somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোভডেন-২১ : সতর্কতার কোনও বিকল্প নেই

২৬ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশে করোনা পরিস্থিতি যখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে প্রায় ভেঙ্গে ফেলেছে তখন আবারও মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে ডেঙ্গু। ক্রমেই ডেঙ্গু মশার বিচরণ প্রসারিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুর বিস্তার করোনা পরিস্থিতিকে সামলানো দুঃসাধ্য করে ফেলবে। অনেকেই কোভিড-১৯ এর সাথে ডেঙ্গুকে মিলিয়ে কোভডেন-২১ বলতে শুরু করেছেন। আমার এই লেখার প্রসঙ্গও তাই কোভডেন-২১। এ যেনো এক নতুন মহামারী।

বাংলাদেশে এখন প্রতিদিন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দুই শতাধিক। মোট মৃত্যুর সংখ্যা বিশ হাজার ছুঁই ছুঁই। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিড-১৯ পিক এখনও দূরে, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে । সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বাংলাদেশে এখনও আসেনি বলেই তারা ধারণা করছেন। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যুর হার আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। চলমান লকডাউন শুরুর হওয়ার আগে সপ্তাহখানেক ধরে লক্ষ লক্ষ মানুষ যেভাবে গাদাগাদি করে শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে গেছে এবং অনেকেই আইনশৃংক্ষলা রক্ষাবাহিনীর সাথে লুকোচুরি খেলে যেভাবে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে ঢুকে পড়ছে, তার প্রভাব কী হতে পারে সেটি দেখার জন্য আরও তিন-চার সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। আগস্ট মাসে পরিস্থিতি কেমন হতে পারে তা ভাবতেই সংশ্লিষ্ট সকলের কপালে চিন্তার ভাঁজ তৈরি হচ্ছে।

পরিস্থিতি যখন এরকম, তখন বাড়তি চিন্তায় ফেলছে ডেঙ্গু। কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে কিছুটা ঢাকা পড়ে গেলেও ডেঙ্গু কিন্তু থেমে নেই। ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠলে তা পরবর্তিতে কিছুটা প্রশমিত হয়ে আসে। অনেকেই ধারণা করেন, দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে এসেছে। প্রকৃতপক্ষে ঘটেছে তার উলটো। ২০২০ সালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২০১৯ সালের চেয়ে ২ দশমিক ৭ গুণ। রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। ২০২০ সালে সম্পন্ন এক জড়িপে দেখা যায়, ঢাকার দুই সিটির ১১টি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায় ডেঙ্গু ভাইরাসের বাহক এডিস মশার উপস্থিতি রয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১২, ১৬, ২৮, ৩১ ও ১ এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫, ৬, ১১, ১৭, ৩৭ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে এডিসের ব্রুটো সূচক মিলেছে ২০ পয়েন্টের বেশি।

গত বছর স্বাস্থ্য সেবা অধিদফতর আয়োজিত এক কর্মশালায় বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ ড. মঞ্জুর এ চৌধুরী বলেছিলেন, ২০১৯ সালের তুলনায় পরের বছরে এডিস মশা এবং ডেঙ্গু ভাইরাস দুটোর উপস্থিতিই বেশি। ভাইরাসের বাহক এডিস এলবোপিক্টাস এবং ইজিপ্ট দেশের বিভিন্ন জায়গাতেই আছে। এতেই ধারণা করা যায়, এটা দেশব্যাপী বিরাজমান এবং মৌসুমে ছড়িয়ে পড়বে। হয়েছেও তাই। দেশে এডিস মশা এবং ডেঙ্গু ভাইরাস ক্রমেই বেড়েছে। ডেঙ্গু মশা নিধনে সাফল্যের ব্যাপারে দুই নগরপিতা জোর দিয়ে সাফল্য দাবী করলেও পরিস্থিতি আসলে নিয়ন্ত্রণে নেই। সাফল্য যে একেবারেই নেই, তা নয়। তবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে লক্ষণীয় সাফল্য অর্জনে আরও অনেক পদক্ষেপ নিতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মশা নিয়ন্ত্রণে মশার প্রজনন উৎসে নজর দিতে হবে। যদি পানি জমতে দেয়া না হয় তাহলে মশার লার্ভাই হতে পারবে না। মশার উৎস ধ্বংস না করা হলে শুধু লার্ভিসাইডিং করে মশা কমানো যাবে না। নাগরিকদের এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট প্রিন্সিপাল অনুসারে সারা দেশে সার্ভিলেন্স করার প্রয়োজন আছে। সেই অনুসারে এডিস নির্মূল কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। এখন যেসব জায়গা থেকে রোগী পাওয়া যাচ্ছে, সেসব এলাকায় সময়মতো হিট করতে পারলে ভাইরাস এবং বাহক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু এর জন্য শক্তিশালী ফগিং মেশিন ও কার্যকর কীটনাশক প্রয়োজন। সেই ব্যবস্থাও এখনও প্রয়োজনমাফিক করতে পারেনি সিটি কর্পোরেশনগুলো। এ অবস্থায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়ে গেলে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

বিশেষজ্ঞগণ আরও বলেছেন, ডেঙ্গুবাহিত এডিস মশা সারা দেশে ছড়িয়ে আছে। যেখানেই তারা গেছে সেখানেই ডিম পেড়েছে। প্রতিকূল পরিবেশে এসব ডিম সুপ্ত অবস্থায় দীর্ঘদিন থাকতে পারে। যখনই বৃষ্টি পড়ে পানি জমতে শুরু করবে, তখন ওই ডিম থেকে মশা বেরিয়ে আসবে। ফলে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে এখনই সারা দেশে ডেঙ্গুর সম্ভাব্য প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে। এখন বৃস্টির সময়। বৃষ্টি যতো বাড়বে, ডেঙ্গুর বিকাশ ঘটার সম্ভাবনা ততোই বাড়বে।

বিশেষজ্ঞগণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ও সময়োচিত পদক্ষপে নিতে পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি জনগণকেও যথেষ্ট সচেতন হতে বলেছেন। কোভিড-১৯ মোকাবেলা করতে যেয়ে জনগণ যেনো ডেঙ্গুকে কোনো প্রকার সুযোগ তৈরি করে না দেয়। ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ে নিচের লক্ষণগুলোকে প্রাধান্য দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণঃ

সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীরে ব্যথা মাথাব্যথা, চেখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র‍্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে। শিশু, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু রোগ জটিল হয়ে উঠতে পারে। আগে যারা আক্রান্ত হয়েছে, তারা দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে জটিলতা বেশি হয়। এ রকম রোগীরা সহজে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হতে পারে। তাই শিশু, বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য দরকার বিশেষ সতর্কতা। তবে মনে রাখবেন, মাতৃদুগ্ধ পানের মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়ায় না।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী কী ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন সে ব্যাপারে রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গুলজার হোসেন বলেন, এডিসের হাত থেকে বাঁচতে হলে দিনে ও রাতে যখনই ঘুমাবেন, মশারি খাটিয়ে ঘুমাবেন। ঘরে মশানিরোধক স্প্রে করবেন। গায়ে মাখার মশানিরোধক একপ্রকার ক্রিম পাওয়া যায়। তাও ব্যবহার করতে পারেন। শিশুদের ফুল স্লিভ পাজামা ও জামা পরাতে পারেন। এতে মশার কামড় থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়। শিশুরা বাইরে, স্কুলে, কোচিংয়ে পড়তে গিয়ে (এখন যদিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, কিন্তু যখন খুলবে তখন), গাড়ির মধ্যে বা খেলতে গিয়ে মশার কামড় খেতে পারে। তাই বাইরে যাওয়ার সময় ফুলহাতা জামা-প্যান্ট পরান, উন্মুক্ত অংশে রিপেলেন্ট ক্রিম মেখে দিন। অভিভাবকেরা স্কুল বা কোচিং কর্তৃপক্ষকে বলবেন ঘরগুলো মশামুক্ত করার ব্যবস্থা করতে, জঙ্গল, আবদ্ধ পানি, ড্রেন পরিষ্কার করতে। এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকমণ্ডলী, অভিভাবক ও স্কুলের কর্মচারী—সবাই মিলে অংশ নিতে পারেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় এখন নিশ্চয়ই সেই স্থানগুলোতে ডেঙ্গু মশা বসতি গড়ে তুলেছে। তাই শিক্ষাকার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সবসময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

জ্বর হলে কী করণীয়

জ্বর হলে কী করনীয় এ প্রসঙ্গে ডাঃ গুলজার বলেন, এ সময় হঠাৎ জ্বর হলে জ্বরের প্রথম দিনই চিকিৎসক দেখাবেন। জ্বরের মাত্রা যা-ই হোক, ডেঙ্গুর সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেবেন না। লক্ষণ নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। লক্ষণ মিলিয়ে সব সময় জ্বর আসে না। উচ্চ মাত্রার জ্বর, গা–ব্যথা, মাথাব্যথা, র‍্যাশ ইত্যাদি লক্ষণ ছাড়াও ডেঙ্গু হতে পারে। জ্বর কয়েক দিন হয়ে গেলে তারপর ডেঙ্গু অ্যান্টিজেন পজিটিভ হবে না। তাই শুরুতেই রক্তের সিবিসি (কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট) ও ডেঙ্গু এনএসওয়ান পরীক্ষা দেওয়া হয়। ডেঙ্গু এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন সাধারণত জ্বরের প্রথম দিন থেকে তৃতীয় দিন পর্যন্ত পজিটিভ থাকে। তবে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু হওয়া সত্ত্বেও এই পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণকে গুরুত্ব দিতে হবে৷ যদি প্রথম কয়েক দিনের মধ্যে রক্ত পরীক্ষা না হয়ে থাকে, তারপরও রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা আছে। রোগের লক্ষণ উপসর্গ, সিবিসি রিপোর্ট ও অ্যান্টিবডি দেখে চিকিৎসক ধারণা করতে পারবেন। তাই দেরি হলেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

ডাঃ গুলজার হোসেনের পরামর্শের সঙ্গে যোগ করে বলা যায়, যেহেতু এটা করোনা মহামারীকাল, তাই সামান্য জ্বরকেও অবহেলা করার কোনও সুযোগ নেই। এখন গ্রামে গ্রামে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হওয়ার পিছনে বড় কারণ হচ্ছে, তারা জ্বর-সর্দি-কাশিকে সামান্য মনে করেন। পরবর্তিতে পরিস্থিতি জটিল হলে রোগীকে আর সামাল দেয়া যাচ্ছে না।

চিকিৎসক পরামর্শ দিলে তবেই হাসপাতাল

ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত হলেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে, এ রকম নয়। শুরুতে নিকটস্থ কোনও চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য কেন্দ্র হতে পরামর্শ নেবেন। চিকিৎসক পরামর্শ দিলে তবেই হাসপাতালে ভর্তি করবেন। জ্বরের সঙ্গে অন্য জটিলতা, যেমন হৃদ্​রোগ, প্রেগন্যান্সি, পাতলা পায়খানা, অতিরিক্ত বমি—এসব থাকলে, রক্তচাপ স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকলে সাধারণত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনার লক্ষণ থাকলে আরও বেশি সচেতন হয়ে ঘরোয়া চিকিৎসা চালাতে হবে, প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এখেত্রে করোনাবিধি মানতে হবে অক্ষরে অক্ষরে। রোগীর পরিস্থিতি যেনো জটিল হয়ে না ওঠে সেদিকে পরিবারের সকলেরই সতর্ক থাকতে হবে। সকলকেই কোভিডবিধি মেনেই রোগীর সেবা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। কোভিড ও ডেঙ্গু একসাথে আক্রমণ করলে রোগীকে বাঁচানো অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। তাই সর্বদা সচেতন ও সতর্ক থেকে কোভডেন-২১কে প্রতিরোধ করতে হবে।

প্রচুর তরল পান করুন

জ্বরের শুরু থেকেই বাড়িতে প্রচুর তরল পান করবেন। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন লিটার। তরল মানে সাদা পানি, স্যালাইন, ডাবের পানি, ফলের রস, লেবুর শরবত ইত্যাদি। প্রস্রাব পর্যাপ্ত হচ্ছে কি না, সেদিকে লক্ষ রাখবেন। বাড়িতে ডেঙ্গু রোগীকে মশারির ভেতরে রাখুন। এতে পরিবারের অন্যরা রক্ষা পাবে।

অহেতুক বারবার প্লেটলেট (প্লাটিলেট) কাউন্ট দেখে আতঙ্কিত হবেন না। প্লেটলেট কাউন্ট কমে গেলে চিকিৎসককে প্লেটলেট দেওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করবেন না। ডেঙ্গু রোগে খুব কম ক্ষেত্রেই প্লেটলেট ট্রান্সফিউশন দিতে হয়। একইভাবে ডেঙ্গু হওয়ামাত্র শিরায় স্যালাইন শুরু করতে হবে, তা-ও ভুল। অনেকে সরাসরি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্যালাইন শুরু করার জন্য জোর করেন। চিকিৎসককে নির্ভার হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করুন। অমুকে কী বলেছে, তমুক জায়গায় কী লেখা হয়েছে, এসব নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। ওভার ট্রিটমেন্ট বা অতিচিকিৎসা বিপদ ডেকে আনতে পারে। সতর্ক ও সচেতন থাকুন। চিকিৎসকের কাছ থেকে ভালো করে নোট নিয়ে নিন কী কী লক্ষণ থাকলে হাসপাতালে আবার নিয়ে যাওয়া দরকার।

ডেঙ্গু জ্বর ও করোনার লক্ষণ এক হলেও পার্থক্য বুঝবেন কীভাবে

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, ডেঙ্গুজ্বর এবং কোভিড১৯- দুটোই ভাইরাস জনিত রোগ হলেও দুটোর মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে।

তিনি আরও বলেন, একই রোগী কোভিড এবং ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হতে পারে বলে। দুইটার ক্ষেত্রেই জ্বর, গলা ব্যথা, সর্দি, কাশি এবং স্বাদ না থাকা হতে পারে। করোনার ক্ষেত্রে এসব লক্ষণের সাথে নাকে ঘ্রাণ পায় না এবং কারো কারো পাতলা পায়খানা হয়। এছাড়া করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট-জনিত সমস্যা হতে পারে, যেটি ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে হয় না।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ বলেন, ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চার-পাঁচদিন পরে শরীরে লাল অ্যালার্জির মতো র‍্যাশ হতে পারে। তখন রক্তে প্ল্যাটিলেটের মাত্রা কমে যেতে পারে। ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে 'শক সিন্ড্রোম' হতে পারে যেটি রোগীর মৃত্যুর কারণ হয়। কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো থাকলে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। সেগুলোর মধ্যে যদি দেখা যায় যে রোগীর নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে। অথবা তার কালো পায়খানা হচ্ছে। গুরুতর ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে নারীদের মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তচাপ কিংবা হঠাৎ করে মাসিক হতে পারে।


সবচেয়ে বড় কথা হলো, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। তাই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে কোভিড ও ডেঙ্গু বা অন্য যে কোনও অসুখকে সহজেই এড়িয়ে চলা যায়। আমরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অসচেতন ও সতর্কহীনভাবে চললে দেশকে আরও ভয়াবহ অবস্থার দিকে নিয়ে যাবো- এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নাই। তাই আসুন, সকলেই অক্ষরে অক্ষরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে দেশকে কোভডেন-২১ এর হাত থেকে মুক্ত করি। নিজে সুস্থ্য থাকি, অন্যদের সুস্থ রাখি।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৩৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×