somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অর্থমন্ত্রী গাজীপুর গেলেন হেলিকপ্টারে: গরিবের ঘোড়ারোগ (কপি পেসট)

০১ লা নভেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আর্থ-রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকারের ভূমিকা ঘরে এবং বাইরে যখন নানাভাবে প্রশ্নবিদ্ধ; তখনও সরকারের কিছু মন্ত্রী-উপদেষ্টার নবাবি কর্মকাণ্ডে দেশটির ভবিষ্যত্ যে শিকেয় ওঠার জোগাড় হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। তাদের চালচলনে মনে পড়ে যায় পাকিস্তান আমলের বাইশ পরিবারের কথা। রাষ্ট্রযন্ত্রের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা বনে যাওয়া এসব লোক জনগণকে ডিজিটাল বাংলাদেশ আর দশ টাকায় চাল খাওয়ানোর মুলো ঝুলিয়ে ক্ষমতায় এলেও তাদের স্বরূপ এখন সাধারণ মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময় তাদের বাতুলতা ও কর্মকাণ্ডে যেমন প্রকাশ পেয়েছে তাদের গণবিচ্ছিন্ন মানসিকতা, তেমনি স্বার্থপরতাও।
এরই ধারাবাহিকতায় বরাবরের মতো এবারও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংবাদে আবার চাউর হলেন। জানা যায়, গাজীপুরে একটি বেসরকারি শিল্পকারখানা পরিদর্শনে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে হেলিকপ্টারে উড়ে গেছেন। সরকারি কোনো জরুরি কাজের জন্য হলেও এ ব্যাপারে আমাদের বলার কিছু ছিল না। কিন্তু বেসরকারি কারখানা পরিদর্শনে সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ের ব্যক্তিদের হেলিকপ্টারের ব্যবহার আদৌ প্রটোকল-সিদ্ধ কি না, তা আমাদের জানা নেই। হেলিকপ্টারে চড়ে বেসরকারি শিল্পকারখানা পরিদর্শনের নজির অন্তত দেশের ইতিহাসে আর কোনো মন্ত্রীর নেই। কথা উঠতে পারে, গত বিএনপি সরকারের আমলে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন স্কুল-কলেজ পরদির্শনে হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছিলেন; কিন্তু সেটি ছিল জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট। হেলিকপ্টারে চড়ে ঝটিকা পরিদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষায় নকল বন্ধে তিনি সফল হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।
কিন্তু আরবি গ্রুপ (ওয়ালটন) কর্তৃপক্ষ হেলিকপ্টারের আয়োজন করে মন্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী এবং এ ধরনের ঘটনায় তার ব্যক্তিগত লাভালাভের বিষয়টি উড়িয়ে দেননি বিশেষজ্ঞরা।
ধানমন্ডি থেকে গাজীপুরের চন্দ্রার দূরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার। সড়কপথেই সময় নেয় বড়জোর ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। বিশেষ করে সেদিন ছিল সাপ্তাহিক সরকারি ছুটি। দেশে এখন প্রাইভেট হেলিকপ্টার ভাড়া করা আইনসিদ্ধ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—যে দেশে প্রতিটি নবজাতক লাখ লাখ টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, যেখানে শেয়ারবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা সর্বস্ব হারিয়ে আহাজারি করে, কেউ কেউ আত্মহত্যা করে, অসহনীয় দ্রব্যমূল্যের কারণে বাজারের ব্যাগ ছোট করতে হয়, জলাঞ্জলি দিতে হয় অনেক ইচ্ছাকে, যে দেশে ডাস্টবিন থেকে ক্ষুধার্ত নারীর খাবার কুড়ানোর ঘটনা একটি ব্যর্থ সরকারের গালে চপেটাঘাত করে, সে দেশে একটি বেসরকারি কারখানা পরিদর্শনে মন্ত্রীর হেলিকপ্টার ব্যবহার দৃষ্টিকটু বিলাসিতা ছাড়া আর কী হতে পারে? মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রমে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা গোনা এদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তামাশা ছাড়া আর কী? দারিদ্র্য বিমোচনে যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত, দারিদ্র্য নিয়ে তাদের উপহাস কোনো বিচারেই সমীচীন নয়। এর ফল কখনোই শুভ হয় না। মন্ত্রী বাহাদুরদের এসবের আক্কেলসেলামি পরিণতিতে গুনতে হয় সাধারণ মানুষকেই।
অবশ্য যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের ব্যর্থতার ফলে সড়ক ব্যবস্থার যে বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে তাতে হয়তো সড়কপথে চলাফেরা বৃদ্ধ অর্থমন্ত্রীর মনঃপূত না-ও হতে পারে!
মন্ত্রীদের কর্মকাণ্ডে সরকারের জনহিতকর চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটবে, এটাই কাম্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা হচ্ছে না। সরকারের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা এসব ব্যক্তির এহেন ঘোড়ারোগ জাতি হিসেবে আমাদের লজ্জায় ফেলে।
সূত্র
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ওরা আমাদের ঐতিহ্যের পোশাককে নোংরা পোশাক হিসেবে পরিচিত করতে চায়। ওরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে গ্রাস করতে চায়।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০


"লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি'মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।"

এক মৌলভী পোস্ট দিয়েছেন
"শাড়িকে একটি নোংরা পোশাক বানিয়ে দিয়েন না।
শরীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমূদ্র-সৈকতে - ১৬

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯



ছবি তোলার স্থান : মেরিনড্রাইভ, কক্সবাজার, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : পহেলা অক্টোবর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ।

বেড়াবার সবচেয়ে আকর্ষণীয় যায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমূদ্র সৈকত। কখনো কখনো আমারও সুযোগ হয় বেড়াতে যাবার।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাঁআআআচ্চুউউউ! :) :D ;)

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৫ ই জুন, ২০২৪ রাত ৯:৩৩



হাঁচতে নাকি জানে না কেউ,
কে বলেছে বোন
এই দেখোনা কত্ত হাঁচির
ওজন শত টন।

কিম হাঁচে বাড়া ভাতে,
বাইডেন হাঁচে তার সাথে সাথে,
লালচে চীনের জোরসে হাঁচি,
কাঁদে সবুজ ঘাস।
মাদার রুশের হাঁচি দেখে
হয় যে বনবাস!!

বনবিবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেইন্ট মার্টিন ও কোক ইস্যু

লিখেছেন নিবারণ, ১৫ ই জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪

বিগত কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে চর্চিত বিষয়, কোকের বয়কট ও গত দুই দিন ধরে সেইন্ট মার্টিন মায়ানমার দখল করে নেয়ার খবর।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্রিভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, মায়ানমার সেইন্ট মার্টিন দখল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে গান গাইলাম (সাময়িক)

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৬ ই জুন, ২০২৪ ভোর ৪:০৮

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে আমি আদর করে 'আই' ডাকি। আইকে দিয়ে অনেক কাজই করাতে হয়। এবারে, আমাদের ৫ ভাইদের নিয়ে একটি গান বুনেছি। আমরা ৫ ভাই অনেক দিন একসাথে হই না। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×