somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক প্রচারনা কেন?

৩১ শে মে, ২০০৮ রাত ১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশ এই অঞ্চলের সবচেয়ে শান্তিপ্রিয় দেশ' শিরোনামে একটি খবর মুদ্রিত হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায়। খবরে বলা হয়, একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় শান্তিপ্রিয়

দেশ হিসেবে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর ইকনমিক্স এন্ড পিস এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইকনমিস্ট ইনটিলিজেন্স ইউনিট যৌথভাবে বিশ্বব্যাপী সমীক্ষাটি পরিচালনা করে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক, অস্ত্র ব্যবসা ও ব্যবহার, দেশের ভেতর অপরাধের হার, কারাগারে বন্দীর সংখ্যা এবং সন্ত্রাসবাদের বিস্তারসহ ২৪টি মানদণ্ডের ভিত্তিতে কোন দেশ কতটুকু শান্তিপ্রিয় তা বিবেচনা করা হয় সমীক্ষায়। চলতি বছর ১৪০টি দেশের উপর সমীক্ষা চালানো হয়। সবচেয়ে শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে শীর্ষস্খান দখল করে নেয় ইউরোপের দেশ আইসল্যান্ড। ১৪০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্খান ৮৬তম। ভারত ১০৭, শ্রীলংকা ১২৫ ও পাকিস্তান ১২৭তম অবস্খানে রয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অবস্খান ৯৭তম ও রাশিয়ার স্খান ১৩১তম।

বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ একথা আমরা জানি। এর জন্য বাইরের স্বীকৃতির তেমন কোনো প্রয়োজন ছিল না। তবে বর্তমান প্রপাগান্ডার যুগে মিডিয়ার তৎপরতাকে গুরুত্ব দিতে হয়। এমন প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সমীক্ষা বা স্বীকৃতির গুরুত্ব কম নয়। বাংলাদেশ এ অঞ্চলের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ এই খবরটি মিডিয়ায় বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণার লাগাম টানতে সহায়ক হবে। আরো উল্লেখ্য যে, শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও এগিয়ে আছে। অথচ এই অঞ্চলের কোনো কোনো দেশে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বিশেষ মহল বাংলাদেশকে জঙ্গি, মৌলবাদী এমনকি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করার প্রচারণা চালিয়েছে। বিষয়টি যে সঠিক নয় তা আলোচ্য আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় যেমন প্রমাণিত হয়েছে, তেমনি তা উপলব্ধি করা যায় বাংলাদেশের জনগণের প্রাত্যহিক জীবন যাপনের চিত্রেও।

বাংলাদেশে দারিদ্র্য আছে, অপরাধের ঘটনা ঘটে, সন্ত্রাসও হয়- যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও লক্ষ্য করা যায়। অথচ কোনো কোনো মিডিয়ায় এবং মহল বিশেষের প্রপাগান্ডায় এমন একটা আবহ সৃষ্টির প্রয়াস চলে, যার মর্মার্থ হলো বাংলাদেশের আর কোনো সম্ভাবনা নেই। অথচ আমরা জানি বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনার দেশ। বাবরী মসজিদ কিংবা গুজরাট দাঙ্গার ঘটনা বাংলাদেশে ঘটে না, কালো-সাদার সংঘাত বাংলাদেশে হয় না। কখনো কখনো সন্ত্রাসের যে ঘটনা লক্ষ্য করা যায় তা এদেশের বৈশিষ্ট্য নয়, বরং তা ম্যানুফ্যাকচার করা হয়। তাই বাংলাদেশের ইমেজ নষ্টের ষড়যন্ত্র যেমন ফাঁস করা প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন বাংলাদেশের ইতিবাচক দিকগুলো বিশ্বসভায় তুলে ধরা। এক্ষেত্রে সরকার রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী মহল এবং মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু কাáিক্ষত সেই ভূমিকা আমরা লক্ষ্য করছি না। রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয়। কিন্তু প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে শুধুই নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করা সুস্খ রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে না। এই বিষয়টিই দেশের স্বার্থবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে সরকার, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়া শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালনে বাধা সৃষ্টি করছে। এ কারণে ‘বাংলাদেশ এই অঞ্চলে সবচেয়ে শান্তিপ্রিয় দেশ' স্বীকৃতি পাওয়ার পরও এই বিষয়টির তেমন প্রচারণা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না মিডিয়ায় কিংবা রাজনৈতিক নেতাদের বক্তৃতা বিবৃতিতে। অথচ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কোনো মহল থেকে নেতিবাচক কোনো মন্তব্য উচ্চারিত হলে তা বেশ উচ্চগ্রামেই নানাভাবে প্রচারিত হয়ে থাকে। আমরা কেমন করে, কীসের তাড়নায় এতটা অবিবেচক হয়ে পড়ি? এ বিষয়ে আত্মসমালোচনার সাথে সাথে কর্তব্য নির্ধারণও এখন সময়ের দাবি।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×