somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বড় বিপদ কাটিয়ে উঠছে বাংলাদেশ

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেখ হাসিনা একটি বড় বিপদ কাটিয়ে উঠেছেন। যিনি তাঁকে বিপদে ফেলতে এসেছিলেন তিনি এখন দুদকের হাতে। তাই শেখ হাসিনার আর এ নিয়ে ভাবার কিছু নেই। কারণ, একজন দুর্নীতিবাজ কখনও শেখ হাসিনার মতো সৎ রাজনীতিকের কোন ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে না। ওই বিপদের ঝাপটা শেষ। বিএনপি আরও দু-একদিন কথা বলবে। তার পর তাদের রেসও শেষ। শেখ হাসিনা আপাতত নিশ্চিত মনে তাঁর সরকার পরিচালনা করা ও তাঁর দলের দিকে নজর দেয়ার সময় পাচ্ছেন।
শেখ হাসিনার এ টার্মের জন্য তাঁর হাতে আর মাত্র এক বছর দুই মাসের মতো সময় আছে। এ সময়ের মধ্যে তাঁর অনেক কাজ। এবারের প্রবল বৃষ্টিতে বিপুল সংখ্যক রাস্তা নষ্ট হয়েছে। অধিকাংশ শহরের ভিতরের দিকের রাস্তাগুলো পানিতে ধুয়ে গেছে। অচল হয়ে পড়েছে যান চলাচল। প্রায় জায়গা থেকে এমন খবর আসছে। রাস্তা শুধু একটি মন্ত্রণালয়ের নয়। তাই কার কোন রাস্তা সেগুলো ঠিক করে আগামী ছয় মাসের ভিতর শেখ হাসিনাকে এই রাস্তাগুলো ঠিক করাতে হবে। নতুন রাস্তা তৈরি থেকে পুরনো এই রাস্তাগুলো মেরামত আগে প্রয়োজন। পুরনো রাস্তা মেরামতের সব থেকে বড় সমস্যা চুরি ঠেকানো। রাস্তা তৈরি সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতা নেই, ইঞ্জিনিয়ারও নই- তবে সাংবাদিক হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে যা শুনি সেগুলো রাস্তা মেরামতের জন্য মোটেই সুখকর কথা নয়। সাধারণ মানুষের বক্তব্য হলো, রাস্তা মেরামতের নামে পুকুর চুরি হয়। অর্থাৎ সরকার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও ঠিকাদার মিলে নাকি সেখানে ৮০ ভাগ চুরি করে। রাস্তা মেরামতে ব্যয় হয় মাত্র ২০ ভাগ অর্থ। বিভিন্ন স্থানের সৎ মানুষ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে যা মনে হয়েছে তাতে বলা যেতে পারে, চুরির বিষয়টি উনিশ বিশ হতে পারে। তার থেকে অন্য কিছু নয়। এখন এই রাস্তা মেরামতে শেখ হাসিনা কীভাবে চুরির বিষয়টি ঠেকাবেন সে পথ তাঁকেই বের করতে হবে।
এবার যেমন অতি বৃষ্টিতে রাস্তা ভেঙ্গেছে তেমনি আওয়ামী লীগও পড়েছে অতিকথনের পাল্লায়। আওয়ামী লীগের দুজন দায়িত্বশীল নেতা দুটো পদে বসে এত কথা বলছেন তা কল্পনাতীত। এই দুজনের একজনের জনপ্রিয়তা আগের থেকেই তলানিতে ছিল। এখন তলানি ফুটো হয়ে তিনি নিচে নেমে গেছেন। অন্যজনকে ফেসবুকে দেখতাম বেশ জনপ্রিয়। এখন ফেসবুকে তাঁর সম্পর্কে ও তাঁর কথা সম্পর্কে যে মন্তব্য হয় তাতেই বোঝা যায় তার জনপ্রিয়তায় শুধু ধস নামেনি, জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠার দিকে ধাবমান। এই ধাবমান কালকে সামলাতে হলে তাকে সকাল থেকে সন্ধে অবধি এই যে কথা বলাÑ এটা বন্ধ করতে হবে। কারণ, তার জনপ্রিয়তার সঙ্গে দলের অনেক ভাবমূর্তি নির্ভর করে। তাছাড়া কোনটা বেড রুমের কথা, কোনটা ড্রয়ইং রুমের কথা আর কোনটা পাবলিক প্লেসের কথা এটাও বুঝতে হবে। যে কথাটা পার্টি ফোরামে বলা প্রয়োজন সেটা পাবলিক মিটিংয়ে বললে মিডিয়ায় ভাল কভারেজ পাওয়া যায়। কারণ, মিডিয়া তো কোনমতেই পার্টি ফোরামের কথাটি হুবহু জানতে পারে না। তাই মিডিয়া যখন সহজে ওই কথাগুলো পেয়ে যায় তখন কভারেজ ভাল দেবেই। মিডিয়ার কাছে ওটা একটা ভাল নিউজ। কিন্তু কভারেজের লোভে তিনি দলের জন্য, সরকারের জন্য কী করছেন সেটা তাঁকে ভাবতে হবে। আবার অন্যদিকে, ওই নেতার কথার গুরুত্ব দিন দিন কমে যাচ্ছে, এর একমাত্র কারণ, তিনি সারাদিন কথা বলেন। সকালে এক রকম বলেন তো বিকেলে আরেক রকম বলেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি মতামত দেন। আর এত কম চিন্তা করে মতামত দেন যে, বেশি ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে এখন তার মতামত বিষয়কে জটিল করছে, না হয় কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে গুরুত্বহীন করে তুলছে। শুধু যে বিষয়টি গুরুত্বহীন হচ্ছে তা নয়, তিনিও দিনে দিনে গুরুত্বহীন ব্যক্তিতে পরিণত হচ্ছেন।
শেখ হাসিনা ভালমতো খোঁজ নিলে জানতে পারবেন বা হয়ত ইতোমধ্যে তিনি জানেন, মিডল ক্লাস ও শিক্ষিত তরুণ শ্রেণীর কাছে ওই নেতা এখন খুবই গুরুত্বহীন ব্যক্তি। অনেক তরুণকে দেখা যায় টিভি পর্দায় ওই নেতাকে কথা বলতে দেখলেই তারা রিমোট ঘুরিয়ে অন্য চ্যানেলে চলে যায়। আসলে কিছু কিছু পদ আছে সে পদে বসে অহেতুক কথা বলতে নেই। অহেতুক কথা বললে যে কী হয় তার একটি বড় উদাহরণ তো সম্প্রতি জাতি দেখতে পেয়েছে। এ থেকেও যদি আওয়ামী লীগের এই গুরুত্বপূর্ণ নেতা নিজেকে শুধরে নেন, তাহলে সেটা উপকার হবে শেখ হাসিনার, আওয়ামী লীগের ও সাধারণ মানুষের।
এই অতিকথনের সঙ্গে আবার রয়েছে আওয়ামী লীগের এক শ্রেণীর টিভি টকারের দুর্বল কথন। প্রথমত আওয়ামী লীগের প্রচার সেলের উচিত হবে, এখন টেলিভশনের টক শোতে তাদের যারা যাচ্ছেন সে টক শোগুলো স্ক্যান করা। সেগুলো পর্যালোচনা করে এর ভেতর থেকে কে কে দলকে প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা রাখেন, দলের পক্ষে কথা বলতে পারেন সেটা নির্ধারণ করা। বিএনপির পক্ষে যারা টক শোতে কথা বলেন, তাদের একটা অদ্ভুত কৌশল আছে। তারা যে কোন মিথ্যাকে খুব সাবলীলভাবে বলে যান। সে ক্ষেত্রে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের এক শ্রেণীর টকারদের ওই বিষয়ে কোন ধারণা না থাকায় বিএনপি যে মিথ্যা বলছে এটা তারা বলতে পারেন না। বরং বিএনপি এত জোরালোভাবে মিথ্যাকে উপস্থিত করে তাতে বেকায়দায় পড়ে যান আওয়ামী লীগের ওই শ্রেণীর নেতারা। আওয়ামী লীগের ওই শ্রেণীর নেতাদের টক শোতে আরও যে বিষয়টি প্রমাণিত হয়, তারা কোনরূপ প্রস্তুতি ছাড়া এখানে এসেছেন। ওই বিষয়ের ওপর মোটেই কোনরূপ স্টাডি না করেই সেখানে গেছেন।
আওয়ামী লীগের অনেক গুণী সমর্থকসহ শিক্ষিত মিডল ক্লাস এখন খুব বেশি টক শো দেখেন না। তবে কিছু কাল আগে যেমন রিক্সাওয়ালাসহ একটি শ্রেণীর কাছে বাংলা সিনেমা ছিল হুমড়ি খেয়ে পড়ার একটা বিষয়- টক শো কিন্তু এখনও তেমনি। এখানে এক শ্রেণীর মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এরা সংখ্যায় বেশি। এই মানুষগুলোর কাছে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব হচ্ছে অত্যন্ত দুর্বল আকারে। শুধু ইনফরমেশন নয়, নানাভাবে ভুল বার্তা যাচ্ছে তাদের কাছে। এমনকি আওয়ামী লীগের উন্নয়ন সম্পর্কেও বিএনপি যে মিথ্যা তথ্য দেয় টকশোতে অনেক ক্ষেত্রে সেগুলোও মোকাবেলা করতে পারেন না আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা। তাই উন্নয়ন সম্পর্কেও ভুল বার্তা যাচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে।
আওয়ামী লীগকে মনে রাখতে হবে একটি নির্দিষ্ট স্তরের উন্নয়ন করার পরে এবং দারিদ্র্য দূর করার পরের নির্বাচন খুবই কঠিন নির্বাচন। কারণ, একটি নির্দিষ্ট স্তরের উন্নয়নের পরে মানুষ অনেকগুলো সুখকে স্বাভাবিক মনে করে। কিছুকাল আগেও যে এগুলো তাঁর স্বপ্নের বাইরে ছিল এ কথা মানুষ ভুলে যায়। এটাই মানুষের স্বাভাবিক ধর্ম বা আচরণ। অন্যদিকে দারিদ্র্য দূর হওয়ার পরেই মানুষ নি¤œ মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখে। এমন একটি ক্রান্তিকালে যদি কোন নির্বাচন এসে দঁাঁড়ায় তখন বিরোধীরা খুব সহজে মানুষকে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিভ্রান্ত করতে পারে। সে আরও সুখ দেবে, সহজে তাদের কাজ ও অর্থ দিয়ে মধ্যবিত্ত বানাবে এমন স্বপ্ন দেখায়। মানুষ ওই স্বপ্নের জগতে বিভোর হয়- ভুলে যায় কে তাকে আজকের এই সুখ দিয়েছে, কে তাকে দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিয়েছে। মানুষকে তাই স্বপ্নের জগত থেকে নামিয়ে এনে বাস্তবতায় আটকে রাখা অনেক কঠিন কাজ। সেই কাজটিই সামনে এসেছে এবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনে। সে সময়ে দায়িত্বপূর্ণ নেতারা যদি অতিকথনে ব্যস্ত থাকেন আরেক দল যদি নিজেকে বিরোধী পক্ষকে মোকাবেলা করার সঠিক যোগ্যতা অর্জন না করেন তাহলে যুদ্ধ করবেন কি একাই শেখ হাসিনা?
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:১০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×