও আছে।
তবে মাত্র তিনটা ভ্যাক্সিন ৩য় ফেজ পরিপূর্ণ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন করে WHO অনুমদন পেয়েছে।
১ অক্সফোর্ড,
২ ফাইজার বায়োন্টেক
৩ মডার্না।
এর পর লাইনে আছে জনসন এন্ড জনসন চাইনিজ সিনোভ্যাক্স ও রাশিয়ান স্পুটনিক
রাশিয়া বা চিনের ভ্যাক্সিন ফেজ থ্রি ট্রায়াল সম্পন্ন করেনি। WHO এপ্রুভাল পায় নি। তবে পকিস্তানে ব্যবহৃত হলে ফলাফল দেখে দ্রুত এপ্রুভাল না পাওয়ার কারন নেই
অনুমদন প্রাপ্ত মডার্না বিশাল ফার্মাসিটিক্যাল কম্পানি হলেও এর আগে কোন ভ্যাক্সিন বানায়নি। প্রধান ক্রেতা মার্কিন সরকার
অক্সফোর্ডের ভ্যাক্সিনের ট্রায়াল হয় ইংল্যান্ড ব্রাজিল মিডল ইস্ট আর ভারতে। তাদের বিশাল আকারের ট্রায়াল অন্যদের অনেক আগে শুরু হয়। ইংল্যান্ড ও ভারতে এর উৎপাদন হচ্ছে। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ভ্যাক্সিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। সুতরাং অল্প সময়ে বেশি ডোজ তৈরীতে ভারতের বিকল্প কিছু ছিলনা। একা ইংল্যান্ড উতপাদন করলে আমাদের ভ্যাক্সিন পাওয়া আরো পিছাত।
এই মুহুর্তে ট্র্যাভেল টুরিজম ও সার্বিক অর্থনীতি চালু করার ও পাবলিক মনবল ফিরিয়ে আনতে সবদেশ যে কোন মুল্যে দ্রুত যে কোন ভ্যাকসিন পেতে মরিয়া।
৩য় বিশ্বের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সবচেয়ে আগে টিকার ব্যাবস্থা করে রেখেছে। দিচ্ছে।
অনেক দেশের আগেই বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তম ও সাশ্রয়ি দামে অক্সফোর্ডের টিকা পাওয়ার জন্য ব্যাবস্থা করেছিল। ৩-৪ মাস আগেই এডভান্স টাকা দিয়ে রেখেছেন।
WHO নিরিক্ষায় দ্রুত করোনা টিকা সংগ্রহ ও ব্যাবস্থাপনায় বাংলাদেশ ২০ তম অগ্রগামী দেশ।
টিকা ব্যাবস্থাপনা ও অবকাঠামোও ভাল।
বাংলাদেশের ইপিয়াই (গ্যাভি ও ডাবলুএইচওর কোওর্ডিনেশনে) যারা বিসিজি পোলিয়ো টিটেনাস বিনা মুল্যে দেয়, সেই প্রশিক্ষিত জনশক্তি ব্যবহার করে বিনামুল্যে রেজিষ্ট্রিভুক্ত সবাইকে পর্যায়ক্রমে এই টিকা দেয়া হবে।
টিকাদান রেজিষ্ট্রশন (সুরক্ষা এপ) আরো দুমাস আগেই সরকারিসংস্থা মারফত রেডি রাখা ছিল।
টিকার মুল্য নিয়েও বিভ্রান্তি আছে
বাংলাদেশ অক্সফোর্ডের টিকা বাজার মুল্যে কিনছে, তবে যা দামেই কিনুক দুই ডোজ মুল্য ৪ ডলারের বেশী হবে না।
অক্সফোর্ডের টিকার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যও ৪ ডলার, ভারতে ২.৭৪ ডলার। আমেরিকাও পরিবহন খরচ বাদে ৪ ডলারে কিনছে।
আমেরিকার নিজস্ব অনেক টিকা থাকলেও অক্সফোর্ডের টিকা কিনছে বা কিনে রাখছে।
ভারত সরকার হয়তো অনেক কম দামে কিনছে।
একটা দেশের প্রাইভেট কোম্পানি তার সরকারকে যে পন্য দেবে, বাস্তব কারনে অন্য দেশকে তা দেবেনা। সে ঐ বিদ্যুৎ জমি ম্যানপাওয়ার, ট্যাক্স সুবিধা রাষ্ট্রীয় সাপোর্ট পাচ্ছে,। আমাদের চেয়ে ভারত রাষ্ট্র তাদের ভ্যাক্সিন অন্তত ২০-৩০গুন বেশি পরিমান কিনবে। কিছু বুঝেন? এডভান্স দাম দিয়েছে, অবকাঠামো ঋন দিয়েছে।
আর বাজারে বাকি WHO অনুমদিত ফাইজার মডার্নার ভ্যাক্সিনে দাম আপনি জানেন?
একটু খোজ নিয়ে দেখেন। ফাইজারের ভ্যাক্সিনের দাম আমেরিকা কিনছে ২০ ডলার, ইউরোপে আরো বেশী দামে কিনছে।
মডার্নার একডোজ লাগে ৩২ ডলারে কিনছে আমেরিকা।
ফালতু রাশিয়ার স্পুটনিক ভ্যাক্সিনের দামই ১০ ডলার, এরও কোল্ড চেইন মেইনটেইন এর ইস্যু আছে।
পোষ্ট আপডেট হবে।
আপডেট ১ ফেব্রুয়ারি২০২১
অক্সফোর্ড - অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড-এর নির্মাতা সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনেওয়ালা শনিবার জানিয়ে দিলেন, তারা নতুন এক ভ্যাকসিন নিয়ে আসছেন।
নতুন উদ্ভাবিত আমেরিকান কম্পানী নোভাভ্যাক্স এর সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি ভারতীয় এই ভ্যাকসিনের নাম হবে কোভাভ্যাক্স।
পুনেওয়ালা জানান, জুনের মধ্যে এই ভ্যাকসিন ভারতীয় বাজারে আসবে। উল্লেখযোগ্য, নোভাভ্যাক্স দাবি করেছে যে, তাদের উৎপাদিত ভ্যাকসিন ৮৯.৩ শতাংশ সফল। আদর পুনেওয়ালা জানিয়েছেন, এই ভ্যাকসিনের ফাইনাল ট্রায়ালের জন্যে তারা আবেদনও করেছেন।
ভারতে রাশিয়ান ভ্যাকসিন স্পুটনিকের শেষ পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। কলকাতায় পিয়ারলেস হাসপাতালে এই ট্রায়াল শুরু হয়েছে।
অর্থাৎ ভারতে রিতিমত একটি জোয়ার এসেছে করোনা টিকার বাজার ধরতে। বড়সর ইনিশিয়েটিভ নিয়েছে ভারত।
কোথাও ভ্যাকসিন না পেয়ে নিরুপায় পাকিস্তান অবশেষে ভারতে তৈরি ভ্যাকসিন নিচ্ছে।
ভারতের তৈরি ভ্যাকসিন বাইশটি দেশ ব্যবহার করলেও তালিকায় নাম ছিল না পাকিস্তানের।
কিন্তু ভারতীয় ভ্যাকসিন কূটনীতির কাছে হার মানতে হলো ইমরান খানের পাকিস্তান সরকারকে। অবশেষে WHO কোভ্যাক্স প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ডের সাত লক্ষ ডোজ যাচ্ছে পাকিস্তানে। তবে পাকিস্তান এই ডোজ কিনছে না। কোভিশিল্ড চীন হয়ে পাকিস্তানে ঢুকছে রাষ্ট্রসংঘের মারফত। পাকিস্তানে যে ১৭ লক্ষ মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেয়া হবে তার সাত লক্ষই ভারতীয় ভ্যাকসিন। রাষ্ট্রসংঘ ইতিমধ্যেই ভারতের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ভোর ৪:২৫