somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিরক্তিকর ও অর্থহীন জীবন কাটানোর ১০ তরিকা (উপায়)!

০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবন আপনাকে অনেক কিছু ই দিয়েছে? আপনি অনেক সুখি? আপনার কপালে শুধু শান্তি আর শান্তি? আর ভাবনা নয়! আপনার জন্য-হ্যাঁ আপনার জন্য এসে গেছে বিরক্তিকর ও অর্থহীন জীবন যাপনের কিছু টোটকা। আসুন সরাসরি আলোচনায় চলে যাইঃ

১। এমন চাকরী করুন যা আপনি অপছন্দ করেনঃ এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি পড়াশোনা করেছেন বুয়েটে অথবা ইংরেজী সাহিত্যে। কিন্তু জব করছেন ব্যাংকে। আপনার বেসিক একদিকে, আর চাকরীর বেসিক আরেকদিকে। আপনি বোর হতে বাধ্য। সারাদিন কামলাগিরি করে বাসায় এসে দেখবেন আপনি আর আপনিতে নাই। জীবন টা ভালমতোই বিরক্তির মধ্য দিয়ে কাটিয়ে দিতে পারবেন।

২। অভিযোগ করুনঃ অভিযোগ করা (কমপ্লেইন) শুধুমাত্র আপনার জীবন ই না, আপনার আশেপাশে যারা আছে সবার জীবন ই বিষিয়ে তুলতে পারে। অতএব , আপনি যা করবেন তা হলো, নিজের ওপর নিজে অভিযোগ করবেন, আশেপাশে যারা আছে সবার প্রতি ই অভিযোগ করবেন, ঈশ্বরের প্রতি অভিযোগ করবেন।কনগ্রাচুলেশন! অর্থহীন আর বিরক্তিকর জীবন হতে আর দেরী নেই পাঞ্জেরী। ভাল ফলাফলের জন্য, দৈনিক ৭-১১ বার অভিযোগ প্রতি ১০ মিনিট করে সময় ব্যয় করুন।

৩। কখনো দায়িত্ব নিবেন নাঃ মানুষের জীবনে ভুল হতেই পারে, কোন প্রবলেম ক্রিয়েট হতেই পারে, এই জন্য নিজে দায়িত্ব নিতে যায়েন না ভুলেও। কারণ আপনি ভুল করতে পারেন না। অবশ্যই অন্যরা ভুল করবে, সেই জন্য আপনি কমপ্লেইন ও করবেন, কিন্তু সাবধান! নিজে কখনো কোন ভুলের দায়িত্ব নিবেন না। অন্যদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে খুশি থাকবেন। ইভেন, কখনো নিজেকে নিজে প্রশ্ন করবেন না দায়িত্বের ব্যাপারে, কাউকে সুযোগও দিবেন না।

৪। সুনির্দিষ্ট নীতিমালার বাইরে যাবেন নাঃ গ্রামের ভাষায় যাকে বলে 'ঘোড়ার কামড়'। একবার কামড় দিলে আর ছাড়তে চায় না। না করছি ত না ই । এই রাস্তা ধরে যাইতে হবে ত এইটা ই। কোন চেঞ্জ নাই, কোন নতুন কিছু নাই। সকালে অফিস থেকে উঠে অফিসে যাবেন, রুটি-আলু ভাজি খাবেন-একটা নির্দিষ্ট রাস্তা ধরে যাবেন, অফিসে গিয়ে চোখ বন্ধ করে যা শিখায়ে দিছে ঐভাবে কাজ করবেন, বাসায় ব্যাক করবেন-ফ্রেশ হয়ে টিভি দেখবেন-খাবেন-ঘুমায় যাবেন। টু ডু লিস্ট করেন, আর ঘোড়ার কামড় দিয়ে পড়ে থাকেন। ডেইলী একই রুটিন ফলো করে যান। কাজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

৫। কখনো নতুন অথবা ভিন্ন কিছু চেষ্টা করবে নাঃ আপনি কম্পিউটার ব্যবহার করতেন, উইন্ডোজ এক্সপি। এখনো এক্সপি ই ব্যবহার করেন। সেভেন বা টেন এ যাওয়ার দরকার নাই। বাবা-মামা-চাচা রা যা করে গেছেন, ঠিক ঐটাকেই আকড়ে ধরে পড়ে থাকেন, নতুন কিছু মাথায় ই আনবেন না। তারা সরকারী চাকরী করছে, আপ্নাকেও তা ই করতে হবে। এরপরও যদি নতুন কোন কিছু করার চিন্তা মাথায় আসে, তাইলে ২ নাম্বার পয়েন্টে যান। নিজের ব্যাপারে নিজে কমপ্লেইন করেন। নিজেকে বলুন, আমার জন্ম ই হইছে এইভাবে থাকার জন্য। নতুন কিছু করা আমার কাজ না। অন্যরা কেনো করতেছেনা ??আজীব ব্যাপার!

৬। কারো সাথে দেখা হলেঃ কারো সাথে দেখা হলে নিজে থেকে ভুলেও সালাম দিবেন না অথবা হ্যালো বলবেন না। দেখা হলেই হাসি মুখে গ্রিটিংস দিতে হবে, এই ব্যাপার থেকে বেরিয়ে আসুন। দেখবেন নতুন কোন বন্ধু হবেনা, পুরোনো বন্ধুরাও ধীরে ধীরে ভাগবে। জীবন অর্থহীন আর বিরক্তিকর করতে আর কি চাই ফ্রান্স?

৭। কোন স্বাধীন মতামত নয়ঃ স্বাধীন মতামত থাকা আপনার কম্ম নয়। এসব আলতু ফালতু ব্যাপার এড়িয়ে চলুন। জীবন যাপনের জন্য যাবতীয় নিয়ম কানুন, দর্শন বড় বড় লোকজন দিয়ে গেছেন। দরকার মতো গুগল সার্চ দিয়ে সব ই পেয়ে যাবেন। অতএব, নিজের মতামতের কি দরকার! তা ছাড়া স্বাধীন মতামতের কি দরকার? যাপিত জীবনে স্বামী/স্ত্রী যা বলবে তা ই মেনে নিবেন, বড় রা যা বল্বে তা ই চিন্তা ছাড়া মেনে নিন, রাজনৈতিক যে দলের সমর্থন করেন, তার হলি নেতা যা বল্বে, বেদবাক্যের মত মেনে নিন। আপনার চাইতে তারা বেশি চিন্তা করে সবকিছু নিয়া। সো লেট দ্যাম ডু ইট ।

৮। সবকিছুতেই সেরা হওয়ার প্ল্যান করেনঃ পরিবার থেকে শুরু করে অফিস। গ্রাম থেকে শুরু করে পুরা দেশ। সবকিছুতেই সেরা হওয়ার চেষ্টা করেন। অফিস এর সব কাজে পার্টিসিপেট করুন, বাসায় দাড়োয়ানের কাজ থেকে শুরু করে, রান্না করা, কাপড় ধোয়া, বাজার করা, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সবকিছুতেই নিজেকে সেরা করে তোলার চেষ্টা করেন। অনেক বোকারাই বল্বে,'একজন মানুষ সব কিছুতেই সেরা হতে পারেনা, সেই চেষ্টা করে সময় এবং ব্রেইন কে প্রেসার দেয়ার মানে হয় না। ' তাদের কথা এড়িয়ে চলুন। মনে রাখবেন, আপনি বিরক্তিকর জীবন যাপন করতে চাচ্ছেন। অন্যের কথায় কান দেয়ার কিছু নাই।সবকিছুতেই নিজেকে 'সেরা' ভাবুন। এতে আপনি যেমন অন্যদের প্রতি বিরক্ত হতে পারবেন, তারা ও ততোধিক বিরক্ত হবে আপনার উপর।

৯। সবসময় স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে থাকাঃ ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলেই কতক্ষণ মোবাইলে ফেসবুক গুতান। তারপর গোসল করে নাস্তা খাওয়ার সময়টাতে টিভি দেখুন। অফিসে যাওয়ার রাস্তায় পুরা সময় ধরে মোবাইলের স্ক্রীণে আক্কইরা চায়া থাকেন। অফিসে ঢুকেই পিসি স্টার্ট। পুরা সময় চোখ সরায়েন না মনিটর থেকে। বাসায় গিয়ে ই টিভি অন করে দেন, ল্যাপটপ অন করে দেন। আবার ঘুমাতে যাওয়ার আগে মোবাইলে আরো কিছুক্ষন স্ক্রীনে কাজ করেন। প্রত্যাশিত সাফল্য আসবেই।

১০। শেখার কোন শেষ নাই, শেখার চেষ্টা বৃথা তাইঃ ১৮/২০ বছর পড়াশোনা করে অনেক জ্ঞান হইছে। আর জ্ঞান বাড়ানোর কি? জ্ঞানে কামড়াবে কিছুদিন পর। পড়তে পড়তে অনেক কিছু ই শিখছি , আর না! াল পাইক্কা তামার তার হয়ে গেছে! আর সম্ভব না ভাই। গ্রেট! আপনি ঠিক রাস্তাতেই আছেন। অর্থহীন জীবনের জন্য আপনার অপেক্ষা করতে হবেনা, আপনা আপনি এসে ধরা দিবে আপনাকে।

আশা করি উপরের ১০ টি উপায় আপনাদের কাজে আসবে। জীবনে আছে কি ? খ্যাতা আর বালিশ! লেগে থাকুন, অর্থহীন জীবন আপনার হাতের নাগালেই পাবেন। হ্যাপি নিরানন্দময় জীবন ! B-)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:২১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×