অল দা প্রাইমমিনিষ্টারস ম্যান। নামটা বাহারি।
ডেভিড বার্গম্যানের নির্মিত এক ঘণ্টার এই প্রতিবেদনে মূলত বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের তার তিন ভাই-এর কার্যক্রম দেখানো হয়েছে।
কিন্তু ডকুমেন্টরিতে ১৯৮৯ তে মোহম্মদপুরে মকবুলের জনসভায় হাসিনার সাথে একটি ঝাপসা ছবি বাদে আর কোন ছবি দিতে পারে নাই। তখনও হাসিনা প্রাইমমিনিষ্টার নন। সাধারন একজন।
আর ছবি থাকলেই বা কি, সাহেদ ফাহেদদের সাথে রুই কাতলা নেতাদের সাথে ছবি কি কম ছিল? সাহেদ কি বাচতে পেরেছে?
পরবর্তিতে ফারিস-ফারিসের সাথে প্রাইমমিনিষ্টারের অপরাধের কোন যোগসুত্র দেখাতে পারে নি।
তাহলে ওরা কিসের ভিত্তিতে 'প্রাইম মিনিষ্টারস ম্যান' দাবি করছে?
ওনার ভাইরা দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা বা সরকারি ক্রয়ে জরিত ছিল, এমন কোন প্রমান এই ভিডিওতে দেখা যায় নি।
বাংলাদেশে বহু ফ্যামিলি আছে যাদের কোন না কোন ভাই গুন্ডামি করে, কম আর বেশী।
অন্য ভাইরা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার সচিব। অতচ এক ভাই আধা লেখাপড়া করে পাড়া মহল্লার ত্রাস,
এরকম ফ্যামেলী আপনার গ্রামে বা আপনার এলাকায় প্রচুর পাবেন।
আপন ভাইকে তো ফেলে দেয়া যায় না।
সেনাপ্রধানের এক ভাই দুর্ভাগ্যক্রমে খুনের মামলার আসামী হয়ে ২২ বছরের জেলে ২০ বছর ছিল।
বাকি দুইভাই দীর্ঘ ২৫ বছর জাবত ইওরোপে থাকে। জোসেফও বিদেশ চলে গেছে।
জোসেফ বা এরা তো কোন বড় অপরাধে জরিত হয় নি। বাংলাদেশের কোন ক্ষতি করছে না।
ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান করা অন্যায় কিছু না। বিদেশে একজন দরিদ্র যুবক ট্যাক্সি চালিয়ে বাড়ী গাড়ী ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠান করেছে এরকম প্রচুর উদাহরন দেয়া যাবে, আর সেনাপ্রধানের ভাইরা ২৫ বছর থেকে কিছু পারবে না?
কি এমন হাতি ঘোড়া বিজনেস করছে ওরা? একটা দর্জি দোকান, একটা চা নাস্তার দোকান, একটা ভাংগা হোষ্টেল।
বড় মোচ রাখা কিছু গ্রুপ ছবির সবাই গ্যাংস্টার! এই ধারনা শৃষ্টি করা হয়েছে কৌশলে।
অজ্ঞাত লোককে টেলিফোনে বাগাড়ম্বর করা ধমক দেয়ার ঘটনা কৌশলে ভিডিও করে এডিট করে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক যুক্ত করে একটি ভীতিকর মুভি বা প্যাকেজ নাটক বলা যায় এটাকে। আর কিছু না।
আর ফেক তথ্য না দিয়ে থাকলে শুধু নাম পরিবর্তন করা আমি কোন দোষ দেখছি না।
নিজের নাম যে কেউ চেইঞ্জ করতে পারে, এটা তার অধিকার।
লেখক শিল্পি একটু ফেমাস হলেই নাম পরিবর্তন করে। সেটা সাবানা ববিতার কথা বাদই দিলাম, হালে জেমস, মাইকেল জ্যাকসন, স্টিবি ওয়ান্ডার মোহম্মদ আলী ... একুশে টিভির অনেক সাংবাদিক টিভিতে চেহারা দেখানোর আগে নাম পরিবর্তন করেছে।
মোল্লারাও অনেকেই নাম চেইঞ্জ করেছে। যেমন দেলু ব্যাপারি থেকে দেলোয়ার হোসেন সায়েদী, সাথে আল্লামাও যোগ করেছে।
হারিসের মত পাড়ার মাস্তান কখনোই শেখ হাসিনার বডিগার্ড থাকতে পারে না।
হাসিনা এত কাঁচা কাজ করে না। হাসিনার বডিগার্ডরা সবাই পেশাদার দেহরক্ষী, উচ্চমানের বিদেশে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত।
ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রীর দেহরক্ষীরা সবাই সরকারি বেতনভুক্ত এসএসএফ।
এমনকি তার ভাই আনিস জোসেফ টিপু ওদের কারোরই শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত ছিলো না। যে ছবিতে শেখ হাসিনার পিছনে ঝাপসা অস্পষ্ট হারিসকে দেখা যাচছে, সেটা হলো ৮৯ এর নির্বাচনী জনসভা, যখন শেখ হাসিনা মকবুলের নির্বাচনি প্রচারে মুহাম্মদপুরে এসেছিলেন তখনকার ছবি। একটা বড় নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যে নেতা নেত্রীদের পিছনে কারা দাড়িয়ে থাকে, কাদের ছবি উঠে; তা দেখার কি কোনো সুযোগ আছে?
যে মুস্তফা হত্যা কান্ড এখানে দেখানো হয়েছে এটা নিতান্তই মহম্মদপুর ভিত্তিক দুই আন্ডার ওয়ার্ল্ড সন্ত্রাসী গোষ্টির মধ্যে হানাহানির বহিঃপ্রকাশ। আদতে সে ছিল কুড়াল মার্কা ফ্রীডম পার্টির অস্ত্রধারি সদস্য। যারা প্রায়ই হাসিনাকে হুমকি দিত, হাসিনার গেইটে বোমাবাজি গ্রেনেড ছুড়ে মারা, এলোপাথারি গুলি করা ছিল এদের রুটিন কাজ। এই সন্ত্রাসিকে খতম করা ওয়াজিব হয়ে গেছিল।
এর পরেও হাসিনা বা হাসিনার দল এইসব হত্যাকান্ড সমর্থন করে নি, করে না, বাদল হত্যাকারি হোতাদের চীরস্থায়ি ভাবে বহিষ্কার করেছিল। হাসিনার আমলেই জোসেফকে দীর্ঘ ২২ বছর জেলদন্ড দিয়েছিল।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫২