প্রচ্ছদ
বাংলাদেশ
বিবিধ
‘শত কষ্ট হলেও এ দেশ ছাড়তে পারব না’
পঞ্চগড় প্রতিনিধি | আপডেট: ০৪:৪৩, নভেম্বর ২৭, ২০১৫ | প্রিন্ট সংস্করণ
১ Like
২
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার সদ্যবিলুপ্ত দইখাতা ছিটমহলের হীরা মোহন রায় (৬২)। জীবন বাজি রেখে আনেন দেশের স্বাধীনতা। দেশের মায়া তাই ছাড়তে পারলেন না। সন্তানেরা নাগরিকত্ব নিয়ে ভারতে চলে গেলেও স্ত্রী সুমিত্রা রানী রায়কে (৫৮) নিয়ে এ দেশেই থেকে গেলেন তিনি।
গত বুধবার সকালে দেবীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে সন্তানদের বিদায় জানাতে এসেছিলেন হীরা মোহন ও সুমিত্রা রানী। এ সময় তাঁদের সঙ্গে কথা হয়। ছেলেমেয়েরা তাঁদের ভারতে যেতে বারবার অনুরোধ করেছেন। সে দেশে নানা সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথাও বলেছেন। সংখ্যালঘু হওয়ায় নিরাপত্তার কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। তারপরও ভারতে যেতে রাজি হননি এই দম্পতি।
হীরা মোহন রায় বলেন, ‘এই দেশকে ঘিরে রয়েছে হাজারো স্মৃতি। ও দেশে গেলে হয়তো অনেক কিছুই পাব। কিন্তু এই দেশের চেয়ে ভারতকে ভালোবাসতে পারব না। কাজেই না যাওয়াই ভালো। এই দেশের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। সম্মান পেয়েছি। তাই শত কষ্ট হলেও এ দেশ ছাড়তে পারব না।’
হীরা মোহন আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা যেটুকু পান তা দিয়েই স্বামী-স্ত্রী মিলে দুজনে এ দেশে বাকি জীবন কাটাতে চান। দুই ছেলে আর এক মেয়ে হীরা মোহনের। সন্তানেরা ভারতে চলে যাচ্ছেন, এ জন্য মন ভেঙে গেলেও মেনে নিচ্ছেন তিনি। বড় ছেলে স্নাতক পাস আর ছোট ছেলে উচ্চমাধ্যমিক পাস। একমাত্র মেয়ে জেএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেও বড় ছেলের চাকরি নিয়ে দিতে পারিনি।’
হীরা মোহন রায়ের স্ত্রী সুমিত্রা রানী রায় বলেন, অভাব আছে কিন্তু এ দেশেই তাঁরা অনেক শান্তিতে আছেন। সন্তানেরা যেখানেই থাকুক, তাঁরা যেন ভালো থাকেন, এই আশীর্বাদ করেন তিনি।
হীরা মোহনের বড় ছেলে জগদীশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘মিথ্যা ঠিকানা ব্যবহার করে স্নাতক পাস করেছি। অনেক ঘুরেছি, কোথাও কোনো চাকরি পেলাম না। ভারত সরকার বাড়ি, আর্থিক সাহায্য আর চাকরি দেবে বলে শুনেছি। তাই ভারতে যাচ্ছি।’
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৭