SMS বার্তা মারফত নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্দেশ মোতাবেক এক ভদ্রলোক তার স্ত্রীর NID কার্ড সংশোধন কল্পে প্রথমে শেরেবাংলা নগরে ইসলামি ফাউন্ডে্সন ভবনে গিয়ে জানতে পারেন যে, NID কার্ড সংশোধন সঙ্ক্রান্ত সব কাজ জেলা নির্বাচন অফিসে ন্যাস্ত করা হয়েছে । তদানুযায়ী জেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে জানতে পারেন যে, কাজ সহজ ও সুবিধার জন্য থানা নির্বাচন অফিস ( ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন , ১৫ নং ওয়ার্ড ) ক্যান্টনমেন্ট কচুখেত বাজার সংলগ্ন এলাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে । সেখানে গিয়ে ভদ্রলোক সংশোধনীর জন্য নির্ধারিত কর্ম টেবিলে সংশোধনী বিষয় কি করনীয় জানতে চান এবং বলেন যে ভুল বশত NID কার্ডে SSC পাশের তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে সেই মর্মে ভুল সংশোধন করা দরকার। কর্মকর্তা জানান যে , এটা সংশোধন সম্ভব নয়। ভদ্রলোক প্রশ্ন করলেন ---ভুল বানান / নাম /জন্ম তারিখ / ইত্যাদি সংশোধন সহ আরও অনেক তথ্য ভুল ভাবে নথিবদ্ধ থাকতে পারে । সে কারনেই সংশোধনী দরকার । আর সে লক্ষেই নির্বাচন কমিশন কর্তৃপক্ষ সংশোধনীর সুযোগ দিয়েই দিন তারিখ নির্ধারণ করে বিভিন্ন মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন । সুতরাং আমার স্ত্রীর NID কার্ড সংশোধন কল্পে কি করনীয় বলে দিন । সেই মর্মে কম্পুটারম্যান জানালেন , একজন নোটারী পাবলিক উকিল দ্বারা হলফনামা আনলেই সংশোধন করে দেওয়া যাবে । তদানুযায়ী হলফনামা নিয়ে থানা নির্বাচন কমিশন অফিসে সংশ্লিষ্ট কর্ম টেবিলে জমা দিলে জানালেন --- থানা নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তার সাথে বলে OK করে আনেন । কর্মকর্তার কাছে গিয়ে সব কথা খুলে বলার পর তিনি জানান যে এটা সংশোধন হবে না । কারন NID কার্ডধারী ইচ্ছা করেই ভুল তথ্য দিয়েই সেই সময় কার্ডটি তৈয়ার করিয়েছেন । উল্লেখ থাকে যে , প্রথম যখন নির্বাচন কমিশন কর্তৃক NID কার্ড তৈরি করেছেন সে সময় স্থানীয় অদক্ষ মাঠ কর্মী দ্বারা তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল ।আমার জানামতে এ ধরনের অনেকেরই NID কার্ডে নানান তথ্য ভুলভাবে লিপিবদ্ধ এবং নথিভুক্ত করা হয়েছিল । ঠিক তখনই অনেকে ( পরবর্তীতে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে সেই সব ধারনা না থাকায়) সংশোধন করার জন্য তৎপর হন নাই ।অগত্যা নিরুপায় হয়েই আংশিক সত্য /আংশিক ভুল কার্ড গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছেন । ভদ্রলোকের স্ত্রীর ক্ষেত্রে যেটি হয়েছিল তা হল --- প্রথম NID কার্ড তৈরি করার সময় মহিলাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল “ আপনি কোন পর্যন্ত লেখাপডা করেছেন ?” উত্তরে বলেছেন--- SSC পর্যন্ত ।তর্কের খাতিরে বলা যায় মৌখিক ভাবে SSC বললে পাস বা ফেল উভয়ই বুঝায় কিন্তু লিখিত ভাবে SSC বললে শুধু মাত্র পাসই বুঝায় । এক্ষেত্রে মহিলা মনে করেন নাই যে, SSC বললে মাঠ কর্মী SSC পাশ বিবেচনা করে NID কার্ডের নথিতে SSC পাস উল্লেখ করবেন ।একেত মহিলা তাছাড়া কথার মারপ্যাঁচ তখন কোন মানুষের মনে আসেনি । NID কার্ড দিয়ে ভোট দেয়ার কাজে আসবে আর শুধু মাত্র নাগরিকত্ব পরিচয় দেয়া যাবে । এই ধারনা তখন বেশিরভাগ মানুষের মনে ছিল । NID কার্ডের এত রকম ব্যবহার কিংবা এত রকম সেবা পাওয়া যাবে তা তখন কারো জানা থাকার কথা নয় ।কর্মকর্তার মনগড়া (?) ভাবনায় মহিলাকে মিথ্যা তথ্য দানকারী আখ্যা নিয়ে ফিরে আসতে হল ।সাধারণ মানুষ কখনও কথার মারপ্যাঁচ মাথায় রাখে না । আর মহিলাই বা কি এমন ব্যক্তিত্ব যে তিনি এই কুটিল পথ বেছে নিয়ে ভবিষ্যতে কাজে লাগাবেন । তর্কের খাতিরে ধরে নেয়া হল যে , তিনি ভুল তথ্য দিয়েছেন, তাহলে হলফনামার কথাই বা বলা হল কেন ? আসলে যেকোনো ভুলের জন্যই তো সংশোধনীর প্রয়োজন । আর সেলক্ষেই তো ইলেকশন কমিশন প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে সংশোধনীর নির্দেশ দিয়ে SMS মারফত প্রচার করে জানিয়েছেন ।
এখন সকল বিবেকবান মানুষের কাছে প্রশ্ন এই ভুলের মাশুল ভুক্তভুগিরা কি ভাবে দেবে বা এর কি বা সমাধান, না এর কোন সমাধান নেই । জনগণ বুঝে / না বুঝে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিতে পারে কিন্তু সরকার তো তা পারে না । উক্ত কর্মকর্তার ভাষ্য কি পাঠকদের কাছে ছলচাতুরী (?) / কিংবা নেহাত খোঁড়া যুক্তিঅথবা স্বেচ্ছাচারী মন্তব্য নয় কি ? জনগণ তো সমাধান চায় । সমাধানের জন্য জনগণের কোন ক্ষমতা নেই । কর্তৃপক্ষের কাছে সকল উপায় আছে । তাই বিষয়টির আশু সমাধান কল্পে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । পাঠকবৃন্দ, আমার লেখায় যুক্তির অভাব বা ভ্রম থাকলে পরামর্শ কিংবা মন্তব্য আশা করছি ।