somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কক্সবাজার : ‘সোনা’ আমাদের হাতে ‘ছাই’

২৭ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কক্সবাজারকে অনেক উপাধিতেই ভূষিত করা হয়। ‘পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত’ থেকে ‘দেশের পর্যটন রাজধানী’-কতভাবেই বর্ণনা করা হয় এর সৌন্দর্য্য-রূপের বয়ান, কথায় কথায় কত অভিধায় জাহির করা হয় এই রূপের মাহাত্ম্য। সৈকতের দৈর্ঘ্য নিয়ে দুই ধরনের তথ্য রয়েছে, কোথাও ১৫৫ কিলোমিটার, কোথাও লেখা হয়েছে ১২০ কিলোমিটার। যা-ই হোক, ১২০ কিলোমিটার সঠিক ধরলেও এত দীর্ঘ বালুময় সৈকত পৃথিবীর অন্যকোন দেশে আছে বলে জানা যায়নি। সুতরাং সেই যুক্তিতে আপাতত কক্সবাজারকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত হিসেবে ধরা যাক। উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে পর্যটন স্পট বা পর্যটন সমৃদ্ধ এলাকাগুলোকে রাজস্ব আয়ের অন্যতম উৎস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের অবস্থান নিঃসন্দেহে বড় ধরনের সম্পদ। পাহাড়-নদীর মতো প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যপূর্ণ বিষয়গুলোর কথা বাদ দিলেও বলা যায়, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের জন্য বিশাল একটি সম্পদ। যেহেতু ইতোমধ্যে এটি পর্যটন রাজধানী হিসেবেও খ্যাতি পেয়েছে (মৌখিক স্বীকৃত, সরকারিভাবে নয়) সুতরাং এই জেলাটিই হতে পারত দেশের রাজস্ব আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস। কারণ, বর্তমান যুগ পর্যটনের যুগ। নগরায়নের প্রভাব বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষ ভ্রমণপিপাসু হয়ে উঠছে, বিশ্বায়নের প্রভাবে মানুষ অবকাশযাপনের বিষয়টিকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ কারণে পৃথিবীর দেশে দেশে পর্যটকদের ভিড় এখন লক্ষ্যণীয়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইতোমধ্যে এশিয়ার বেশকিছু রাষ্ট্র পর্যটন স্পটগুলোর রাজস্ব আয়ে তাদের অর্থনীতিকে উন্নয়নশীল থেকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে গেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি বাংলাদেশে প্রচুর পর্যটন স্পট রয়েছে। এসব স্পটকে ভিত্তি করে বাংলাদেশও প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে পারত। মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ডের মতো পর্যটন খাতের রাজস্ব দিয়ে অর্থনীতিকে উন্নয়নশীল থেকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো। এই তথ্য পর্যটন বিশেষজ্ঞদের। অভ্যন্তরীণভাবে দেশীয় পর্যটকদের কাছে এসব স্পট পরিচিত ও প্রিয়। কিন্তু একমাত্র কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতই বিশ্বের ভ্রমণপিপাসুদের কাছে পরিচিত। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের নামেই বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের পরিচিতি গড়ে উঠেছে। কক্সবাজারে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণ দেশী-বিদেশী পর্যটকের সমাগম হয়। আপাতদৃষ্টিতে এটি অত্যন্ত সুখবর মনে হলেও এর পেছনের তথ্যটি বেশ ভয়াবহ। সেটি হলো, ‘কক্সবাজারে যে পর্যটক একবার আসেন, তিনি দ্বিতীয়বার আসার মনোভাব রাখেন না।’ কয়েকদিন আগে কক্সবাজারের একজন সিনিয়র সাংবাদিক এই তথ্য জানিয়ে বললেন, ‘কক্সবাজার একবার ঘুরে দেখুন, বিদেশী তো দূরের কথা দেশীয় পর্যটকরাই কী পরিমাণ হয়রানির শিকার তা বুঝতে পারবেন।’ এ কথা অস্বীকার করা উপায় নেই যে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের জন্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত একটি বিশাল সম্পদ। কিন্তু আমরা বাঙালিরা এই সম্পদের সদ্ব্যবহার করতে পারছি না। আমাদের কাছে ‘সোনা’ এখন ‘ছাই’। অথচ পৃথিবীর দ্বিতীয় কোন রাষ্ট্র এত দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত পেলে সেটাকে রাতারাতি প্রাকৃতিক ‘সোনা’ থেকে ‘হিরা’তে পরিণত করে নিজেদের অর্থনীতিতে মজবুত করে নিত। অনেক দেশ কোন উপ-সাগরের ছোট্ট একটি অংশের সৈকত পেয়ে সেটিকে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলেছে এবং এটির আয় দিয়েই তাদের অর্থনীতি চলছে। বিশ্বে এ রকম অনেক উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু আমাদের কক্সবাজারের প্রতিটি পরতে পরতে পর্যটকদের জন্য তৈরি হয়ে আছে হয়রানি আর ঠকানোর কালো হাত। পর্যটকদের কোন নিরাপত্তা কক্সবাজারে নেই, এখানে পদে পদে চরম হয়রানির শিকার হন তারা। এ কারণে কেউ নিরাপদবোধ করে না এখানে। মালয়েশিয়ার মতো রক্ষণশীল মুসলিম রাষ্ট্রেও পর্যটন স্পটগুলোর জন্য আলাদা আইন-নীতিমালা রয়েছে কিন্তু বাংলাদেশে এ ব্যাপারে কোন নীতিমালা নেই। সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজার সৈকতের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে একেবারে সাগরের কাছেই বড় বড় অনেকগুলো হোটেল-মোটেলের নামে হাইরাইজ ভবন গড়ে উঠছে। দেখলেই বুঝা যায়, এসব বেশ অপরিকল্পিতভাবেই গড়ে উঠছে। ইতোমধ্যে শহরের ভেতরে ও কলাতলী পয়েন্টের প্রকৃতির আদরে সৃজিত পাহাড়গুলো এবং সবুজ বৃক্ষরাজি সাবাড় করা হয়েছে, সেখানেও আবাসনের প্লটের নামে অপরিকল্পনার ছাপ স্পষ্ট। একটা পর্যটন শহরের জন্য সবকিছুই হওয়া দরকার পরিকল্পনা মতো, কিন্তু কক্সবাজারে কেবল হাইরাইজ ভবন গড়ে তোলা হচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদি কোন পরিকল্পনা বা সুনির্দিষ্ট কোন নীতিমালা তাতে অনুসরণ করা হচ্ছে বলে মনে হয় না। একদিকে হাইরাইজ ভবন, তার আশপাশে রোহিঙ্গা কিংবা ভাসমান মানুষের ছোট ছোট কুঁড়েঘর, বস্তি-পর্যটন শহরের সৌন্দর্য্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বিশ্বের দীর্ঘতম সৈকতে বেড়াতে এসে দেশী-বিদেশী পর্যটকরা কি পরিমাণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন তার কিছু বর্ণনা উপস্থাপন করাছি :

গাড়ি থামতেই হয়রানির শুরু :
দেশী-বিদেশী পর্যটকবাহী গাড়িটি কক্সবাজার বাস টার্মিনাল হয়ে কলাতলীর বিচ পয়েন্টে ঢোকার সাথে সাথেই হয়রানির শুরু হয়। কলাতলীয় পয়েন্টে বাস থামার সাথে সাথে এক ঝাঁক রিকশা চারিদিকে ঘিরে ধরে। রিকশার চালকরা গাড়ির দরজায় এসে কোন কথা না বলেই নতুন উৎসুক পর্যটকদের ব্যাগ-লাগেজ ধরে টানাটানি শুরু করে। ‘আসেন স্যার, হোটেল অমুক আবাসিক, মোটেল সমুক, বেশ ভালা, ট্যাহা কম’-এ জাতীয় কথা বলে অনেকটা জোর করেই রিকশায় তুলে নেয়। এরা হচ্ছে বড় বড় আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলোর ফিল্ড লেভেলের ব্রোকার। বোর্ডার নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে তারা একটা কমিশন পায় সংশ্লিষ্ট হোটেল বা মোটেল থেকে। অবশ্য তাদের যে কমিশন দেয়া হয়, তা পর্যটকদের কাছ থেকেই আদায় করা হয়। নতুন জায়গায় এসে পর্যটকরা রিকশা-গাড়ি ভাড়া সম্পর্কে অবগত থাকেন না। এ সুযোগে রিকশাচালকরা বিশ টাকার কমে কোন ভাড়াই নেয় না। এর মধ্যে সুযোগ বুঝে অনেক রিকশাচালক পর্যটকদের মালামালও চুরি করে ফেলে।

গলাকাটা বাণিজ্য :
পর্যটন শহর কক্সবাজারে অনেকগুলো হোটেল-মোটেল গড়ে উঠেছে। হোটেল-মোটেল বেশি হওয়ায় প্রতিযোগিতাও বেড়েছে। এই প্রতিযোগিতার শিকার হয় পর্যটকরা। হোটেল-মোটেলগুলো পর্যটকদের সাথে গলাকাটা বাণিজ্যে মেতে উঠে। রুম ভাড়া ও বিভিন্ন সেবা বাবদ ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করে ছাড়ে তারা।

বিরক্ত, ঠকানো এবং ঝুঁকি :
পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতে আসেন আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ কিংবা অবকাশ যাপনের জন্য, সমুদ্রের ঢেউ দেখতে দেখতে নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য। কিন্তু আমাদের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে এসে সাগরে গোসল কিংবা চরে হাঁটা-বসার প্রতিক্ষণে পর্যটকরা একশ্রেণীর ফটোগ্রাফার ও বিভিন্ন গ্র“পের টোকাইদের উৎপাতে বিরক্ত হয়ে পড়েন। বিভিন্ন গ্র“পের টোকাইরা পর্যটকদের শুধু বিরক্তই করে না নানাভাবে ঠকায়ও। সৈকতে নানা ধরনের খাবারের পসরা বসে. ওইসব খাবারের আকাশ্বচুম্বী দাম নেয় বিক্রেতারা, আবার তা খেতে শুরু করার সাথে সাথে পর্যটকদের ঘিরে ধরে টোকাইরা। তারা খাবারটির কিছু অংশ চেয়ে নেবে তা নয়, একেবারে হাত থেকে অনেকটা জোর করেই কেড়ে নেয়। অপরদিকে ‘ভাইজান-আপা, একটা ছবি তুলেন’ বলে সৈকতে বিভিন্ন স্টুডিও’র ফটোগ্রাফাররা পর্যটকদের ঘিরে ধরে। ছবি তুলতে না চাইলেও তারা বার বার একই সুরে অনুরোধ জানাবে, এই ‘অনুরোধ’ মানে চরম বিরক্ত করা। একইভাবে ঘোড়ায় চড়া এবং ছোট ছোট বিচ-গাড়িগুলোর তত্ত্বাবধায়করাও পর্যটকদের চরম বিরক্ত করে এবং ইচ্ছেমতো টাকা হাতিয়ে নেয়। সৈকতে সারিবদ্ধভাবে বাসানো হয় কিছু অস্থায়ী ছাউনি, এগুলো ঘণ্টাভিত্তিতে পর্যটকদের ভাড়ায় দেয়া হয়। এসব ছাউনির মালিকরা পর্যকদের কাছ থেকে গলাকাটা দাম আদায় করে। দশ মিনিট হোক বিশ মিনিট হোক তারা কমপক্ষে ২০ টাকা নেবেই নেবে। আপত্তি করলে বিশ্রি ভাষায় তেড়ে আসে, মারতেও উদ্যত হয়। আর ছাউনিতে বসলে দেখা যায়, একের পর এক টোকাই গ্র“প আসছে। কেউ নিয়ে আসে শামুক-ঝিনুকের মালা, কেউ আসে চা-কফি, সেদ্ধ ডিম বিক্রির জন্য। তারাও মালামাল কেনার জন্য কিংবা কিছু খাওয়ার জন্য এত চাপাচাপি করে যে, না কিনে কিংবা না খেয়ে মুক্তি নেই। এক মিনিট নিরিবিলি বসবেন সেই সুযোগ নেই। এসব কারণে পর্যটকরা চরম বিরক্ত হয়ে পড়ে। তারা দ্বিতীয়বার আসার মনোনিবেশ করেন না। এছাড়াও গোসল করতে নেমে প্রতিমাসেই কক্সবাজার সাগরে হারিয়ে যায় পর্যটকরা।

এবং ঈভটিজিং :
সমুদ্র সৈকতে আসা পর্যটকদের অনেকেই সাগরে গোসল করতে নামেন। বিশেষ করে যারা প্রথম সাগর দেখতে আসে, তারা উত্তাল ঢেউ দেখে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে। তরুণ-তরুণীদের অনেকেই গোসল করতে নামেন। থাইল্যান্ড-দুবাই’র মতো দেশগুলোর সৈকতে নারীরা শুধুমাত্র ব্রা-বিকিনি পড়ে রৌদ্রস্নান করেন, সাগরে গোসল করতে নামেন। ওখানে মেয়েদের দিকে কেউ ফিরেও তাকায় না, সবাই যার যার মতো স্বাধীন। কিন্তু আমাদের কক্সবাজারে তরুণীরা সাগরে নেমে গোসল করে ভেজা কাপড়ে উঠে আসার পথেই ঈভটিজিং এর শিকার হয়। সমুদ্র সৈকতে দেখা গেছে, তরুণী পর্যটকরা সাগর থেকে ফেরার পথে তাদের দিকে অশ্লীল ভঙ্গিতে তাকিয়ে বখাটেরা নানা রকম শিস দেয়, টিজ করে। বিচ পুলিশের নীরবতা ও নিরাপত্তাহীনতা : পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে বিচ পুলিশ গঠন করা হয়েছে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের সৈকতে নানা ধরনের হয়রানি থেকে রক্ষা করাটাই তাদের কাজ। কিন্তু সৈকতে বিচ পুলিশ থাকে নির্বিকার। গত ২০ অক্টোবর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুরে দেখা গেছে বিচ পুলিশের নীরবতার চিত্র। ওইদিন বিকালে সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটকদের ভিড়। সেখানে টোকাইদের উৎপাত, বখাটেদের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি চোখে পড়ছে কিন্তু পুলিশের দেখা এখানে মিলছে না। শেষমেষ লাবণী পয়েন্টের অনেক পশ্চিমে যেখানে পর্যটকদের ভিড় নেই, ঝাউবনের বিপরীতে তিনটি ছাউনিতে নীরবে বসে আছে বিচ পুলিশের চারজন নারী সদস্য। তারা সেখানে বসে নীরবে সমুদ্রের ঢেউ দেখছেন আর বাদাম চিবুচ্ছেন। তাদের মুড দেখে মনে হলো, টোকাই ও বখাটেদের কাছ থেকে নিজেরাই নিরপদ দূরন্তে অবস্থান নিয়েছেন! আরো লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, সূর্য অস্ত্র যাওযার সাথে সাথে ওই নারী পুলিশরা আসন ছেড়ে দ্রুত সৈকত ত্যাগ করছেন, যেন সূর্য অস্ত্র যাওযার পর নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েই তারা শঙ্কিত! সুতরাং পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সহজেই আঁচ করা যায়। সন্ধ্যায় ফিরতি বাসে উঠে নিরাপত্তার বিষয়টি আরো স্পষ্টভাবে টের পেলাম। গাড়ি ছাড়ার ১০ মিনিট পর বাস কন্ট্রাক্টর এসে বলল, ‘খুটাখালী কচ্ছপিয়া ঢালায় ডাকাতি হচ্ছে, ইতোমধ্যে ৫/৭টি গাড়ি ডাকাতি হয়েছে। আপনারা কেউই অপথে (নির্দিষ্ট স্টেশন ছাড়া) নামতে পারবেন না। জানালাগুলো বন্ধ করুন, গাড়ি দ্রুত চলবে।’ এ কথা শুনে গাড়ির যাত্রীরা শঙ্কিত হয়ে পড়ল।

এখন যা করা দরকার :
সেই প্রবচনটির মতোই দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা আমরা বুঝি না। প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্য নির্বাচনের তালিকা থেকেই কক্সবাজার বাদ পড়ে গেছে। এই বাদ পড়ার পেছনে উপরের কারণগুলো দায়ী কি-না তা ভেবে দেখা দরকার। আর এখান থেকেই আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত যে, আমাদের কাছে সম্পদ আছে কিন্তু তা বিশ্বের কাছে যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারছি না। অথচ বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আর পর্যটন স্পটগুলোকে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন এবং পর্যটকদের জন্য নির্বিঘœ করে আমাদের রাজস্ব আয় বহুগুণে বৃদ্ধি করা সম্ভব। এ জন্য প্রথমেই দরকার একটি দীর্ঘমেয়াদি ও বাস্তবমুখী পরিকল্পনা হাতে নেয়া। এ ক্ষেত্রে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোর সমুদ্র সৈকত ব্যবস্থাপনা ও পর্যটন স্পটগুলোর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। বিচ পুলিশের কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ফটোগ্রাফার, বিভিন্ন টোকাই গ্র“পের প্রতারণা ও রিবক্তি থেকে পর্যটকদের রক্ষার জন্য পুলিশকে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। হোটেল-মোটেলগুলোর ভাড়া আদায়কে একটা নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। কক্ষের পরিসর অনুযায়ী ভাড়ার তালিকা টানানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সাগরে গোসল করতে নেমে কোন পর্যটক যেন হারিয়ে না যায় এজন্য কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর নজরদারি আরো বাড়াতে হবে। কেননা, সাগরে নেমে একজনের মৃত্যু হলেও বিশ্বের কাছে ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়। ভাটার সময় যেন কেউ সাগরে নামতে না পারে এ জন্য ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হাতে নিতে হবে। আর নারী পর্যটকরা যেন ঈভটিজিং এর শিকার না হন সে জন্য বিচ পুলিশের নারী সদস্যদের সক্রিয় করতে হবে। মোটকথা, কক্সবাজার নিয়ে আমাদের নীতিনির্ধারকদের এখনই ভাবতে হবে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×